মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধি

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদদের গণকবর সংরক্ষণ করা হয়নি। ওইদিন নিহতদের শহীদের স্বীকৃতিও মেলেনি। ১৯৭১ সালে অগাস্টের মাঝামাঝি ওই গ্রামের দুটি বাড়িতে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে এক নারীসহ ১৫ জন হত্যার শিকার হন। ওই সময় এলাকাটি ছিল কুমিল্লার বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার অধীনে।
প্রথম হত্যাযজ্ঞ হয় বর্তমান মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামের মুন্সিবাড়িতে। বাড়ির উঠানে ৮জনকে সামনে ও পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেদিন নিহত রৌশন আলী মুন্সির ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম মুন্সি এখনও বেঁচে আছেন।
শহীদ পরিবারের এই সন্তান বলেন, ওইদিন শনিবারের ভোররাত। সম্ভবত মাসটি ছিল ভাদ্র মাসের ২২ তারিখ। সেই হিসাবে সময়টা একাত্তরের অগাস্টের মাঝামাঝি। বাড়ির বেশিরভাগ মানুষই ছিলেন ঘুমে। কেউ কেউ ফজরের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জহিরুল মুন্সির ভাষ্য, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে আমরা তিন ভাই পাশের গ্রামে বোনের বাড়িতে থাকায় সেদিন রক্ষা পাই। খবর পেয়ে সকাল ৮টার দিকে বাড়ি এসে দেখি লাশ আর লাশ, পুরো উঠান রক্তে ভেসে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে ঘরে তখনও আগুন জ্বলছে। আমার সঙ্গে তখন তিন-চারজন আত্মীয় ছিলেন। আমরা লাশগুলো একত্র করলাম। হানাদাররা আবার আসতে পারে, সে ভয়ে কাঁপছিলাম। এ অবস্থায় আমরা কজন মিলে কারও কাছ থেকে চাদর, কারও কাছ থেকে মহিলাদের নামাজের সাদা কাপড় সংগ্রহ করলাম, এসব দিয়েই নিহত সবাইকে একসঙ্গে দাফন করি। সেদিন মৃত ভেবে রেখে যাওয়া আমার দুই ভাই নরুল হক মুন্সি ও একরামুল হক ওরফে কালা মিয়া মুন্সি পরবর্তীতে চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হন। দুই দশক আগে মারা যান। আমৃত্যু গুলির যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটিয়েছেন তাঁরা। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও তাঁদের কারও কপালে জোটেনি কোনো স্বীকৃতি। আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন স্বীকৃতি না পাওয়া শহীদ পরিবারের এ সন্তান। ২০০১ সালে সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল( অব.)এম আনোয়ারুল আজিম গণকবর সংরক্ষণের জন্য একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ ও কিছু টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্মৃতি ফলকটি অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে, বলছেন জহিরুল। পাক বাহিনীর হাতে বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইদের প্রাণ দেওয়ার স্বীকৃতি ও সরকারিভাবে গণকবরটি সংরক্ষণ হোক-এটাই এখন তাঁর একমাত্র চাওয়া। যেন এ ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্ম জানতে পেরে শহীদদের সম্মান জানাতে পারে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই সেদিন মানরা গ্রামে নিরীহ মানুষদেরকে খুন করে পাকিস্তানিরা। ২০২০ সালে সরকারিভাবে গণকবরটি সার্ভে করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সংরক্ষণ করে শহীদদের সম্মান জানানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি বলেন, গণকবর সংরক্ষণের জন্য এলাকার লোকজন অফিসে একটি দরখাস্ত দিয়েছে, আমি তদন্ত করে কাজ সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা করব ।

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদদের গণকবর সংরক্ষণ করা হয়নি। ওইদিন নিহতদের শহীদের স্বীকৃতিও মেলেনি। ১৯৭১ সালে অগাস্টের মাঝামাঝি ওই গ্রামের দুটি বাড়িতে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে এক নারীসহ ১৫ জন হত্যার শিকার হন। ওই সময় এলাকাটি ছিল কুমিল্লার বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার অধীনে।
প্রথম হত্যাযজ্ঞ হয় বর্তমান মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামের মুন্সিবাড়িতে। বাড়ির উঠানে ৮জনকে সামনে ও পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেদিন নিহত রৌশন আলী মুন্সির ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম মুন্সি এখনও বেঁচে আছেন।
শহীদ পরিবারের এই সন্তান বলেন, ওইদিন শনিবারের ভোররাত। সম্ভবত মাসটি ছিল ভাদ্র মাসের ২২ তারিখ। সেই হিসাবে সময়টা একাত্তরের অগাস্টের মাঝামাঝি। বাড়ির বেশিরভাগ মানুষই ছিলেন ঘুমে। কেউ কেউ ফজরের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জহিরুল মুন্সির ভাষ্য, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে আমরা তিন ভাই পাশের গ্রামে বোনের বাড়িতে থাকায় সেদিন রক্ষা পাই। খবর পেয়ে সকাল ৮টার দিকে বাড়ি এসে দেখি লাশ আর লাশ, পুরো উঠান রক্তে ভেসে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে ঘরে তখনও আগুন জ্বলছে। আমার সঙ্গে তখন তিন-চারজন আত্মীয় ছিলেন। আমরা লাশগুলো একত্র করলাম। হানাদাররা আবার আসতে পারে, সে ভয়ে কাঁপছিলাম। এ অবস্থায় আমরা কজন মিলে কারও কাছ থেকে চাদর, কারও কাছ থেকে মহিলাদের নামাজের সাদা কাপড় সংগ্রহ করলাম, এসব দিয়েই নিহত সবাইকে একসঙ্গে দাফন করি। সেদিন মৃত ভেবে রেখে যাওয়া আমার দুই ভাই নরুল হক মুন্সি ও একরামুল হক ওরফে কালা মিয়া মুন্সি পরবর্তীতে চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হন। দুই দশক আগে মারা যান। আমৃত্যু গুলির যন্ত্রণা নিয়ে দিন কাটিয়েছেন তাঁরা। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও তাঁদের কারও কপালে জোটেনি কোনো স্বীকৃতি। আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন স্বীকৃতি না পাওয়া শহীদ পরিবারের এ সন্তান। ২০০১ সালে সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল( অব.)এম আনোয়ারুল আজিম গণকবর সংরক্ষণের জন্য একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ ও কিছু টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্মৃতি ফলকটি অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে, বলছেন জহিরুল। পাক বাহিনীর হাতে বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইদের প্রাণ দেওয়ার স্বীকৃতি ও সরকারিভাবে গণকবরটি সংরক্ষণ হোক-এটাই এখন তাঁর একমাত্র চাওয়া। যেন এ ত্যাগের কথা নতুন প্রজন্ম জানতে পেরে শহীদদের সম্মান জানাতে পারে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই সেদিন মানরা গ্রামে নিরীহ মানুষদেরকে খুন করে পাকিস্তানিরা। ২০২০ সালে সরকারিভাবে গণকবরটি সার্ভে করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সংরক্ষণ করে শহীদদের সম্মান জানানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি বলেন, গণকবর সংরক্ষণের জন্য এলাকার লোকজন অফিসে একটি দরখাস্ত দিয়েছে, আমি তদন্ত করে কাজ সম্পূর্ণ করার ব্যবস্থা করব ।