তিন তহবিল থেকে টাকা এনে কুমিল্লায় হচ্ছে ডিসি পার্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image

কুমিল্লা শহরে স্বাধীনতার পর অন্তত ৮০০ পুকুর ছিল। অবকাঠমো নির্মাণ ও জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস করে গত ২৩ বছরে বহু জলাধার ও পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এখন এই শহরে পুকুরের সংখ্যা ২০০ এর নিচে। এ অবস্থায় কুমিল্লা নগরের ছোটরা মৌজায় ১৯ একর খাস জমিতে ( বোটানিকেল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা) কাজ চলছে ডিসি পার্কের। এতে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা এনে ওই পার্ক করা হচ্ছে। গত ৫ অক্টোবর বিকেল পাঁচটায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে এ উপলক্ষে এক অবহিতকরণ সভা হয়। এতে জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার কাজের অগ্রগতি অবহিত করেন গণমাধ্যমকর্মীদের। পরে তিনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে পার্ক এলাকা পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কুমিল্লার নাগরিক সমাজ।

জেলা প্রশাসকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত সহিষ্ণু জলধারার খনন ও সংরক্ষণ প্রকল্প’ সম্পর্কে অবহিতকরণ ও মতবিনিময় সভা গত রোববার বিকেল তিনটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে হয়। এতে মতবিনিময় ও অবহিতকরণ সভার মাধ্যমে পার্কেও বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেছেন মতবিনিময় সভায় সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম ও স্থপতি তানভীর আহমেদ।

জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী কুমিল্লা শহরে ৮০০ এর মতো পুকুর ছিল, যা বর্তমানে ২০০ এর নিচে। অনুসন্ধানে দেখা যায় বিগত ২৩ বছরে শহরের অনেক পুকুর জলাধার ভরাট করে অবকাঠামো নির্মান করে এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে। যান্ত্রিক এ শহরের মধ্যে শ্বাস ফেলার জায়গাটুকু নেই। শিশুদের জন্য পার্ক করাকে মাথায় রেখে পতিত জমিতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ছোটরা এলাকার বোটানিকেল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানার স্থানেই ওই পার্ক হচ্ছে। ১৯ একর পতিত খাস জমিতে ওই পার্ক হচ্ছে। সেই বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে ওই পতিত জমিতে পার্ক, লেকসহ কিছু বিনোদনমূলক রাইড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

প্রকল্পের মধ্যে পয়ঃনিস্কাশনের জন্য খালের ব্যবস্থা থাকবে। ঝিলের আদলে পদ্ম পুকুর থাকবে, যেখানে নানা ধরনের পদ্ম থাকবে। বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ রোপন করা হবে। ১৪০ ফুট উঁচু ফেরিস হুইল থাকবে। লেকের মধ্যে দুটো ঝুলন্ত ব্রীজ থাকবে। ফ্লাওয়ার জুন থাকবে। খেলার মাঠ থাকবে। ৩ কিলোমিটার হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে থাকবে। এছাড়াও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক বলেন, ১৯ একরের মধ্যে ১২ একর এখন ২০ ফুট খনন করে আশেপাশের পানি নিষ্কাশন হবে,। সাত একরে অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ হবে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের পরিবেশবান্ধব সহায়তা থেকে ১০ কোটি টাকা পরিবেশবান্ধব সহায়তা। সিটি করপোরেশন থেকে সাড়ে ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ ও জেলা পরিষদ থেকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নালা ও খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত