কুমিল্লার আদালত চত্বর যেন বাজার ক্ষোভ আইনজীবীদের

Thumbnail image

কেউ বিক্রি করছেন মাছ ধরার জাল। কেউ বিক্রি করছেন জুতা। কেউবা তৈরি করছেন ঝালমুড়ি। আর পাশেই অটোরিকশা চালকেরা ডাকছেন কান্দিরপাড়, ব্রিজ-জাঙ্গাইল্লা। এটি কোন সড়কের চিত্র নয়। প্রতিনিয়ত এমন চিত্র দেখা যায় কুমিল্লার আদালত ক্যাম্পাসে। বহিরাগত, হকার ও পাবলিক পরিবহনের অবাধ প্রবেশ আদালত ভবনকে যেমন অনিরাপদ করছে তেমনি আদালতের কার্যক্রমে ভোগান্তিতে পড়েন আইনজীবীরা।

কুমিল্লার আদালত চত্ত্বর সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আদালত চত্বরের ফটক বন্ধ। কিন্তু ভেতরে আছে ভ্যানে ও ছাদ খোলা অটোরিকশা ও হকাররা। ইঁদুর মারা বিষ-তেলাপোকা মারা বিষ থেকে সাদা শার্ট, চা-বিস্কুট, কাটা পেঁপে-শশা-আনারস, প্রেসার-ডায়াবেটিস মাপার স্বাস্থ্যকর্মী, মোবাইল কোম্পানির সিম নিবন্ধন, মাছ ধরার জাল, জুতা সেলাই করার মুচি, তরমুজ বিক্রেতা, ভাত বিক্রেতা, বিকাশ ব্যবসায়ী কী নেই যা আদালত ক্যাম্পাসের ভেতরে নেই! সবই পাওয়া যাচ্ছে আদালত ক্যাম্পাসের ভেতরেই।

গুণে দেখা গেছে গত বুধবার, জুতা পলিশ, চায়ের দোকান, ফল বিক্রেতা, বিভিন্ন ফলের দোকান, ঝাল মুড়ি, বাদাম, বিড়ি-সিগারেট বিক্রেতাসহ ৪৩জন হকার আদালত ক্যাম্পাসের ভেতরে কোনো বাধা ছাড়াই অবাধে বিচরণ করছেন। তাদের ক্রেতা হচ্ছে আদালতের আইনজীবী, সেবাগ্রহীতা ও আদালতের কর্মরতরা।

আদালতের আইনজীবী ভবনের গা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ১০টির মতো স্থায়ী দোকান। সেগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ভাত থেকে শুরু করে নাশতা, বিড়ি-সিগারেট ও নানান ধরনের খাবার ও আদালতের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস। এসব দোকানের ক্রেতা আইনজীবী ও সেবাগ্রহীতারা। আবার অনেকে অস্থায়ী দোকান থেকে স্থায়ী আসন গেঁড়ে বসেছেন। এসব দোকানে আদালতের সেবা গ্রহীতার পাশাপাশি আসে বহিরাগতরাও। আর এ কারণেই আদালতের বিচারক, আসামি, বিচারপ্রার্থী মানুষদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

কুমিল্লার আদালতের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, হকাররা আদালত চত্বরকে মনে করে বাজার। কিন্তু আমরা চাই নিরাপদ আদালত চত্বর। যেন সেবা নিতে এসে কেউ ভোগান্তির শিকার না হয়। প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতি চাইলে এটা সম্ভব।

কুমিল্লা আদালতের সিনিয়র আইনজীবী ইয়াকুব আলী বলেন, আইনজীবীরা এসব কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে। এখানে তিন স্তরের নিরাপত্তার বিষয় থাকে। যেমন, জেলা ও দায়রাজজ, আইনজীবী সমিতি ও পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু আমরা দেখি পুলিশ ফটকে দাঁড়িয়েই থাকে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয় না। যে কারণে অবাধে প্রবেশ করে হকাররা।

আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া বলেন, আইনজীবী সমিতি ঘেঁষা দোকানের কথা আমি জানি না। এখানে আদালতের স্টাফদের জন্য খাবার এনে বিক্রি করা হয়। আর আইনজীবীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা মিটিং করেছি। এই বিষয়ে আমরা সচেতন।

কুমিল্লার আদালত পুলিশের পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা কাজ করছি। হকার প্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু তার বিভিন্ন উপায়ে ঢুকে যায়। আগে অনেক হকার ঢুকতো। আমরা কয়েকমাস আগেই শক্তভাবে ব্যবস্থা নেয়ার কারণে এখন কম প্রবেশ করে।

এসময় তিনি বলেন, হকারগুলো গরিব। এরা বের করে দিতে গেলে কান্নাকাটি করে। আমরা তারপরেও কাজ করছি। হকার প্রবেশে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত