মুরাদনগরে সূর্যমুখী চাষের অপার সম্ভাবনা

মুরাদনগর প্রতিনিধি
Thumbnail image

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সূর্যমুখী চাষের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের মাঝে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় সূর্যমুখীর দিকে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। কৃষকদের আরো উদ্বুব্ধ করতে তাদের মাঝে বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার বিতরণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। তেল জাতীয় অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখীর চাষ অনেক সহজলভ্য ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা এতে উৎসাহিত হয়ে উঠেবেন বলে কৃষি অধিদপ্তর মনে করছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখী চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে উপজেলার বাবুটিপাড়া, জাহাপুর, আন্দিকুট, কামাল্লা, মুরাদনগর সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ২০ জন কৃষককে ১ কেজি করে বীজ আর ২০ কেজি করে সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। গত বছর বিভিন্ন ইউনিয়নের ৬ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে ৯ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখী চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আর উৎপাদিত বীজ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ফুল থেকে বীজ ঘরে তোলা যায়।

মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের নাগের কান্দি গ্রামের কৃষক বাবুল বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমি এই প্রথম ২৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। জমিতে এসে অনেক মানুষ ছবি তুলে বিনোদন নিচ্ছেন। তা দেখে আমার খুবই আনন্দ লাগে! অনেকে আবার এটি চাষ করার পরামর্শও নিচ্ছেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুফি আহমেদ বলেন, সূর্যমুখী ফুল চাষে রোগ বালাই কম। ফলন ভালো হওয়ায় স্বল্প খরচে অধিক লাভ। এছাড়াও এই ফুল থেকে উৎকৃষ্ট মানের তেল বীজ পাওয়া যায়। সূর্যমুখীর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। সেই সাথে এই তেল বিভিন্ন অসুখের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে বলে জানান তিনি।

মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, সূর্যমুখীর গুণাগুণ অন্য ফসলের তুলনায় বেশি। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য বেশ উপযোগী। সূর্যমুখী চাষের বিস্তার ও জনপ্রিয়তার উদ্দেশ্যে স্থানীয় কৃষি বিভাগ নানাভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখীর বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরিষা-সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এখানে সূর্যমূখীর বাজার তৈরি করতে পারলে কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখী চাষে আরো আগ্রহী করা যাবে। বিশেষ করে সমবায় ভিত্তিক চাষাবাদ করা হলে সহজে বাজারজাত করা সম্ভব। কোন কৃষক যদি সূর্যমুখী চাষ করতে আগ্রহী হয় তাহলে অফিসে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর যোগাযোগ করলে আমরা তাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করব।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত