কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সার্জারির প্রয়োজন নেই

আমার শহর ডেস্ক
Thumbnail image

কোমর ব্যথা অত্যন্ত কষ্টদায়ক অনুভূতি। ব্যথা শুরু হলে ঠিকমতো বসা বা চলাফেরা করা যায় না এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা দেখা দেয়। এমন অনেকেই আছেন, যারা কোমরব্যথার কারণে ঠিকভাবে বসতে পারেন না, বসলেও স্বাভাবিকভাবে উঠতে পারেন না। কোমরব্যথার কারণ ও তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছু ব্যথা উপশমকারী ওষুধ, ফিজিওথেরাপি এবং বিশেষ কিছু ব্যায়াম ব্যবহারের মাধ্যমে উপশম পাওয়া যায়। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।

কিভাবে ব্যথা কমাবেন : আপনি যদি দাঁড়িয়ে কাজ করেন, তাহলে কিছু সময়ের জন্য বসে বিশ্রাম নিন। আর যদি বসে কাজ করেন, তাহলে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে বা অল্প হাঁটাহাঁটি করে পুনরায় কাজ শুরু করুন। নরম বিছানায় ঘুমানো থেকে বিরত থাকুন, উপুড় হয়ে ঘুমানো পরিহার করুন এবং ঘুমানোর সময় অবশ্যই ডান কাতে হয়ে ঘুমান। যেকোনো কাজ করুন না কেন, চেষ্টা করুন প্রতি ২০ মিনিট পর পর আপনার অবস্থান পরিবর্তন করতে। এতে কোমরের ওপর চাপ কিছুটা কমে যাবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ অতিরিক্ত ওজন কোমরব্যথার অন্যতম কারণ। দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এতে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। ধূমপান পরিহার করুন। মাটিতে বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা বাদ দিন। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চার মাধ্যমে কোমরব্যথা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল নিয়মিত খান এবং পেশি শিথিল করার জন্য যথেষ্ট বিশ্রাম নিন।

কোমর ব্যথায় ব্যায়াম : কোমরব্যথা কমানোর কিছু সহজ ব্যায়াম রয়েছে, যা প্রতিদিন সকালে ও রাতে বিছানায় শুয়ে করা যায়। যেমন- সমতল ও হালকা নরম বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত শরীরের পাশে রাখুন এবং দুই পা সোজা করুন। হাঁটু না ভাঁজ করে এক পা যতটা সম্ভব ওপরে তুলুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। একইভাবে অন্য পা তুলুন। হাঁটু না ভাঁজ করে একসঙ্গে দুই পা তুলুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এক হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে হাঁটুকে বুকে লাগানোর চেষ্টা করুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। একইভাবে অন্য হাঁটু নিয়েও একইভাবে করুন। এবার একসঙ্গে দুই হাঁটু ভাঁজ করে দুহাতে জড়িয়ে বুকে লাগানোর চেষ্টা করুন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এরপর দুই পা সোজা করে পায়ের পাতার দিক টান টান করে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। ইলাস্টিক স্ট্রেচিং কোমরব্যথার জন্য খুবই কার্যকর। বিভিন্ন এরোবিক ব্যায়ামও কোমরব্যথা সহনীয় করতে সাহায্য করে।

কোমর ব্যথায় ফিজিওথেরাপি : কোমরব্যথায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসা। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট ব্যথার সঠিক কারণ ও রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করেন। ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে সার্জারি ছাড়া কোমরব্যথা নিরাময় সম্ভব। এ চিকিৎসায় ম্যানুয়াল কারেকশন টেকনিক, ম্যাকেনজি মেথড, ফিজিক্যাল এজেন্ট, ট্যাপিং, এমএফআর, সিরিয়াক্স, ইলেক্ট্রোথেরাপি, ম্যানিপুলেশন, লেজার ইত্যাদি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় স্ট্রেচিং ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরের পেশি শিথিল করা হয় এবং স্ট্রেন্থেনিং ব্যায়ামের মাধ্যমে দুর্বল পেশিগুলো শক্তিশালী করা হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী হিট ও কোল্ড থেরাপিও প্রয়োগ করা হয়। মনে রাখতে হবে, কোমরব্যথায় সঠিক ফিজিওথেরাপি, ওষুধ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্যথা কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত