শহীদ মিনারে ফরিদা পারভীনের মরদেহে শ্রদ্ধা সকালে, কুষ্টিয়ায় দাফন

আমার শহর ডেস্ক
Thumbnail image

দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে চলে গেলেন দেশবরেণ্য লালন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন।

গতকাল শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা যান। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

ফরিদা পারভীনের মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করে বড় ছেলে ইমাম নিমেরি উপল বলেন, আম্মা আজ রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাতে হাসপাতাল থেকে তেজগাঁওয়ের বাড়িতে নেওয়া হবে ফরিদা পারভীনের মরদেহ। আজ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানাবে। সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়েছে। ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা।

তারপর নেওয়া হবে কুষ্টিয়ায়, সেখানে জানাজা হবে। দাফন করা হবে কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে।

সবশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফরিদা পারভীনকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পরই নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়; সেখান থেকে আর তাকে ফেরানো যায়নি।

ফরিদা পারভীন বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনি সমস্যা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। কিডনি ডায়ালাইসিস চলছিল সপ্তাহে দুদিন করে। তবে মাঝেমধ্যে অবস্থার অবনতি হতো তার। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাকে।

সবশেষ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার চিকিৎসায় ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।

শনিবার রাতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে উনাকে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করাতে হতো। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। ডায়ালাইসিসের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন।

ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া শহরে লালনসংগীত চর্চা করেছেন। ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে ফরিদা পারভীনের পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে তাকে।

ফরিদা পারভীনের স্কুলজীবনের শুরুটা মাগুরায়। একাধিক স্কুলে পড়াশোনা শেষে তিনি কুষ্টিয়ার মীর মশাররফ হোসেন বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৪ সালে কুষ্টিয়া গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন।

লালনসংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। এর বাইরে ১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন। লালনশিল্পী হিসেবেই সুপরিচিত হন, তার কণ্ঠে বেশ কটি আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত