২৯ বছর পর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে চরম ফল বিপর্যয়

সারাদেশে সর্বনিম্ন পাসের হার কুমিল্লায়

গাজীউল হক সোহাগ
Thumbnail image

১৯৯৬ সালে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট(এইচএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৩০ দশমিক ২৫। এ বছর পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬। ২৯ বছর পর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে চরম ফল বিপর্যয় হলো। সারাদেশের সব বোর্ডের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার কুমিল্লায়। অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী ফেল। ইংরেজিতে ফেল করেছে ৩৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী। ইংরেজির ধাক্কায় এমন ফল বিপর্যয়। এছাড়া যুক্তিবিদ্যা, হিসাববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতেও ধরা খেয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে এবারও পাসের হার ও জিপিএ ৫ এ এগিয়ে মেয়েরা । বোর্ডের অধিভুক্ত ছয় জেলার মধ্যে পাসের হার ও জিপিএ৫ শীর্ষে কুমিল্লা জেলা , সর্বনিম্ন পাসের হার নোয়াখালী জেলায়। উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ পাসের হার বুড়িচং উপজেলায় ও সর্বনিম্ন নাঙ্গলকোট উপজেলায়। সরকারি কলেজের মধ্যে পাসের হার বেশি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে। বোর্ডে বেশি জিপিএ ৫ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে। টানা ১৪ বার শতভাগ পাস করেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সোনার বাংলা কলেজ।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলাম ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন স্বাক্ষরিত ফলাফল বিবরণীতে উল্লেখ আছে, ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছিল ১ লাখ ১ হাজার ৯৯৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯৯ হাজার ৫৭৬ জন। বহিষ্কার হয় ৬৬ জন। পাস করেছে ৪৮ হাজার ৬৫৭ জন। বোর্ডেও মোট পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬। মেয়েদের পাসের হার ৫৩ দশমিক ৩৭, ছেলেদের ৪২ দশমিক ৭০। বিজ্ঞানে পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৪। এর মধ্যে মেয়েদের পাসের হার ৬৫ দশমিক ৮৭, ছেলেদের ৫৮ দশমিক ৬২। মানবিকে পাসের হার ৪৪ দশমিক ০৮। মেয়েদের পাসের হার ৪৮ দশমিক ২৯ ও ছেলেদের ৩৫ দশমিক ৮৭। ব্যবসায় শিক্ষায় পাসের হার ৪৩ দশমিক ৯০। মেয়েদের পাসের হার ৫১ দশমিক ৫২, ছেলেদের ৩৭ দশমিক ৪৭।

জিপিএ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৭০৭ জন। এর মধ্যে মেয়ে ১ হাজার ৭৪৯ জন, ছেলে ৯৫৮ জন। বিজ্ঞানে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৭৫২ জন। এর মধ্যে মেয়ে ৯৬৭ জন ও ছেলে ৭৮৩ জন। মানবিকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৬৬ জন। এর মধ্যে মেয়ে ৪৮৮ জন ও ছেলে ৭৮ জন। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৮৯ জন। এর মধ্যে মেয়ে ২৯৪ জন ও ছেলে ৯৫ জন ।

শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহলের ভাষ্য, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ও মেয়েরা কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে ভালো ফল করায় পাসের হার ৫০ শতাংশের কাছাকাছি আছে। অন্যথায় সেটি আরও পেছনে থাকতো।

২০২৪ সালে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ১৫। এ বছর পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬। এবার পাসের হার কমেছে ২২ দশমিক ২৯। গত বছর জিপিএ৫ পেয়েছিল ৭ হাজার ৯২২ জন, এবার পেয়েছে ২ হাজার ৭০৭ জন। জিপিএ৫ কমেছে ৫ হাজার ২১৫ টি।

কুমিল্লা বোর্ডে বুড়িচং উপজেলার ১০ টি কলেজ থেকে ২ হাজার ৩০৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ১ হাজার ৮৬৬ জন। পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৫। জিপিএ৫ পেয়েছে ২৩২ জন। শতভাগ পাস করা কলেজ সোনার বাংলা। এ কলেজ থেকে ৩৭১ জন পরীক্ষা দিয়ে সবাই পাস করেছে । জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৪৮ জন। নাঙ্গলকোটে ১১ কলেজ থেকে ১ হাজার ৬৯১ জন পরীক্ষা দিয়ে ৩৪৭ জন পাস করেছে। পাসের হার ২০ দশমিক ৫২। জিপিএ৫ পেয়েছে তিনজন।

কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন বলেন, এবার নকলমুক্ত সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা নিয়েছি। কোন ভেন্যু কেন্দ্র ছিল না। খাতাও নমনীয়ভাবে দেখা হয়নি। যা লিখেছে সঠিক তার ওপর নম্বর দেওয়া হয়।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত