কর্মদক্ষতা মূল্যায়নে চট্রগ্রাম বিভাগে প্রথম কুমিল্লা জেলা পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২: ২৬
Thumbnail image

কর্মদক্ষতা মূল্যায়নে চট্রগ্রাম বিভাগে প্রথম হয়েছে কুমিল্লা জেলা পরিষদ। গতকাল বুধবার স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ও চট্রগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই তথ্য জানানো হয়। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা ব্যতীত ওই মূল্যায়ন করা হয়। এর আগে কুমিল্লার অবস্থান ছিল সপ্তম। এবার কুমিল্লা ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে।

এদিকে কুমিল্লা জেলা পরিষদ চট্রগ্রাম বিভাগে প্রথম হওয়ার পর সেখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মিষ্টিমুখ করেছে। সবার মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। গত বছরের ১২ নভেম্বর কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে যোগদান করেছেন বিসিএস ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম। তিনি যোগদানের পরপরই কুমিল্লা জেলা পরিষদের কাজে গতি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসে।

জানা গেছে, চট্রগ্রাম বিভাগের আটটি জেলা পরিষদের ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর মধ্যে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ পেয়ে কুমিল্লা জেলা পরিষদ প্রথম, ৭৯ পেয়ে চট্রগ্রাম দ্বিতীয়, ৭৭ পেয়ে নোয়াখালী তৃতীয়, ৭৫ পেয়ে কক্সাবাজার চতুর্থ, ৭৪ পেয়ে ফেনী পঞ্চম, ৭২ পেয়ে চাঁদপুর ষষ্ঠ, ৭০ পেয়ে যুগ্মভাবে সপ্তম লক্ষীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো চিঠিতে অর্জিত মান্নোয়নের জন্য সুপারিশও করা হয়। এগুলো হল- প্রকল্প গ্রহণে প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করা, ভূমি রাজস্ব খাতে আর্থিক সুশাসন নিশ্চিত জরুরি, নিজস্ব রাজস্ব আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া, প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় বিধিবিধান প্রতিপালন , প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ, ক্যাশবহি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষে উদ্যোগ ও যথাসময়ে বিধি মোতাবেক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

Untitled-1 copy

অভিব্যক্তি

প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি এনেছি

মো. নজরুল ইসলাম

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

কুমিল্লা জেলা পরিষদ

কর্মদক্ষতা মূল্যায়নে প্রথম হওয়ায় কর্মীদের কাজের গতি বাড়বে বলে মনে মনে করছি। একই সঙ্গে ভুয়া প্রকল্প দিয়ে সরকারের টাকা নয়ছয় করাও বন্ধ হবে। দুর্নীতি কমে আসবে। কুমিল্লা জেলা পরিষদে যোগদানের পর আমি প্রথমে সমস্যা সনাক্ত করি। পরে জানতে পারলাম এখানকার কর্মচারীদের দক্ষতা কম। আমি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। একই সঙ্গে প্রকৌশল শাখার দুর্নীতি বন্ধ করি। কুমিল্লা জেলা পরিষদের বেহাত হওয়া মূল্যবান ১৮৭ শতক জমি ও পুকুর উদ্ধার করি। ওই স্থানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। বুড়িচংয়ে ৯২ শতক পুকুর, হোমনায় ২৭ শতক জমির ওপর মার্কেট উদ্ধার, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের যাত্রী ছাউনি ও পাঁচটি দোকান উদ্ধার, মুরাদনগরের দুইটি দোকান উদ্ধার দাউদকান্দির ৪৭ শতক জমি উদ্ধার করেছি। ২৮৭ টি উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছি। তিন মাসে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা রাজস্ব আয়। আগে লিজের টাকা উঠনো হতো কম। এখন সবাইকে দিতে হচ্ছে। এবার আমরা জেলা পরিষদের পুকুর, ফেরিঘাট ইজারা দিয়েছি।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা হিসেবে কুমিল্লা এগিয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লা একমাত্র জেলা পরিষদ যার প্রতিটি কাজ ইজিপি (ইলেকট্রনিক গভর্মেন্ট প্রকিউরমেন্ট) তে যাচ্ছে। আমরা কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। সাতটা ব্যাংকে জেলা পরিষদ ১৫ কোটি টাকা এফডিআর করেছি। জেলা পরিষদে বিশেষ বরাদ্দ এডিপি থেকে আসছে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি এনেছি। এবার জেলা পরিষদ এসএসসি ও এইচএসসির ১৩১ জন শিক্ষার্থীকে ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার বৃত্তি দেবে। কাজের মান খারাপ হওয়ায় আটজন কে শাস্তি দেওয়া হয়। এনসব বহুমাত্রিক কাজের খবর সবারই জানা। তাই কুমিল্লা কর্মদক্ষতায় প্রথম হয়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত