কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধবিরতিতে রাজি রাশিয়া ও ইউক্রেন: যুক্তরাষ্ট্র

আমার শহর আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Thumbnail image
কৃষ্ণ সাগরে নৌচলাচল নিরাপদ রাখতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে কৃষ্ণ সাগরে নিরাপদ নৌচলাচল নিশ্চিত করতে এবং একে অপরের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধে আলাদা চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ওয়াশিংটনের এই ঘোষণা দিয়েছে। তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতির দিকে একটি সম্ভাব্য অগ্রগতি হিসেবে এই ঘোষণা আসলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাই ওয়াশিংটন যদি জেলেনস্কিকে চুক্তি মেনে চলার ‘অনুশাসন’ দেয়, তবেই তারা কৃষ্ণ সাগরীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি আছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা অনুযায়ী, কৃষ্ণ সাগরে নৌচলাচল নিরাপদ রাখতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। একই সঙ্গে তারা একে অপরের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে।

ইউক্রেন বলেছে, কৃষ্ণ সাগরের পূর্বাঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ চলাচল করলে তা হুমকি হিসেবে দেখবে কিয়েভ।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ কৃষ্ণ সাগরের পূর্বাঞ্চলের বাইরে গেলে আমরা আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণ অধিকার রাখি।

ল্যাভরভ বলেছেন, কিয়েভের সঙ্গে আগের চুক্তির করুণ অভিজ্ঞতা আছে আমাদের। তাই শুধু ওয়াশিংটন জেলেনস্কিকে নির্দেশ দিলে আমরা নিশ্চিত হতে পারি।

এদিকে জেলেনস্কি আগেই বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শান্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করা যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত যুদ্ধবিরতির অঙ্গীকার করেছেন। গত ১১ মার্চ ৩০ দিনের পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও পুতিন দীর্ঘ শর্তাবলি দেন। এরপর সীমিত যুদ্ধবিরতি (জ্বালানি স্থাপনা ও সমুদ্র) নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরবে আলাদা বৈঠক করে যুক্তরাষ্ট্র।

ট্রাম্প গত বছর নির্বাচনি প্রচারে যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দিচ্ছেন তিনি, যা বাণিজ্যিক সুযোগ ও মহাকাশ থেকে খনিজসম্পদে সহযোগিতার দিকে এগোতে পারে।

ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের আশঙ্কা, ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে এমন দ্রুত চুক্তি করতে পারেন যাতে করে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে বাধ্য হবে কিয়েভ, রাশিয়ার দখলকৃত চারটি অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে। ইউক্রেন এ ধরনের শর্তকে ‘আত্মসমর্পণের সমতুল্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

চুক্তি বাস্তবায়ন হলে এটি যুদ্ধবিরতির দিকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে। তবে রাশিয়ার শর্ত ও উভয় পক্ষের অবিশ্বাস চূড়ান্ত সমাধানকে জটিল করে তুলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা শান্তি প্রক্রিয়ায় সব পক্ষকে আস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করছি। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ না হলে স্থায়ী শান্তি আসবে না।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত