সান্তোসে সতীর্থদের অবহেলায় ‘হতভম্ব’ নেইমার

আমার শহর স্পোর্টস ডেস্ক
Thumbnail image

ব্রাজিলিয়ান সিরি-আ লিগের ৩৩তম রাউন্ডে সান্তোস বনাম ফ্লামেঙ্গোর ম্যাচে ৩-২ ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে সান্তোস। তবে ফলাফলের চেয়েও বেশি আলোচনায় এসেছে এক অদ্ভুত মুহূর্ত-যেখানে দলের সতীর্থরা সম্পূর্ণভাবে নেইমারকে উপেক্ষা করেন। আর হতবাক হয়ে যান এই অভিজ্ঞ সুপারস্টার। পরবর্তীতে বদলি করে নেওয়ার পর চরম হতাশা ও ক্ষোভে ড্রেসিংরুমে চলে যান তিনি। এক কথায়, বিশৃঙ্খল এক মৌসুমের সংক্ষিপ্ত প্রতিচ্ছবি ছিল সেই রাত। ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ৬৬তম মিনিটে। যখন ফ্লামেঙ্গোর বিপক্ষে সান্তোস ২-০ গোলে পিছিয়ে। নেইমার তখন স্পষ্ট নির্দেশ দেন যেন দলটি বারবার ব্যর্থ সেই লং-পাস কৌশল বাদ দিয়ে ছোট পাসে বল চালানো শুরু করে। কিন্তু তার কথা কেউ শোনেনি। ক্ষোভে-হতাশায় নিজেই গোলকিপারের জায়গা থেকে গোল কিক নিতে নেমে পড়েন নেইমার। যাতে তিনি নিজের মতো করে আক্রমণ সাজাতে পারেন। কিন্তু তার সেই প্রচেষ্টা মুহূর্তেই ভেস্তে যায়। কয়েক সেকেন্ড পরই সেন্টার-ব্যাক লুয়ান পেরেস আবারও এক লং-পাসে বল তুলে দেন। যা ফ্লামেঙ্গোর ডিফেন্ডাররা সহজেই কেটে নেয়। নেইমার থেমে গিয়ে দুই হাত তুলে বিরক্তি প্রকাশ করেন। মুখভঙ্গিতে ঝরে পড়ে হতাশা ও অবিশ্বাস। এই দৃশ্যই যেন পুরো মৌসুমে সান্তোসের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার প্রতীক। যে নেইমার একসময় সান্তোসের ঘর থেকেই বিশ্ব ফুটবলে উঠেছিলেন, যিনি বার্সেলোনা ও পিএসজিতে খেলে শৈল্পিক পাসিং ফুটবলের প্রতীক হয়েছিলেন, তার দল এখন সেই সমন্বয়বিহীন ফুটবলে হারিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটির ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভক্তরা একে বলেন, “একদম নেইমারসুলভ মুহূর্ত”। যা আরও বাড়িয়ে দেয় দলীয় মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন। ম্যাচের শেষ দিকে কোচ হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা ৮৫তম মিনিটে নেইমারকে তুলে নেন এবং আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার বেনহামিন রোলহেইসারকে নামান। তখন সান্তোস ৩-০ গোলে পিছিয়ে। বদলির নির্দেশে ক্ষিপ্ত হয়ে নেইমার বেঞ্চের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “আমাকেই নামিয়ে দিচ্ছেন?”এরপর সরাসরি মাঠ ছাড়েন- শেষ বাঁশি বাজানোর আগেই ড্রেসিংরুমে চলে যান। যদিও পরে সান্তোস দুটি সান্ত্বনাসূচক গোল করে ব্যবধান কমায়। কিন্তু হার এড়াতে পারেনি। এই হারের পরও দল রয়ে যায় রেলিগেশন জোনে। ৩২ ম্যাচে মাত্র ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে নিরাপদ অবস্থান থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে। ব্রাজিলের আটবারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটি এখন সত্যিকারের অবনমনের আতঙ্কে। ম্যাচ শেষে কোচ ভয়ভোদা পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেন, “নেইমারের প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক। একজন খেলোয়াড় সবসময় মাঠে থাকতে চায়, দলকে সাহায্য করতে চায়।” তবু বোঝা যাচ্ছিল- সান্তোস শিবিরের মধ্যে এখন চাপ ও অস্থিরতা চরম পর্যায়ে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত