বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যলয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকারী আসামির দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার টাউনহলে এই কর্মসূচি করা হয়। এই কর্মসূর্চিতে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে নিহত সুমাইয়ার ভাই সাইফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
সুমাইয়ার সহপাঠী মন্দিরা দাস বলেন, 'আমরা ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছি—এগুলো করার মূল উদ্দেশ্য হলো সবাইকে স্মরণ করানো যে আমরা ভুলি নাই এবং আমাদের সহপাঠীর হত্যাকাণ্ড গভীরভাবে আমাদের মনে আছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পুলিশ ও প্রশাসনকে জনাতে চাই; যেন তারা দ্রুত ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা নেয়। আমরা নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা দিয়েছি; তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া না পেলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলন চালাবো। এই ঘটনার পর থেকে আমরা গভীরভাবে ট্রমায় আছি—তিন বছর একসাথে ক্লাস করা, পাশাপাশি পরীক্ষা দেওয়া, এসব স্মৃতি আজ শূন্যে পরিণত হয়েছে—এটাই আমাদের জন্য বিশাল শোক ও ব্যথার বিষয়।'
তিনি আরও বলেন, 'পরিবার থেকে পাওয়া সহায়তা আংশিক—ছোট ভাই আমাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। কিন্তু বড় ভাই প্রায় সামনে আসেননি এমনকি স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি, যা আমাদের মধ্যে সন্দেহ ও প্রশ্ন বাড়িয়েছে। আমরা চাই স্পষ্ট ও দ্রুত ন্যায়বিচার হবে। বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কিছু সাড়া দিয়েছে এবং উপাচার্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন, তবুও যদি সময়মতো তাদের জবাবদিহি না ঘটে আমরা চুপ করে থাকব না এবং প্রয়োজন হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।'
একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, 'এতোদিন পরও আমাদের কাছে সুমাইয়াকে কেন হত্যা করা হলো—এটি সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট বার্তা বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। পুলিশ নানা আশ্বাস দিচ্ছে, বলছে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দোষ পেলে ফাঁসিও হবে। তবে বাস্তবে আমরা এখনও কোনো বিচারমূলক অগ্রগতি দেখতে পাননি। পনেরো দিন কেটে গেল—প্রশাসন ও তদন্তের এই ব্যবধান আমাদের অনিশ্চয়তায় রাখছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা দৃশ্যমান ও কার্যকরী পদক্ষেপ চাই। কেবল আশ্বস্ত করার বাক্য নয়। আমরা জানতে চাই এই হত্যাকাণ্ডে শুধুই মোবারকই দায়ী নাকি আরও কেউ জড়িত আছে—তদন্তে কি কী উদঘাটন হয়েছে তা জানতে চাই। আমরা অনিশ্চিততার প্রতিশ্রুতি চাই না। তাড়াতাড়ি নিরপেক্ষ ও স্পষ্ট বিচারের দাবি করছি এবং দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি-মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।'
নিহত সুমাইয়া আফরিনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমার মা ও বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি, ঘটনার মূল আসামি পূর্বেও একই ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলেন এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। কিন্তু তাকে আগে কেন গ্রেফতার করা হয়নি এবং কেন জামিনে বাইরে ছিলো—এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আমার মা ও বোনের হত্যাকারীকে দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।'
তিনি আরও বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আসামি একবার বাড়ি থেকে বের হয়ে পরে আবার ফিরে আসেন। সে কোথায় গিয়েছিলো এবং কী নিয়ে ফিরে এসেছে—এ বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হয়নি। পাশাপাশি ঘটনার পনেরো দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পোস্টমর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি—যা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত রিপোর্টগুলো প্রকাশ করে সত্য উদঘাটন করা হোক এবং অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।'
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা শহরের কালিয়াজুরী এলাকার একটি ভাড়া বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগম। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোবারক হোসেন নামক এক কবিরাজ। পুলিশ জানিয়েছে সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মোবারক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যলয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকারী আসামির দ্রুত বিচার ও ফাঁসির দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার টাউনহলে এই কর্মসূচি করা হয়। এই কর্মসূর্চিতে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে নিহত সুমাইয়ার ভাই সাইফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
সুমাইয়ার সহপাঠী মন্দিরা দাস বলেন, 'আমরা ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছি—এগুলো করার মূল উদ্দেশ্য হলো সবাইকে স্মরণ করানো যে আমরা ভুলি নাই এবং আমাদের সহপাঠীর হত্যাকাণ্ড গভীরভাবে আমাদের মনে আছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পুলিশ ও প্রশাসনকে জনাতে চাই; যেন তারা দ্রুত ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা নেয়। আমরা নির্দিষ্ট একটি সময়সীমা দিয়েছি; তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া না পেলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলন চালাবো। এই ঘটনার পর থেকে আমরা গভীরভাবে ট্রমায় আছি—তিন বছর একসাথে ক্লাস করা, পাশাপাশি পরীক্ষা দেওয়া, এসব স্মৃতি আজ শূন্যে পরিণত হয়েছে—এটাই আমাদের জন্য বিশাল শোক ও ব্যথার বিষয়।'
তিনি আরও বলেন, 'পরিবার থেকে পাওয়া সহায়তা আংশিক—ছোট ভাই আমাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। কিন্তু বড় ভাই প্রায় সামনে আসেননি এমনকি স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি, যা আমাদের মধ্যে সন্দেহ ও প্রশ্ন বাড়িয়েছে। আমরা চাই স্পষ্ট ও দ্রুত ন্যায়বিচার হবে। বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কিছু সাড়া দিয়েছে এবং উপাচার্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন, তবুও যদি সময়মতো তাদের জবাবদিহি না ঘটে আমরা চুপ করে থাকব না এবং প্রয়োজন হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।'
একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, 'এতোদিন পরও আমাদের কাছে সুমাইয়াকে কেন হত্যা করা হলো—এটি সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট বার্তা বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। পুলিশ নানা আশ্বাস দিচ্ছে, বলছে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দোষ পেলে ফাঁসিও হবে। তবে বাস্তবে আমরা এখনও কোনো বিচারমূলক অগ্রগতি দেখতে পাননি। পনেরো দিন কেটে গেল—প্রশাসন ও তদন্তের এই ব্যবধান আমাদের অনিশ্চয়তায় রাখছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা দৃশ্যমান ও কার্যকরী পদক্ষেপ চাই। কেবল আশ্বস্ত করার বাক্য নয়। আমরা জানতে চাই এই হত্যাকাণ্ডে শুধুই মোবারকই দায়ী নাকি আরও কেউ জড়িত আছে—তদন্তে কি কী উদঘাটন হয়েছে তা জানতে চাই। আমরা অনিশ্চিততার প্রতিশ্রুতি চাই না। তাড়াতাড়ি নিরপেক্ষ ও স্পষ্ট বিচারের দাবি করছি এবং দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি-মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।'
নিহত সুমাইয়া আফরিনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমার মা ও বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছি, ঘটনার মূল আসামি পূর্বেও একই ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলেন এবং ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। কিন্তু তাকে আগে কেন গ্রেফতার করা হয়নি এবং কেন জামিনে বাইরে ছিলো—এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, আমার মা ও বোনের হত্যাকারীকে দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।'
তিনি আরও বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আসামি একবার বাড়ি থেকে বের হয়ে পরে আবার ফিরে আসেন। সে কোথায় গিয়েছিলো এবং কী নিয়ে ফিরে এসেছে—এ বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হয়নি। পাশাপাশি ঘটনার পনেরো দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পোস্টমর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি—যা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত রিপোর্টগুলো প্রকাশ করে সত্য উদঘাটন করা হোক এবং অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।'
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা শহরের কালিয়াজুরী এলাকার একটি ভাড়া বাসায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগম। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মোবারক হোসেন নামক এক কবিরাজ। পুলিশ জানিয়েছে সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মোবারক।