ফাটল ধরেছে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনে

Thumbnail image

কুমিল্লা জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এর অনেক অংশেই ফাটল ধরেছে। ভবনের নিচতলার বারান্দার মাঝখানের পুরো অংশই দেবে গেছে। পিলারের গোড়ায় গোড়ায় ফাটল ধরে তা অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এই ভবনেই সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজের খাস কামরা। তবে এসব কিছুর পরেও গত তিন বছরে একবারও ব্যবস্থা নেননি আদালতের কর্মকর্তারা। এতে ঝুঁকিতে আছেন বিচারক, আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীসহ আদালতে আসা ব্যক্তিরা।

সোমবার সরেজমিনে কুমিল্লা আদালত ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান ফটকের সামনের দাঁড়িয়ে আছে আশির দশকের চারতলা ভবনটি। ভবনে আছে আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজের খাস কামরাসহ গুরুত্বপূর্ণ এজলাস।

আদালত ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পশ্চিম কোনায় চোখ আটকাবে ভবনের একটি বড় ফাটলে। সামনে এগিয়ে বারান্দায় ঢুকলে চোখে পড়বে টাইলসসহ বারান্দার মাঝ বরাবর অনেকটাই দেবে গেছে। বারান্দার পিলারগুলোতে তাকালে আঁতকে উঠবে যে কেউ। পিলার থেকে বারান্দার ফ্লোর অনেকটাই বিচ্ছিন্ন।

নিচতলার হাতের বাম পাশে কয়েকটি কক্ষ যেতেই নামাজ পড়ার স্থান। এই অস্থায়ী মসজিদের ভেতরের অবস্থা আরও জরাজীর্ণ। মসজিদের মাঝখানের কিছু অংশ কয়েক ইঞ্চি দেবে গেছে। ছাদের অংশে কয়েক ফুট লম্বা ১০টির বেশি ফাটল। একই অবস্থা খাবারের ক্যান্টিনেও।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও কুমিল্লা জজ কোর্টের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মাযহারী বলেন, গত পাঁচ থেকে সাত বছর এমন বেহাল দশা দেখছি। আদালতের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কেন সংস্কার করা হয়না জানি না। আমরা নামাজ ও খাওয়ার ক্যান্টিনে যেতে হয় এই বারান্দা দিয়ে। প্রতিদিন দেখি। এখন ভয়টাও স্বাভাবিক হয়ে গেছে। জেলার বাইরে থেকেও মানুষ আসেন। তারাও এসব নিয়ে কানাঘুঁষা করেন। এভাবে ফেলে না রেখে সংস্কার করা উচিত।

কুমিল্লার আদালতের সিনিয়র আইনজীবী আলী আক্কাস বলেন, এই ভবন আমাদের সামনে দিয়ে হয়েছে। যারা এই ভবন করেছে তারা বলতে পারবে কি করেছে। এত দ্রুুত কেন এটাতে ফাটল? কেন দেবে গেল তা তারাই বলতে পারবে। তবে এটা সত্যি যে ভবনটা ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় ছোটখাটো কোন ভূমিকম্প এই ভবন নিতে পারবে না। দুর্ঘটনা ঘটা একেবারেই স্বাভাবিক।

এদিকে নাজুক অবস্থা কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নানের কক্ষে। এই কর্মকর্তার কক্ষের ডানপাশের দেয়ালে ফাটল। পেছনের রেকর্ড রাখার রুমে বৃষ্টি হলেই প্রবেশ করে পানি। এতে একাধিকবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি ভিজে নষ্ট হয়ে যায়।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান বলেন, মাত্র দুমাস হলো এসেছি। এই সমস্যা নাকি অনেক দিন আগে থেকে। আমি এখনও লিখিত কোন আবেদন পাঠাইনি। এটা নেজারত বিভাগের কাজ। তবে এটা সত্য ঝুঁকি নিয়েই কাজ করি আমরা।

কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, যারা কাজ করেছে নিশ্চই তারা গাফিলতি করেছে। নাহয় এত দ্রুত কি কোন ভবনে ফাটল ধরে। এটা নিয়ে জজ সাহেব সরাসরি ব্যবস্থা নেবেন। কবে মসজিদের কাজ করার জন্য আমাদের সমিতির ফান্ড থেকে টাকা দিয়েছি। আমি জানি না মেরামত করলেও এগুলো ঠিক হবে কি না। কারণ মাঝখানে অনেক অংশ দেবে গেছে। ফাটলও বড় বড়।

এ সময় তিনি বলেন, এই ভবনে আমিও বসি। ছোট একটা ভূমিকম্প হলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা আছে এখানে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। দেখি কি হয়।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত