গাজীউল হক সোহাগ
চে গুয়েভারা বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র বদলে দেওয়ার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিলেন। মাত্র চার দশকের জীবনে তিনি কতকিছু করেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়েছেন। দেশ থেকে দেশে ঘুরে ঘুরে নিপীড়িত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁর আত্নত্যাগের ৬৮ বছর পরেও তিনি প্রাসঙ্গিক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছে , তাঁদের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে তাঁর প্রতিকৃতি। দ্রোহ বিপ্লব ও চেতনার চে।
অন্যদিকে কুমিল্লার কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আখতার হামিদ খান। তিনি কুমিল্লার মানুষের ভাগ্য বদল করে দিয়েছেন কুমিল্লা পদ্ধতির মাধ্যমে। তাঁর উদ্ভাবিত প্রকল্প বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে মডেল। ২৬ বছর আগে তিনি গত হয়েছেন। এখনও তাঁকে নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তাঁর কর্মযজ্ঞ নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে। দারিদ্র বিমোচনে, সমবায়ে, ক্ষুদ্র ঋণে, স্থানীয় সরকার কাঠামো গড়তে তিনি ছিলেন অগ্রদূত।
চে গুয়েভারা ও ড. আখতার হামিদ খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৯ অক্টোবর। চে ও ড. আখতার হামিদ খানকে স্মরণ করে সম্পাদনা করেছেন আমার শহর সম্পাদক গাজীউল হক সোহাগ।
চে গুয়েভারা
চে গুয়েবারার জন্ম আর্জেন্টিনার রোজারিওতে ১৯২৮ সালের ১৪ জুন। চে এক চেতনার নাম। দ্রোহের নাম। বিপ্লবের নাম। চে সমাজতন্ত্রের চেতনায় বিশ্বাস করতেন। গেরিলা যুদ্ধেও তাত্ত্বিক ও কৌশলবিদ ছিলেন। চিকিৎসক ছিলেন। মন্ত্রী ছিলেন। লেখক ছিলেন। বুদ্ধিজীবী ছিলেন। খেলোয়াড় ছিলেন। লাতিন আমেরিকা জুড়ে লড়াই করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রচণ্ড দ্রোহ ছিলেন তিনি। মার্কসবাদী ব্যক্তিত্ব। কিউবার বিপ্লবের অগ্নিপুরুষ। তিনি কিউবার সান্তা ক্লারাতে ঘুমিয়ে আছেন। সেখানেই তাঁর সমাধি। তরুণ বয়সে তিনি লাতিন আমেরিকার বিস্তীর্ণ জনপদ ঘুরে দেখেন। তখন মানুষের দারিদ্রতা, দুঃখময় জীবন তাঁকে তাড়িত করে। এরপর তিনি বিপ্লবের দীক্ষা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। তিনি ইতিহাসের এক কালজয়ী চরিত্র। গুয়েতেমালা, মেক্সিকো, কিউবা, কঙ্গো, বলিভিয়ায় সংগ্রাম করেন। ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৯ অক্টোবর তাঁকে নয়টি গুলি করে হত্যা করা হয়।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, চে গুয়েভারা কিউবান ভাষায় লিখেছেন প্রায় ৭০টি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি লিখে দিয়েছেন পাঁচটি বইয়ের ভূমিকা। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ২৫০ টি ভাষণ আর সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আইনজীবী প্রহলাদ দেবনাথ বলেন,‘ চে আমাদের চেতনার নাম। তাঁর আদর্শ বুকে নিয়ে আমরা ছাত্র ইউনিয়ন করেছি। তিনি অনুপ্রেরণার আরেক নাম।’
ড. আখতার হামিদ খান
২০১২সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বার্ড থেকে প্রকাশিত আখতার হামিদ খান স্মারকগ্রন্থে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯১৪ সালের ১৫ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরিলীর সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন ড. আখতার হামিদ খান। ১৯১৪ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত তাঁর শৈশব, বাল্য ও শিক্ষা জীবন বেরিলী, আগ্রা ও মিরাটে কাটে। মাত্র ২১ বৎসর বয়সে ইংরেজি সাহিত্যে আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ পাশ করেন। ১৯৩৪ সালে তদানীন্তন বৃটিশ ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানজনক চাকুরি আইসিএস পাশ করেন। ১৯৩৪-৩৬ সময়ে আইসিএস প্রবেশনার হিসেবে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বৎসর অবস্থান করেন। ১৯৩৭-৪৪ সময়ে আইসিএস অফিসার হিসেবে কুমিল্লা, পশ্চিমবঙ্গের তমলুক, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন স্থানে এসডিও এবং অন্যান্য উচ্চ পদে চাকুরি করেন। ১৯৩৯ সালে খাকসার নামক সমাজ সংস্থারমূলক আন্দোলনের প্রবর্তক প্রখ্যাত আলেম আল্লামা মাশরেকীর কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত মানুষের বিষয়ে বৃটিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে নীতিগত মত পার্থক্যের কারণে আইসিএস-এর চাকুরি হতে ইস্তফা দেন। ১৯৪৪-৪৭ সময়ে তালা মেরামতকারী ও কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন এবং মিরাট নামক পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৯৪৭-৫০ সময়ে দিল্লীতে ড. জাকির হোসেন প্রতিষ্ঠিত জামিয়া মিল্লিয়া নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১০০ রূপী বেতনে প্রধান শিক্ষক এর চাকুরি নেন।
১৯৫০-৫৪ সময়ে অধ্যক্ষ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ-এর দায়িত্ব পালন করেন এবং কলেজের ছাত্র ও অভিভাবকদের দারিদ্র্েযর কারণ অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হন। ১৯৫৪-৫৫ সময়ে 'ভিলেজ এইড' কর্মসূচির পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। ১৯৫৫-৫৮ সালে পুনরায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে কাজ করেন ।
১৯৫৯ সালে পরিচালক, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, কুমিল্লা এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বার্ডে তাঁর নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী কর্মের ফসল পল্লী উন্নয়নের বিখ্যাত মডেল 'কুমিল্লা এ্যাপ্রোচ'। এ মডেলের অন্তর্গত দ্বি-স্তর সমবায়, থানা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র, পল্লী পূর্ত কর্মসূচি, থানা সেচ কর্মসূচি ও পরিবার পরিকল্পনা এই ৫টি বিষয়কে কেন্দ্র করে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পল্লী ও দারিদ্র্য বিমোচনের কাজ অগ্রসর হচ্ছে এবং কুমিল্লা মডেল, দক্ষিণ এশিয়া ও তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে পল্লী উন্নয়নের মডেল হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ১৯৬৩ সালে র্যামান ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাস্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটি হতে অনারারি 'ডক্টর অব ল' ডিগ্রিতে ভূষিত হন। ১৯৬৫-৭১ সময়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, কুমিল্লা-এর বোর্ড অব গভর্নরস-এর ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে সামরিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে তাঁকে ইসলামাবাদ নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকালে তাঁকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। ১৯৭১-৭২ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, লয়ালপুর এর রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২-৭৩ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩-৭৯ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনির্ভাসিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৭সালে পুনরায় বাংলাদেশে আসার পর কুমিল্লা ফাউন্ডেশন তাঁর কর্মের জন্য তাঁকে স্বর্ণপদক প্রদান করে। ১৯৭৮-৭৯ সালে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া এর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪-৯৫ সময়ে করাচীর ওরাঙ্গী প্রকল্পের পরিচালক ও উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর আমেরিকার ইন্ডিয়ানা স্টেট-এর একটি হাসপাতালে ৮৫ বৎসর বয়সে তাঁর কর্মময় জীবনের অবসান ঘটে।
এদিকে ড. আখতার হামিদ খানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বার্ডের মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও যুগ্ম পরিচালক (প্রশাসন) জোনায়েদ রহিমকে সদস্য সচিব করে কমিটি করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় বার্ডে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর ১০ জন হাফেজ দিয়ে কোরআন খতম, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বার্ড মডেল স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ড. আখতার হামিদ খানের জীবনী নিয়ে আলোচনা হবে।
বার্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, ড. আখতার হামিদ খান বার্ডে যা উদ্ভাবন করেছেন তার সুফল বাংলাদেশ পাচ্ছে। তিনি কর্মবীর ছিলেন। কুমিল্লার মানুষের উন্নয়নের সারথী ছিলেন তিনি। তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন।
চে গুয়েভারা বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র বদলে দেওয়ার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিলেন। মাত্র চার দশকের জীবনে তিনি কতকিছু করেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়েছেন। দেশ থেকে দেশে ঘুরে ঘুরে নিপীড়িত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁর আত্নত্যাগের ৬৮ বছর পরেও তিনি প্রাসঙ্গিক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছে , তাঁদের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে তাঁর প্রতিকৃতি। দ্রোহ বিপ্লব ও চেতনার চে।
অন্যদিকে কুমিল্লার কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আখতার হামিদ খান। তিনি কুমিল্লার মানুষের ভাগ্য বদল করে দিয়েছেন কুমিল্লা পদ্ধতির মাধ্যমে। তাঁর উদ্ভাবিত প্রকল্প বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে মডেল। ২৬ বছর আগে তিনি গত হয়েছেন। এখনও তাঁকে নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তাঁর কর্মযজ্ঞ নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে। দারিদ্র বিমোচনে, সমবায়ে, ক্ষুদ্র ঋণে, স্থানীয় সরকার কাঠামো গড়তে তিনি ছিলেন অগ্রদূত।
চে গুয়েভারা ও ড. আখতার হামিদ খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৯ অক্টোবর। চে ও ড. আখতার হামিদ খানকে স্মরণ করে সম্পাদনা করেছেন আমার শহর সম্পাদক গাজীউল হক সোহাগ।
চে গুয়েভারা
চে গুয়েবারার জন্ম আর্জেন্টিনার রোজারিওতে ১৯২৮ সালের ১৪ জুন। চে এক চেতনার নাম। দ্রোহের নাম। বিপ্লবের নাম। চে সমাজতন্ত্রের চেতনায় বিশ্বাস করতেন। গেরিলা যুদ্ধেও তাত্ত্বিক ও কৌশলবিদ ছিলেন। চিকিৎসক ছিলেন। মন্ত্রী ছিলেন। লেখক ছিলেন। বুদ্ধিজীবী ছিলেন। খেলোয়াড় ছিলেন। লাতিন আমেরিকা জুড়ে লড়াই করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রচণ্ড দ্রোহ ছিলেন তিনি। মার্কসবাদী ব্যক্তিত্ব। কিউবার বিপ্লবের অগ্নিপুরুষ। তিনি কিউবার সান্তা ক্লারাতে ঘুমিয়ে আছেন। সেখানেই তাঁর সমাধি। তরুণ বয়সে তিনি লাতিন আমেরিকার বিস্তীর্ণ জনপদ ঘুরে দেখেন। তখন মানুষের দারিদ্রতা, দুঃখময় জীবন তাঁকে তাড়িত করে। এরপর তিনি বিপ্লবের দীক্ষা নিয়ে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। তিনি ইতিহাসের এক কালজয়ী চরিত্র। গুয়েতেমালা, মেক্সিকো, কিউবা, কঙ্গো, বলিভিয়ায় সংগ্রাম করেন। ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৯ অক্টোবর তাঁকে নয়টি গুলি করে হত্যা করা হয়।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, চে গুয়েভারা কিউবান ভাষায় লিখেছেন প্রায় ৭০টি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি লিখে দিয়েছেন পাঁচটি বইয়ের ভূমিকা। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ২৫০ টি ভাষণ আর সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আইনজীবী প্রহলাদ দেবনাথ বলেন,‘ চে আমাদের চেতনার নাম। তাঁর আদর্শ বুকে নিয়ে আমরা ছাত্র ইউনিয়ন করেছি। তিনি অনুপ্রেরণার আরেক নাম।’
ড. আখতার হামিদ খান
২০১২সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বার্ড থেকে প্রকাশিত আখতার হামিদ খান স্মারকগ্রন্থে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯১৪ সালের ১৫ জুলাই ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরিলীর সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন ড. আখতার হামিদ খান। ১৯১৪ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত তাঁর শৈশব, বাল্য ও শিক্ষা জীবন বেরিলী, আগ্রা ও মিরাটে কাটে। মাত্র ২১ বৎসর বয়সে ইংরেজি সাহিত্যে আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ পাশ করেন। ১৯৩৪ সালে তদানীন্তন বৃটিশ ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানজনক চাকুরি আইসিএস পাশ করেন। ১৯৩৪-৩৬ সময়ে আইসিএস প্রবেশনার হিসেবে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বৎসর অবস্থান করেন। ১৯৩৭-৪৪ সময়ে আইসিএস অফিসার হিসেবে কুমিল্লা, পশ্চিমবঙ্গের তমলুক, পটুয়াখালী ও নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন স্থানে এসডিও এবং অন্যান্য উচ্চ পদে চাকুরি করেন। ১৯৩৯ সালে খাকসার নামক সমাজ সংস্থারমূলক আন্দোলনের প্রবর্তক প্রখ্যাত আলেম আল্লামা মাশরেকীর কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত মানুষের বিষয়ে বৃটিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে নীতিগত মত পার্থক্যের কারণে আইসিএস-এর চাকুরি হতে ইস্তফা দেন। ১৯৪৪-৪৭ সময়ে তালা মেরামতকারী ও কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন এবং মিরাট নামক পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৯৪৭-৫০ সময়ে দিল্লীতে ড. জাকির হোসেন প্রতিষ্ঠিত জামিয়া মিল্লিয়া নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাত্র ১০০ রূপী বেতনে প্রধান শিক্ষক এর চাকুরি নেন।
১৯৫০-৫৪ সময়ে অধ্যক্ষ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ-এর দায়িত্ব পালন করেন এবং কলেজের ছাত্র ও অভিভাবকদের দারিদ্র্েযর কারণ অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হন। ১৯৫৪-৫৫ সময়ে 'ভিলেজ এইড' কর্মসূচির পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। ১৯৫৫-৫৮ সালে পুনরায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ পদে কাজ করেন ।
১৯৫৯ সালে পরিচালক, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, কুমিল্লা এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বার্ডে তাঁর নেতৃত্ব ও উদ্ভাবনী কর্মের ফসল পল্লী উন্নয়নের বিখ্যাত মডেল 'কুমিল্লা এ্যাপ্রোচ'। এ মডেলের অন্তর্গত দ্বি-স্তর সমবায়, থানা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র, পল্লী পূর্ত কর্মসূচি, থানা সেচ কর্মসূচি ও পরিবার পরিকল্পনা এই ৫টি বিষয়কে কেন্দ্র করে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পল্লী ও দারিদ্র্য বিমোচনের কাজ অগ্রসর হচ্ছে এবং কুমিল্লা মডেল, দক্ষিণ এশিয়া ও তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে পল্লী উন্নয়নের মডেল হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ১৯৬৩ সালে র্যামান ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাস্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটি হতে অনারারি 'ডক্টর অব ল' ডিগ্রিতে ভূষিত হন। ১৯৬৫-৭১ সময়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, কুমিল্লা-এর বোর্ড অব গভর্নরস-এর ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে সামরিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে তাঁকে ইসলামাবাদ নিয়ে যাওয়া হয় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকালে তাঁকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। ১৯৭১-৭২ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, লয়ালপুর এর রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭২-৭৩ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩-৭৯ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনির্ভাসিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৭সালে পুনরায় বাংলাদেশে আসার পর কুমিল্লা ফাউন্ডেশন তাঁর কর্মের জন্য তাঁকে স্বর্ণপদক প্রদান করে। ১৯৭৮-৭৯ সালে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া এর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪-৯৫ সময়ে করাচীর ওরাঙ্গী প্রকল্পের পরিচালক ও উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর আমেরিকার ইন্ডিয়ানা স্টেট-এর একটি হাসপাতালে ৮৫ বৎসর বয়সে তাঁর কর্মময় জীবনের অবসান ঘটে।
এদিকে ড. আখতার হামিদ খানের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বার্ডের মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও যুগ্ম পরিচালক (প্রশাসন) জোনায়েদ রহিমকে সদস্য সচিব করে কমিটি করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় বার্ডে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর ১০ জন হাফেজ দিয়ে কোরআন খতম, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বার্ড মডেল স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ড. আখতার হামিদ খানের জীবনী নিয়ে আলোচনা হবে।
বার্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, ড. আখতার হামিদ খান বার্ডে যা উদ্ভাবন করেছেন তার সুফল বাংলাদেশ পাচ্ছে। তিনি কর্মবীর ছিলেন। কুমিল্লার মানুষের উন্নয়নের সারথী ছিলেন তিনি। তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের খুনের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমানের প্রেমের জেরে খুন হয়েছেন জবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন।
১৪ ঘণ্টা আগেহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুনের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগামী তিনদিন তাদের অতিরিক্ত ফ্লাইটের সব চার্জ মওকুফ
২ দিন আগে