লাকসাম প্রতিনিধি
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা এর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, তবে এখানকার বহু বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, অনেক শিল্পপতি আছে এই অঞ্চলে।
এ উপজেলায় প্রাকৃতিক সম্পদের কোন ক্ষেত্র যেমন- তেল, গ্যাস বা কয়লা খনি পাওয়া যায়নি। এলাকার জনসাধারন কৃষিজাত পণ্য, শস্য উৎপাদন এবং মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। সেই উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘ বছর ধরে কৃষি মাঠের ফসল আহরণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় দুই গ্রামের প্রায় ছয়শত পরিবারের।
মাঠের কৃষিপণ্য বাড়িতে আনতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোতে ব্যবহার করতেই হয় তাদের। এ বাঁশের সাঁকো ছাড়া চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই।উপজেলা ঝলম উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের কোলঘেঁষা আমতলী মির্জা খালটি বয়ে গেছে। মুলত এ খালটি ডাকাতিয়া নদীর একটি শাখা খাল। খালের দক্ষিণ অংশে ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের নরহরিপুর, সাতপুরিয়া ও মির্জাপুর গ্রাম অংশে সেতু না থাকায় প্রায় হাজার হাজার একর জমির চাষাবাদ নিয়ে চরম বিপাকে কৃষকেরা। কাঁচা হালট বা রাস্তা আছে, কিন্তু মাঝখানে নদীর শাখার খালের মির্জাপুর, নরহরিপুর এলাকায় সেতু নাই। ওইসব স্থানে
খালের উপর তিনটি নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। ফলে উৎপাদন খরচের চাইতে ফসল ঘরে নিতে দ্বিগুণ খরচ গুনতে হয় এখানকার স্থানীয়দের। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিয়নের কোলঘেঁষা বয়ে গেছে
ডাকাতীয়া নদীর সাথে সংযোগ আমতলী-মির্জা খালটি। মির্জাপুর গ্রামের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া এলাকায় এবং নরহরিপুর গ্রামের খালের উপর নির্মিত ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য তিন'টি বাঁশের সাঁকো। খালের উত্তর পাড়ে ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে ছোট বড় ১/২টি নতুন বাড়ীসহ প্রায় হাজার হাজার একরের ফসলি জমি। মাঠজুড়ে সোনালী শিষে ভরা আমনের ক্ষেত। বসতবাড়ি থেকে দূরবর্তী কৃষি মাঠে কাঠফাটা রোদ মাথায় নিয়ে খেতে ধান কাটছেন কৃষক-শ্রমিকরা। সেই শুখনো ধান মাথায় কিংবা কাঁধে বয়ে সাঁড় এ ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা। এছাড়াও নিজ ফসলি জমিতে যেতে দুই থেকে তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়। কোন সেতু না থাকায় ছয়শত পরিবারের প্রায় হাজার হাজার একর ফসলি জমির চাষাবাদে বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয় স্থানীয় কৃষকদের।
সাঁকো দিয়ে পার হওয়া রংপুরের এক শ্রমিক সিদ্দিক মিয়া বলেন, মালিকের থাকা খাওয়াসহ দৈনিক ৮০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছি, কাটা ধানগুলো মালিকের বাড়িতে আনতে কাঁধে বয়ে এ ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে পা পিছলে খালে পড়ে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে। আমরা এ মাঠে আর কাজ করবো না।
মির্জাপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্লা ও মসজিদ বাড়ীর আবদুল মান্নান, হাজী আলী আক্কাস বলেন, ‘আমাদের বিশাল সেতুর দরকার নেই। একটি ফুটওভার ব্রিজের মতো থাকলে ওপারের জমিতে গিয়ে নিয়মিত চাষাবাদ করা সম্ভব হতো। তাছাড়া বর্তমানে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু খালে সেতু না থাকায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে প্রতিবছর ভালো ফসল উৎপাদন করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। এছাড়াও প্রায় সময় পড়ে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে,এক সাপ্তাহের মধ্যে কৃষি মাঠ থেকে ধান মাথায় করে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার সময় নতুন বাড়ির আমান, মফিজ শফিউল্লাহ ও আক্কাস মিয়া খালে পড়ে আহত হয়।
মির্জাপুর স্কুলের শিক্ষক আহছানউল্লা বলেন,
সেতুর অভাবে কৃষকের উৎপাদিত ফসল পরিবহনে অধিক শ্রম ও অতিরিক্ত খরচ গুনতে হয়। উৎপাদন ভালো পেলেও সেতু না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ কমছে না। এছাড়াও খালের পূর্ব পাশে ঈদগাহ রয়েছে আমরা নৌকায় অথবা বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। অনেক সময় কেউ কেউ দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। তাই খালে উপর নির্মাণ একটি সেতু খুব প্রয়োজন মনে করি।
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম আমার শহরকে বলেন, ২০২১ সালে উপজেলার ইন্জিনিয়ার ও স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ কয়েকজন এসে খালের মাপজোপ করে গেছেন, তারা বলেছেন মির্জাপুর মসজিদ পাড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের বার বার ব্রিজের প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি আমাদের কোপালে বাঁশের সাঁকো।এলাকাবাসী তিন বাঁশের সাঁকোর স্থলে একটি ব্রিজ তৈরি হলে কৃষকদের উপকৃত হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, ওই এলাকায় ব্রিজের বিষয়ে আমার জানানেই, তবে এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম বলেন,খালের ওপরে বাঁশের সাঁকোতে চলাচলে স্থানীয়দের ভোগান্তি হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা এর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর, তবে এখানকার বহু বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সফলতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, অনেক শিল্পপতি আছে এই অঞ্চলে।
এ উপজেলায় প্রাকৃতিক সম্পদের কোন ক্ষেত্র যেমন- তেল, গ্যাস বা কয়লা খনি পাওয়া যায়নি। এলাকার জনসাধারন কৃষিজাত পণ্য, শস্য উৎপাদন এবং মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। সেই উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘ বছর ধরে কৃষি মাঠের ফসল আহরণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় দুই গ্রামের প্রায় ছয়শত পরিবারের।
মাঠের কৃষিপণ্য বাড়িতে আনতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোতে ব্যবহার করতেই হয় তাদের। এ বাঁশের সাঁকো ছাড়া চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই।উপজেলা ঝলম উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের কোলঘেঁষা আমতলী মির্জা খালটি বয়ে গেছে। মুলত এ খালটি ডাকাতিয়া নদীর একটি শাখা খাল। খালের দক্ষিণ অংশে ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের নরহরিপুর, সাতপুরিয়া ও মির্জাপুর গ্রাম অংশে সেতু না থাকায় প্রায় হাজার হাজার একর জমির চাষাবাদ নিয়ে চরম বিপাকে কৃষকেরা। কাঁচা হালট বা রাস্তা আছে, কিন্তু মাঝখানে নদীর শাখার খালের মির্জাপুর, নরহরিপুর এলাকায় সেতু নাই। ওইসব স্থানে
খালের উপর তিনটি নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। ফলে উৎপাদন খরচের চাইতে ফসল ঘরে নিতে দ্বিগুণ খরচ গুনতে হয় এখানকার স্থানীয়দের। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিয়নের কোলঘেঁষা বয়ে গেছে
ডাকাতীয়া নদীর সাথে সংযোগ আমতলী-মির্জা খালটি। মির্জাপুর গ্রামের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়া এলাকায় এবং নরহরিপুর গ্রামের খালের উপর নির্মিত ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য তিন'টি বাঁশের সাঁকো। খালের উত্তর পাড়ে ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে ছোট বড় ১/২টি নতুন বাড়ীসহ প্রায় হাজার হাজার একরের ফসলি জমি। মাঠজুড়ে সোনালী শিষে ভরা আমনের ক্ষেত। বসতবাড়ি থেকে দূরবর্তী কৃষি মাঠে কাঠফাটা রোদ মাথায় নিয়ে খেতে ধান কাটছেন কৃষক-শ্রমিকরা। সেই শুখনো ধান মাথায় কিংবা কাঁধে বয়ে সাঁড় এ ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা। এছাড়াও নিজ ফসলি জমিতে যেতে দুই থেকে তিন কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়। কোন সেতু না থাকায় ছয়শত পরিবারের প্রায় হাজার হাজার একর ফসলি জমির চাষাবাদে বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয় স্থানীয় কৃষকদের।
সাঁকো দিয়ে পার হওয়া রংপুরের এক শ্রমিক সিদ্দিক মিয়া বলেন, মালিকের থাকা খাওয়াসহ দৈনিক ৮০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছি, কাটা ধানগুলো মালিকের বাড়িতে আনতে কাঁধে বয়ে এ ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে পা পিছলে খালে পড়ে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে। আমরা এ মাঠে আর কাজ করবো না।
মির্জাপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্লা ও মসজিদ বাড়ীর আবদুল মান্নান, হাজী আলী আক্কাস বলেন, ‘আমাদের বিশাল সেতুর দরকার নেই। একটি ফুটওভার ব্রিজের মতো থাকলে ওপারের জমিতে গিয়ে নিয়মিত চাষাবাদ করা সম্ভব হতো। তাছাড়া বর্তমানে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়েছে। কিন্তু খালে সেতু না থাকায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে প্রতিবছর ভালো ফসল উৎপাদন করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে আমাদের। এছাড়াও প্রায় সময় পড়ে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে,এক সাপ্তাহের মধ্যে কৃষি মাঠ থেকে ধান মাথায় করে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার সময় নতুন বাড়ির আমান, মফিজ শফিউল্লাহ ও আক্কাস মিয়া খালে পড়ে আহত হয়।
মির্জাপুর স্কুলের শিক্ষক আহছানউল্লা বলেন,
সেতুর অভাবে কৃষকের উৎপাদিত ফসল পরিবহনে অধিক শ্রম ও অতিরিক্ত খরচ গুনতে হয়। উৎপাদন ভালো পেলেও সেতু না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ কমছে না। এছাড়াও খালের পূর্ব পাশে ঈদগাহ রয়েছে আমরা নৌকায় অথবা বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। অনেক সময় কেউ কেউ দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। তাই খালে উপর নির্মাণ একটি সেতু খুব প্রয়োজন মনে করি।
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম আমার শহরকে বলেন, ২০২১ সালে উপজেলার ইন্জিনিয়ার ও স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ কয়েকজন এসে খালের মাপজোপ করে গেছেন, তারা বলেছেন মির্জাপুর মসজিদ পাড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে জনপ্রতিনিধিরা আমাদের বার বার ব্রিজের প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি আমাদের কোপালে বাঁশের সাঁকো।এলাকাবাসী তিন বাঁশের সাঁকোর স্থলে একটি ব্রিজ তৈরি হলে কৃষকদের উপকৃত হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, ওই এলাকায় ব্রিজের বিষয়ে আমার জানানেই, তবে এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম বলেন,খালের ওপরে বাঁশের সাঁকোতে চলাচলে স্থানীয়দের ভোগান্তি হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।