নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান সুশীলা কার্কির শপথ

আমার শহর ডেস্ক
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৬
Thumbnail image

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউদেলের সঙ্গে মতানৈক্যের অবসানের পর তাকে সরকারপ্রধান করা হয়। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি শপথ নিয়েছেন। এর আগে সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুশীলার নিয়োগ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন আন্দোলনকারী জেন-জির প্রতিনিধিরা।

সুশীলার শপথের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়। আগামী বছরের মার্চে নেপালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নেপালের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রেস উপদেষ্টা কিরন পোখারেল এএফপিকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শপথ নিয়েই তিনি সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ পরবর্তী নির্বাচন। আমার ধারণা এই নির্বাচনে তরুণরা ভালো করবে। আসলে নির্বাচন গণতন্ত্রের চেয়ে ভালো কোন পদ্ধতি এখনো পৃথিবীতে আসেনি। অথচ আমাদের দেশে এক বছরের বেশি সময় আগে সরকার এসেছে এবং এখনো ভোটের সুনির্দিষ্ট তারিখ কেউ জানে না। পার্থক্যটা এখানেই। পার্থক্যটা গড়ে দেবেন সুশীলাই। তাঁর অতীত ইতিহাস তাই বলে।

জেনুজিদের পছন্দের প্রার্থী সুশীলা কারকির বয়স ৭৩ বছর। নেপালে বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছরেরও বেশি সময়ের ইতিহাসে প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি হন তিনি ২০১৬ সালে। নেপালের সাবেক ক্ষমতাসীন জোটের (নেপালি কংগ্রেস এবং মাওইস্ট সেন্টার) সংসদ সদস্যরা সংসদে সুশীলা কারকির বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব দাখিল করলে তাকে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। তবে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে এই অভিশংসন প্রস্তাবকে অকার্যকর ঘোষণা করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি চোলেন্দ্র শমসের রানা। আজকে দেখেন দেশটির ৭৫ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে, আনুষ্ঠানিক নিয়োগের মাধ্যমে, প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী এই সুশীলা।

খেয়াল করে দেখুন, বাংলাদেশের মতো নেপালেও তরুণরা দুর্নীতি অবসানের জন্য এবং জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার জন্য তারা রাজপথে নেমেছিল। ব্যাপকভাবে ভাঙচুর আগুনের একদিন পরেই নেপালের তরুণরা প্রতিবাদ করে বলেছে তাদের আন্দোলন অহিংস ছিল। যারা হামলা ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে তারা অনুপ্রবেশকারী এবং আন্দোলন ছিনতাই করতে চাইছে। তরুণরা জানিয়েছেন তাদের আর কোনো বিক্ষোভের পরিকল্পনা নেই এবং প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারে। এরপর থেকে মব ভাঙচুর আগুন বন্ধ।

আমি মনে করি নেপালের তরুণদের এই বোধোদয়, সুশীলার মতো প্রধানমন্ত্রী দেশটাকে বাঁচিয়ে দেবে। আমার ধারণা শ্রীলংকার মতো নেপালের পরিস্থিতি কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে যেটা বাংলাদেশে এক বছরেও হয়নি। আসলে আমাদের হবেও না যদি না বোধোদয় হয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদের বোধ দিক! মানবিক বোধ, আইনের শাসনের বোধ, মবের বিরুদ্ধে বোধ, ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার বোধ!

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত