• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> কুমিল্লা জেলা
> আদর্শ সদর

৩৬৭ বছরের শাহ সুজা মসজিদ

গাজীউল হক সোহাগ
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
logo

৩৬৭ বছরের শাহ সুজা মসজিদ

গাজীউল হক সোহাগ

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
Photo

তখন ছিল মোগল শাসনামল। সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে শাহ সুজা ছিলেন বাংলার সুবাদার। শাহ সুজা ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লার গোমতী নদীর তীরে তাঁর নামে নির্মিত হয় এই শাহ সুজা মসজিদ। ৩৬৭ বছরের ঐতিহ্যে লালিত তিন গম্বুজ মসজিদটি কুমিল্লার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই মসজিদ দেখতে আসেন। নামাজ আদায় করেন।

ঐতিহাসিক গ্রন্থ রাজমালায় ইতিহাসবিদ কৈলাস চন্দ্র সিংহ উল্লেখ করেন, কুমিল্লা নগরের শাহ সুজা মসজিদ একটি ইষ্টক নির্মিত বৃহৎ মসজিদ। শাহ সুজা ত্রিপুরা রাজ্য জয় করে চিরস্মরণীয় হওয়ার জন্য এটি নির্মাণ করেন। একই গ্রন্থে আরও উল্লেখ আছে, ত্রিপুরার মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য বাংলার সুবাদারের নাম স্মরণীয় রাখার জন্য অনেক অর্থকড়ি ব্যয় করে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। যেভাবেই নির্মিত হোক না কেন, এটি কুমিল্লার অন্যতম স্থাপত্যশৈলী।

মসজিদটি পড়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ মুসল্লিদের মুগ্ধ করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নতুন নতুন মুসল্লি যুক্ত হন। এই মসজিদ মোগলটুলী এলাকাকে ভিন্নভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়।

সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে জানা গেছে, মসজিদটিতে ছয়টি মিনার আছে। দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট, প্রস্থ ২৮ ফুট। কিবলা প্রাচীরের পুরুত্ব ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি আর পূর্ব প্রাচীরের পুরুত্ব ৪ ফুট ২ ইঞ্চি। বারান্দার প্রস্থ ২৪ ফুট। তিনটি মেহরাব রয়েছে এতে।

এ মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজ নির্মাণে খিলানপদ্ধতি, দুই পাশের গম্বুজ নির্মাণে স্কুইঞ্চ ও পেনডেনটিভ উভয় পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।

জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, স্কুইঞ্চ হলো গম্বুজ তৈরির ক্ষেত্রে অষ্টকোনাকার পর্যায়ে আনার জন্য যে স্থাপত্য বিন্যাস করা হয়, সেটি। অন্যদিকে পেনডেনটিভ হলো মসজিদের ভার ও গম্বুজ তৈরি করার পদ্ধতি।

কুমিল্লা জেলার ইতিহাস বই থেকে জানা যায়, শাহ সুজা মসজিদের গম্বুজের শীর্ষে পদ্ম ফুলের নকশা ও তার ওপরে রয়েছে কলসি। গম্বুজের চারদিকে রয়েছে পদ্ম পাপড়ির মারলন নকশা। মসজিদের খিলানগুলো চতুর্কেন্দ্রিক রীতিতে তৈরি। মসজিদের ফটক ধবধবে সাদা রঙের।

ইতিহাসবিদদের মতে, এ মসজিদের উদ্বোধনী খুতবা পড়েছিলেন সম্রাট শাহজাহানের আত্মীয় ও মোগল বংশের লোক কাজী মনসুরুল হক। বারবার এই মসজিদ সংস্কার হয়। ১৮৮২ সালে জনৈক ইমাম উদ্দিন এই মসজিদের বারান্দা নির্মাণ করেন।

২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি শাহ সুজা মসজিদ কমিটি দুটি ফলকে মসজিদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এতে পর্যটক ও নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা মসজিদের ইতিহাস জানতে পারেন। মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, মসজিদটি কুমিল্লার অন্যতম ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। আমরা মসজিদের মূল নকশা ঠিক রেখেই সংস্কারকাজ করি। কোথাও কোনো দেয়াল ধসে গেলে কিংবা পলেস্তারা খসে পড়লে সংস্কার করি।

২০০৩ সাল থেকে এ মসজিদে নামাজ পড়ান খতিব মাওলানা মুফতি খিজির আহমদ কাসেমী। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে বহু মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে আসেন। জোহরের নামাজের সময় মুসল্লি বেশি আসেন। মসজিদে ১৮টি কাতারে সহস্রাধিক লোকের নামাজ পড়ার সুযোগ রয়েছে। জুমার নামাজে মুসল্লি ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, পুরোনো স্থাপনা। অতিবৃষ্টি হলে কোথাও কোথাও ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে।

স্থানীয় ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, শাহ সুজা প্রায় ২০ বছর এ অঞ্চলে রাজত্ব করেন। এ অঞ্চলকে মেহেলকুল বলা হতো। এখানে মসজিদ নির্মিত হওয়ায় মুসলমানদের নামাজের ব্যবস্থা হয়। এ মসজিদই শাহ সুজা মসজিদ, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক বেশি।

ইতিহাসবিদ ও ভ্রমণপিপাসুরা কুমিল্লায় এলে এ মসজিদ দেখতে যান।

যাতায়াত: কুমিল্লা হাইস্কুলের পেছনের সড়কে এ মসজিদের অবস্থান। মোগলটুলী মোড় দিয়ে সামনে এগোলেই এ মসজিদ।

Thumbnail image

তখন ছিল মোগল শাসনামল। সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে শাহ সুজা ছিলেন বাংলার সুবাদার। শাহ সুজা ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কুমিল্লার গোমতী নদীর তীরে তাঁর নামে নির্মিত হয় এই শাহ সুজা মসজিদ। ৩৬৭ বছরের ঐতিহ্যে লালিত তিন গম্বুজ মসজিদটি কুমিল্লার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই মসজিদ দেখতে আসেন। নামাজ আদায় করেন।

ঐতিহাসিক গ্রন্থ রাজমালায় ইতিহাসবিদ কৈলাস চন্দ্র সিংহ উল্লেখ করেন, কুমিল্লা নগরের শাহ সুজা মসজিদ একটি ইষ্টক নির্মিত বৃহৎ মসজিদ। শাহ সুজা ত্রিপুরা রাজ্য জয় করে চিরস্মরণীয় হওয়ার জন্য এটি নির্মাণ করেন। একই গ্রন্থে আরও উল্লেখ আছে, ত্রিপুরার মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য বাংলার সুবাদারের নাম স্মরণীয় রাখার জন্য অনেক অর্থকড়ি ব্যয় করে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। যেভাবেই নির্মিত হোক না কেন, এটি কুমিল্লার অন্যতম স্থাপত্যশৈলী।

মসজিদটি পড়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ মুসল্লিদের মুগ্ধ করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে নতুন নতুন মুসল্লি যুক্ত হন। এই মসজিদ মোগলটুলী এলাকাকে ভিন্নভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়।

সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে জানা গেছে, মসজিদটিতে ছয়টি মিনার আছে। দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট, প্রস্থ ২৮ ফুট। কিবলা প্রাচীরের পুরুত্ব ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি আর পূর্ব প্রাচীরের পুরুত্ব ৪ ফুট ২ ইঞ্চি। বারান্দার প্রস্থ ২৪ ফুট। তিনটি মেহরাব রয়েছে এতে।

এ মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজ নির্মাণে খিলানপদ্ধতি, দুই পাশের গম্বুজ নির্মাণে স্কুইঞ্চ ও পেনডেনটিভ উভয় পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।

জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, স্কুইঞ্চ হলো গম্বুজ তৈরির ক্ষেত্রে অষ্টকোনাকার পর্যায়ে আনার জন্য যে স্থাপত্য বিন্যাস করা হয়, সেটি। অন্যদিকে পেনডেনটিভ হলো মসজিদের ভার ও গম্বুজ তৈরি করার পদ্ধতি।

কুমিল্লা জেলার ইতিহাস বই থেকে জানা যায়, শাহ সুজা মসজিদের গম্বুজের শীর্ষে পদ্ম ফুলের নকশা ও তার ওপরে রয়েছে কলসি। গম্বুজের চারদিকে রয়েছে পদ্ম পাপড়ির মারলন নকশা। মসজিদের খিলানগুলো চতুর্কেন্দ্রিক রীতিতে তৈরি। মসজিদের ফটক ধবধবে সাদা রঙের।

ইতিহাসবিদদের মতে, এ মসজিদের উদ্বোধনী খুতবা পড়েছিলেন সম্রাট শাহজাহানের আত্মীয় ও মোগল বংশের লোক কাজী মনসুরুল হক। বারবার এই মসজিদ সংস্কার হয়। ১৮৮২ সালে জনৈক ইমাম উদ্দিন এই মসজিদের বারান্দা নির্মাণ করেন।

২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি শাহ সুজা মসজিদ কমিটি দুটি ফলকে মসজিদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এতে পর্যটক ও নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা মসজিদের ইতিহাস জানতে পারেন। মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, মসজিদটি কুমিল্লার অন্যতম ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। আমরা মসজিদের মূল নকশা ঠিক রেখেই সংস্কারকাজ করি। কোথাও কোনো দেয়াল ধসে গেলে কিংবা পলেস্তারা খসে পড়লে সংস্কার করি।

২০০৩ সাল থেকে এ মসজিদে নামাজ পড়ান খতিব মাওলানা মুফতি খিজির আহমদ কাসেমী। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে বহু মুসল্লি এখানে নামাজ পড়তে আসেন। জোহরের নামাজের সময় মুসল্লি বেশি আসেন। মসজিদে ১৮টি কাতারে সহস্রাধিক লোকের নামাজ পড়ার সুযোগ রয়েছে। জুমার নামাজে মুসল্লি ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, পুরোনো স্থাপনা। অতিবৃষ্টি হলে কোথাও কোথাও ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে।

স্থানীয় ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, শাহ সুজা প্রায় ২০ বছর এ অঞ্চলে রাজত্ব করেন। এ অঞ্চলকে মেহেলকুল বলা হতো। এখানে মসজিদ নির্মিত হওয়ায় মুসলমানদের নামাজের ব্যবস্থা হয়। এ মসজিদই শাহ সুজা মসজিদ, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক বেশি।

ইতিহাসবিদ ও ভ্রমণপিপাসুরা কুমিল্লায় এলে এ মসজিদ দেখতে যান।

যাতায়াত: কুমিল্লা হাইস্কুলের পেছনের সড়কে এ মসজিদের অবস্থান। মোগলটুলী মোড় দিয়ে সামনে এগোলেই এ মসজিদ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

বগুড়ার এসপি হলেন বরুড়ার শাহাদাত

২

বিএনপি নেতা কায়কোবাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ

৩

চান্দিনায় ৩০টি স্টলে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী

৪

লটারিতে কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান

৫

মনোহরগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ - ২০২৫ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী উদ্বোধ ও আলোচনা সভা

সম্পর্কিত

বগুড়ার এসপি হলেন বরুড়ার শাহাদাত

বগুড়ার এসপি হলেন বরুড়ার শাহাদাত

৭ ঘণ্টা আগে
বিএনপি নেতা কায়কোবাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ

বিএনপি নেতা কায়কোবাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ

৮ ঘণ্টা আগে
চান্দিনায় ৩০টি স্টলে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী

চান্দিনায় ৩০টি স্টলে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী

৮ ঘণ্টা আগে
লটারিতে কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান

লটারিতে কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান

১১ ঘণ্টা আগে