নারীকে ছোট করে দেখার সময় এখন আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল। গত ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি এ পদে যোগদান করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে তিনিই প্রথম প্রো-ভিসি হলেন। মাসুদা কামাল ২০০৭ সালের ৫ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ১২ বছর বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের প্রাধ্যক্ষ ছিলেন। দায়িত্ব পালন করেছেন বিভিন্ন কমিটিতে। তাঁর সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় , নারী অধিকার, নারীর প্রতি সহিংসতা, নারীদের এগিয়ে চলাসহ নানা বিষয়ে কথা হয়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমার শহর সম্পাদক গাজীউল হক সোহাগ।

আমার শহর: বর্তমানে পড়াশোনা ও চাকরিক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ভালো করছে। কেন মেয়েরা ভালো করছে বলে মনে করছেন?

মাসুদা কামাল: দেখুন, সারাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রচুর মেয়ে ভর্তি হ”েছ। চাকরিক্ষেত্রেও দেখেন। মেয়েরা এখন সরকারের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা পা”েছ। নিয়মিত অধ্যয়ন করছে। গ্রামের ছেলেরা পড়াশোনায় পিছিয়ে আছে। গ্রামের ছেলেরা কৃষিকাজে পরিবারকে সাহায্য করে। অহেতুক আড্ডাও দি”েছ। গ্রাম আর শহর মিলেই তো তারতম্য দেখতে হবে। ওই কারণে মেয়েরা ভালো করছে।

আমার শহর: বিভিন্ন পদে নারী-পুরুষ বৈষম্য আছে। এটাকে কিভাবে দেখছেন?

মাসুদা কামাল: এখন আর নারীদের আগের মতো বৈষম্যের অব¯’া নেই। সমানভাবে সমানতালে নারী এগিয়ে যা”েছ। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও কর্মহীন নারী যাঁরা ,তাঁরা নিজ পরিবারের লোকদের কাছে প্রথমে বৈষম্যের শিকার হ”েছন। এরপর বিভিন্ন পদে কেউ কেউ পিছিয়ে যান। আমি মনে করি, গড়ে সমান তালেই আছি আমরা।

আমার শহর: এখন আর নারী কোটা থাকার দরকার আছে কি না?

মাসুদা কামাল: সংস্কার কমিশন তো কোটা উঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব ও সুপারিশ করেছে। আমি তা সমর্থন করি।

আমার শহর: জাতীয় সংসদে নারী কোটা থাকা দরকার কি না?

মাসুদা কামাল: আমি তো মনে করি না, কোন ধরনের কোটা থাকা দরকার আছে। যে নারী রাজনীতি করেন, তিনি পুরুষদের পাশে থেকে, প্রতিযোগিতা করে, শ্লোগান দিয়ে, বক্তৃতা দিয়ে ওপরে উঠেন। নেত্রী হন। দলীয় মনোনয়ন পান। জনপ্রতিনিধি হন।

আমার শহর: এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার নেতৃত্বে লোক প্রশাসন বিভাগ চালু হয়। শুরুটা কেমন ছিল?

মাসুদা কামাল: তৎকালীন উপাচার্য আমাকে ও ফারহানা আফরোজকে নিয়োগ দেওয়ার সময় মজা করে বলেছিলেন তোমরা দুইজনই নারী। বিভাগ চালাতে পারবা নাকি। আমি বললাম স্যার পারব। আমি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ছিলাম। সেখান থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি। দুইজন দিয়ে লোক প্রশাসন বিভাগ চালু হয়। দুইজনই নারী। আমি বলি, বিশ্বাস করি- নারীকে ছোট করে দেখার সময় এখন আর নেই।

আমার শহর: আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসন সংকট মারাত্মক। উত্তরণের পথ কি?

মাসুদা কামাল: সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সংকট কমবেশি আছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে বড় আকারের হল নির্মাণ হ”েছ তখন সংকট অনেকটা কমে আসবে।

আমার শহর: নারী দিবসে নারীদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?

মাসুদা কামাল: নারী দিবসে সকল নারীর জন্য শুভে”ছা।

আমার শহর: আপনাকে ধন্যবাদ।

মাসুদা কামাল: আমার শহরের পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদেরও ধন্যবাদ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত