চৌদ্দগ্রামে সওজের জায়গায় দুই যুবলীগ নেতার মার্কেট

চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধি
Thumbnail image

সড়ক ও জনপথের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করেছেন যুবলীগের নেতারা। জামানত বাবদ হাতিয়ে নিয়েছেন অর্ধ কোটি টাকা। প্রতি মাসে ভাড়া নেন অর্ধলাখ টাকারও বেশি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্মিত 'পৌর মার্কেট' নাম দেয়া সেই মার্কেট থেকে এখনো নিয়মিত ভাড়া নেন তারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় এ মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক অইন অনুযায়ী মহাসড়কের ৩৩ মিটারের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বেআইনি হলেও, তৎকালীন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নীরবতায় নিয়ম ভেঙে এই মার্কেট নির্মাণ করেন যুবলীগ নেতারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের সময় চট্টগ্রামমুখী লেনের চৌদ্দগ্রাম বাজারের পুরাতন ইউপি ভবনের পাশের খালি জায়গা ভরাট করা হয়। তারপর সেখানে (বর্তমানে নির্মাণাধীন পৌর মার্কেটের পাশে) দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেন তৎকালীন পৌর মেয়র মিজানুর রহমানের লোকজন। স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রথমদিকে দোকানঘর থেকে ভাড়া নিতেন তৎকালীন পৌর মেয়রের লোকেরা। এরপর আরেক আওয়ামী লীগ নেতা মীর হোসেন মীরু মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সেখানে আরো দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়। বর্তমানে সেখানে হার্ডওয়্যার, স্যানেটারি, চা দোকানসহ ছোটবড় ৯টি দোকান রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি জানান, প্রতি মাসের ৫ তারিখে ভাড়া নেন পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম শাহিন। ছোট দোকানগুলো থেকে ৫ লাখ ও বড় দোকান থেকে আরো বেশি জামানত বাবদ আদায় করা হয়। বড় ছোট ভেদে ৫ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হয়।

ভাড়াটিয়া ও স্থানীয়রা জানায়, দুই মহাসড়কের লিংক রোডের পাশে দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেন সাবেক পৌর মেয়র মীর হোসেন মীরুর আত্মীয় সাইফুল। তারপর পেছন দিকে নতুন আরো কয়েকটি দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেন তৎকালীন কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম শাহীন। সেখানে একটি রুম নিজ অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন শাহীন। তবে রহিম স্যানেটারির মালিক বলেন, তিনি কাউকে জামানত দেননি, এবং ভাড়াও দেন না।

এ বিষয়ে সামনের অংশের ভাড়া আদায় করা সাবেক মেয়রের আত্মীয় যুবলীগ নেতা সাইফুল জানান, এই জায়গা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বৈধ সকল কাগজাদি রয়েছে। তবে তার বিপরীতে পৌর ভূমি সূত্র বলছে, লক্ষীপুর মৌজায় ৪ নং দাগে রফিক উদ্দিন সিদ্দিকীর চৌদ্দগ্রাম কমার্শিয়াল সেন্টার। এর পূর্ব পাশে সওজের ২২ নং দাগ। নকশা অনুযায়ী এখানে অন্য কোনো দাগ বা ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা নেই।

আরেক অংশের ভাড়া আদায়কারী সাবেক কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম শাহীন বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, ইত:পূর্বে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করে আসছে। যেহেতু এটা সড়ক ও জনপথের জায়গা, তারা যদি উচ্ছেদে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চায় উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

মার্কেটের বিষয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা জানান, এ বিষয়ে আমরা অবগত রয়েছি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত