• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> কুমিল্লা জেলা
> দেবীদ্বার

২ কেজি বীজ ধান বদলে দিল ভূমিহীন কৃষক রফিকের জীবন

এবিএম আতিকুর রহমান বাশার
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ১১: ৪৫
logo

২ কেজি বীজ ধান বদলে দিল ভূমিহীন কৃষক রফিকের জীবন

এবিএম আতিকুর রহমান বাশার

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৫, ১১: ৪৫
Photo

নিজের কোন জমি ছিল না কৃষক মো. রফিক আহমেদের। পরের জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ৬০ বছর বয়সী সেই অসচ্ছল কৃষক রফিকের জীবনের গল্প বদলে দিয়েছে মাত্র দুই কেজি বীজ ধান।

আজ তিনি স্বাবলম্বী, তবে বাস্তবে ভূমিহীন। কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামে পরের ৬ একর জমি বার্ষিক পত্তনে ধান চাষ করেন। ৩ ফসলি প্রতি বিঘা জমি ১২ হাজার টাকা করে ২০ বিঘা জমি পত্তনে চাষ করেন। দেশ জুড়ে খ্যাতি ‘বীজ সুলতান’ রফিক নামে।

২০০৮ সাল থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রফিক ধান বীজ উৎপাদন শুরু করেন। প্রতি বছরে তিনি ৩ শ থেকে ৩৫০ মণ বীজ ধান উৎপাদন করেন। রফিকের ধানের বীজ দেশের ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটে শোভা পাচ্ছে। কৃষি গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরাও রফিকের কৃষিমাঠ দেখতে আসেন। দেশের বিভিন্ন জেলার বীজ ডিলারদের কাছে তার বীজ খুবই সমাদৃত। বিশেষ করে রংপুর মিঠা পুকুরের বীজ ডিলাররা তাদের কোম্পানির সিলে প্যাকেটজাত করে তার নির্ভেজাল বীজ ধান বিক্রি করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বিনা উপকেন্দ্র, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট এবং আশেপাশের উপজেলা ও জেলার কৃষক রফিকের ধান বীজ সংগ্রহ করে থাকেন।

মূলত বিজ্ঞানীরা তাদের আবিষ্কৃত আধুনিকতম বিভিন্ন ধানের বীজ রফিকের কাছে পাঠান। তিনি এ বীজগুলো কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মাঠ পরীক্ষণ সম্পন্ন করেন। উৎপাদিত ধানের ফলন, রোগবালাই আক্রমণ, অন্যান্য সুবিধা অসুবিধাসহ তথ্য সংগ্রহে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করেন। বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় বাজারজাত হওয়া আধুনিক জাত ব্রি-ধান ১০২ ও ব্রি ধান ১০৮ জাতের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তাছাড়া সম্প্রতি আবিষ্কৃত ব্রি ধান ১০৯ হতে প্রস্তাবিত ব্রি ধান ১১৭ পর্যন্ত ধানের বীজ তার সংরক্ষণে রয়েছে। যে ধানের বীজ দেশের কোথাও সংরক্ষণে নেই।

দেশব্যাপী আলোচিত এ ‘বীজ রফিকের’ কোনো বীজ সংরক্ষণাগার নেই। নিজের ঘরের সামনে এবং আবাদি জমিতে কাচা ভিটির ওপর ইট বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচে বস্তায় ও ড্রামে পুরিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে সংরক্ষণ করেন তিনি। প্রতিবেশী কৃষকের বাড়িতেও বীজ সংরক্ষণ করেন তিনি। শুধু ধান বীজই নয়, তিনি সরিষা, তিল, ভুট্টা, সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন ফসলী বীজ সংরক্ষণ করেন। বীজ রফিকের সংগ্রহে যত বীজ সংরক্ষিত, তত পরিমাণ ধান এ অঞ্চলের বড় ধরনের কোন কৃষকের ঘরে এতো ধান সংরক্ষণে নেই। এক্ষেত্রে রফিকের জন্য সরকারি কোনো সহযোগিতা নেই।

মো. রফিক আহমেদ(৬০) ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার বাথানিয়া গ্রামের প্রয়াত মো. ইউনুছ মিয়ার পুত্র। অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়াও করতে পারেননি। ১৯৭৮ সালে অভাব ঘুচাতে কর্মের সংস্থানে চলে আসেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা আড়িখোলা জুট মিলে। এখানে তিনি শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। চাকরি সুবাদে এলাকার মানুষকে আপন করে নেন তিনি। ১৯৮৮ সালে কাবিলপুর গ্রামের রাজিয়া বেগমকে বিয়েও করেন। এরই মধ্যে ২ ছেলে সন্তানের জনক হন। সংসারের খরচ বেড়ে যায়। দায়-দেনা করে ১৯৯৪ সালে সৌদি আরব, দাম্মাম এবং পাকিস্তানে পাড়ি জমান।

প্রবাস জীবনের ৬ বছর হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে দায় দেনা পরিশোধ করেন। নিজের কাছে কোনো আমানত না রেখে সবই পাঠান স্ত্রীর নামে। ২০০০ সালে দেশে এসে দেখেন তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম পরকীয়ায় জড়িয়ে অন্যের ঘরে সংসার করছেন। সংসারের অভাব দেখিয়ে স্বামী সন্তানদের ফেলে চলে যান রাজিয়া। দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে রফিক বিপাকে পড়েন। এক বেলা খাবারের জোগাড় হলে অন্য বেলা উপোস থাকেন। মায়া দুই ছেলেকে নিয়ে, ভাতের কষ্টের বিবরণ দিতে যেয়ে রফিক অশ্রুসিক্ত হয়ে যান। খাবার জোগাতে পরের ঘরে কাজের সন্ধানে বের হন, কোনো দিন কাজ পান, কোনো দিন থাকেন বেকার। কিন্তু পেটের ক্ষুধা তো আর আবেগ মানে না!

একদিন দেখা হয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ২ কেজি ধানের বীজ দেন রফিককে। ৩০ শতাংশ জমি বাগায় ওই বীজ ধান বপন করেন। শুরু হয় নতুন জীবন। হাড়ভাঙা খাটুনিতে জীবন বদলাতে থাকেন। অন্যের এক টুকরো জমিতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি দোচালা টিনের ছাউনি তোলেন। থাকার ঠিকানা হলো। এবার সন্তানদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হলেন। ২০০১ সালে ঝরনা বেগমকে বিয়ে নতুন করে সংসার শুরু করেন। পূর্বের সংসারের দুই ছেলে সন্তানের বশির আহমেদকে (৩২) মালদ্বীপ প্রবাসে পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয় ছেলে নাজির আহমেদ (২৮) ডেন্টাল সার্জন হন। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। নতুন সংসারেও ৩ ছেলে সন্তান সামিউল হাসান(১৮), অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শেষে ট্রাক চালক। আব্দুল্লাহ সৈকত(১৪) পিতার কৃষিকাজে সহায়তা করেন। ছোট ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক(১২) পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

কৃষক রফিক বলেন, ক্ষুধার যন্ত্রণা আজ আমাকে অতদূর এনেছে। তাই দেশের মানুষের ক্ষুধা নিবারণের কাজ করে যেতে চাই। আমাকে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বীজ ধান উৎপাদন এবং বীজ সংরক্ষণ করে আসছি। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ এবং পরামর্শ পেয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাইনি। সাবেক মন্ত্রী এবিএম গোলাম মোস্তফা সাহেব এবং বিনাধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট পেয়েছি আর বর্তমান দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায়ের ভালোবাসা পেয়েছি।

এ ব্যপারে দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় জানান, রফিক আহমেদ একজন প্রগতিশীল ও আদর্শ কৃষক। আধুনিক ধানের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে উনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় উনাকে বীজ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। উনি শুধু দেবীদ্বার নয়, বাংলাদেশের গর্ব। সুলতানপুর ইউনিয়নে বাড়ি হওয়ায় এর সাথে মিলিয়ে উনাকে আমরা ‘বীজ সুলতান’ হিসেবে জানি।

Thumbnail image

নিজের কোন জমি ছিল না কৃষক মো. রফিক আহমেদের। পরের জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ৬০ বছর বয়সী সেই অসচ্ছল কৃষক রফিকের জীবনের গল্প বদলে দিয়েছে মাত্র দুই কেজি বীজ ধান।

আজ তিনি স্বাবলম্বী, তবে বাস্তবে ভূমিহীন। কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামে পরের ৬ একর জমি বার্ষিক পত্তনে ধান চাষ করেন। ৩ ফসলি প্রতি বিঘা জমি ১২ হাজার টাকা করে ২০ বিঘা জমি পত্তনে চাষ করেন। দেশ জুড়ে খ্যাতি ‘বীজ সুলতান’ রফিক নামে।

২০০৮ সাল থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রফিক ধান বীজ উৎপাদন শুরু করেন। প্রতি বছরে তিনি ৩ শ থেকে ৩৫০ মণ বীজ ধান উৎপাদন করেন। রফিকের ধানের বীজ দেশের ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটে শোভা পাচ্ছে। কৃষি গবেষণাগারের বিজ্ঞানীরাও রফিকের কৃষিমাঠ দেখতে আসেন। দেশের বিভিন্ন জেলার বীজ ডিলারদের কাছে তার বীজ খুবই সমাদৃত। বিশেষ করে রংপুর মিঠা পুকুরের বীজ ডিলাররা তাদের কোম্পানির সিলে প্যাকেটজাত করে তার নির্ভেজাল বীজ ধান বিক্রি করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বিনা উপকেন্দ্র, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট এবং আশেপাশের উপজেলা ও জেলার কৃষক রফিকের ধান বীজ সংগ্রহ করে থাকেন।

মূলত বিজ্ঞানীরা তাদের আবিষ্কৃত আধুনিকতম বিভিন্ন ধানের বীজ রফিকের কাছে পাঠান। তিনি এ বীজগুলো কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মাঠ পরীক্ষণ সম্পন্ন করেন। উৎপাদিত ধানের ফলন, রোগবালাই আক্রমণ, অন্যান্য সুবিধা অসুবিধাসহ তথ্য সংগ্রহে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করেন। বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় বাজারজাত হওয়া আধুনিক জাত ব্রি-ধান ১০২ ও ব্রি ধান ১০৮ জাতের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তাছাড়া সম্প্রতি আবিষ্কৃত ব্রি ধান ১০৯ হতে প্রস্তাবিত ব্রি ধান ১১৭ পর্যন্ত ধানের বীজ তার সংরক্ষণে রয়েছে। যে ধানের বীজ দেশের কোথাও সংরক্ষণে নেই।

দেশব্যাপী আলোচিত এ ‘বীজ রফিকের’ কোনো বীজ সংরক্ষণাগার নেই। নিজের ঘরের সামনে এবং আবাদি জমিতে কাচা ভিটির ওপর ইট বিছিয়ে খোলা আকাশের নিচে বস্তায় ও ড্রামে পুরিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে সংরক্ষণ করেন তিনি। প্রতিবেশী কৃষকের বাড়িতেও বীজ সংরক্ষণ করেন তিনি। শুধু ধান বীজই নয়, তিনি সরিষা, তিল, ভুট্টা, সূর্যমুখীসহ বিভিন্ন ফসলী বীজ সংরক্ষণ করেন। বীজ রফিকের সংগ্রহে যত বীজ সংরক্ষিত, তত পরিমাণ ধান এ অঞ্চলের বড় ধরনের কোন কৃষকের ঘরে এতো ধান সংরক্ষণে নেই। এক্ষেত্রে রফিকের জন্য সরকারি কোনো সহযোগিতা নেই।

মো. রফিক আহমেদ(৬০) ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার বাথানিয়া গ্রামের প্রয়াত মো. ইউনুছ মিয়ার পুত্র। অভাবের কারণে অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়াও করতে পারেননি। ১৯৭৮ সালে অভাব ঘুচাতে কর্মের সংস্থানে চলে আসেন কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা আড়িখোলা জুট মিলে। এখানে তিনি শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। চাকরি সুবাদে এলাকার মানুষকে আপন করে নেন তিনি। ১৯৮৮ সালে কাবিলপুর গ্রামের রাজিয়া বেগমকে বিয়েও করেন। এরই মধ্যে ২ ছেলে সন্তানের জনক হন। সংসারের খরচ বেড়ে যায়। দায়-দেনা করে ১৯৯৪ সালে সৌদি আরব, দাম্মাম এবং পাকিস্তানে পাড়ি জমান।

প্রবাস জীবনের ৬ বছর হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে দায় দেনা পরিশোধ করেন। নিজের কাছে কোনো আমানত না রেখে সবই পাঠান স্ত্রীর নামে। ২০০০ সালে দেশে এসে দেখেন তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম পরকীয়ায় জড়িয়ে অন্যের ঘরে সংসার করছেন। সংসারের অভাব দেখিয়ে স্বামী সন্তানদের ফেলে চলে যান রাজিয়া। দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে রফিক বিপাকে পড়েন। এক বেলা খাবারের জোগাড় হলে অন্য বেলা উপোস থাকেন। মায়া দুই ছেলেকে নিয়ে, ভাতের কষ্টের বিবরণ দিতে যেয়ে রফিক অশ্রুসিক্ত হয়ে যান। খাবার জোগাতে পরের ঘরে কাজের সন্ধানে বের হন, কোনো দিন কাজ পান, কোনো দিন থাকেন বেকার। কিন্তু পেটের ক্ষুধা তো আর আবেগ মানে না!

একদিন দেখা হয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ২ কেজি ধানের বীজ দেন রফিককে। ৩০ শতাংশ জমি বাগায় ওই বীজ ধান বপন করেন। শুরু হয় নতুন জীবন। হাড়ভাঙা খাটুনিতে জীবন বদলাতে থাকেন। অন্যের এক টুকরো জমিতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি দোচালা টিনের ছাউনি তোলেন। থাকার ঠিকানা হলো। এবার সন্তানদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হলেন। ২০০১ সালে ঝরনা বেগমকে বিয়ে নতুন করে সংসার শুরু করেন। পূর্বের সংসারের দুই ছেলে সন্তানের বশির আহমেদকে (৩২) মালদ্বীপ প্রবাসে পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয় ছেলে নাজির আহমেদ (২৮) ডেন্টাল সার্জন হন। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। নতুন সংসারেও ৩ ছেলে সন্তান সামিউল হাসান(১৮), অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া শেষে ট্রাক চালক। আব্দুল্লাহ সৈকত(১৪) পিতার কৃষিকাজে সহায়তা করেন। ছোট ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক(১২) পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

কৃষক রফিক বলেন, ক্ষুধার যন্ত্রণা আজ আমাকে অতদূর এনেছে। তাই দেশের মানুষের ক্ষুধা নিবারণের কাজ করে যেতে চাই। আমাকে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বীজ ধান উৎপাদন এবং বীজ সংরক্ষণ করে আসছি। কৃষি বিভাগ থেকে বীজ এবং পরামর্শ পেয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাইনি। সাবেক মন্ত্রী এবিএম গোলাম মোস্তফা সাহেব এবং বিনাধান গবেষণা কেন্দ্র থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট পেয়েছি আর বর্তমান দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায়ের ভালোবাসা পেয়েছি।

এ ব্যপারে দেবীদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় জানান, রফিক আহমেদ একজন প্রগতিশীল ও আদর্শ কৃষক। আধুনিক ধানের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণে উনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে পার্টনার প্রোগ্রামের আওতায় উনাকে বীজ উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। উনি শুধু দেবীদ্বার নয়, বাংলাদেশের গর্ব। সুলতানপুর ইউনিয়নে বাড়ি হওয়ায় এর সাথে মিলিয়ে উনাকে আমরা ‘বীজ সুলতান’ হিসেবে জানি।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন

২

মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ডে চার আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

৩

বরুড়ায় দিঘীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু

৪

কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুই আসামী গ্রেপ্তার

৫

ব্রাহ্মণপাড়ায় কীটনাশক পানে আত্মহত্যা

সম্পর্কিত

র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন

র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ অভিযুক্ত ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন

৭ ঘণ্টা আগে
মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ডে চার আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ডে চার আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

৮ ঘণ্টা আগে
বরুড়ায় দিঘীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই  বোনের মৃত্যু

বরুড়ায় দিঘীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মৃত্যু

৯ ঘণ্টা আগে
কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুই আসামী গ্রেপ্তার

কুমিল্লার তিতাসে হাত-পা বেঁধে রাজমিস্ত্রিকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুই আসামী গ্রেপ্তার

১০ ঘণ্টা আগে