অধ্যাপক ডা. দীপংকর লোধ
ক্যান্সার রোগটির নামের সঙ্গেই আতঙ্ক জড়িয়ে আছে । বিভিন্ন বয়সে ভিন্ন ভিন্ন কারণে মানুষজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন । কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার হারও কম নয় । এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা,শুরুতে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা ।
প্রতিবছর এপ্রিল মাস সারা বিশ্বে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয় । প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন শিক্ষামূলক আলোচনা ও বিনামূল্যে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেঁচে থাকা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক শনাক্তকরণ অপরিহার্য ।
মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার : মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সারের মধ্যে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের হার ৬ থেকে ৮ শতাংশ । কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার অনেক বেশি । সাধারণত মুখ ও মুখগহবর , খাদ্যনালীর উপরিভাগ, শ্বাসযন্ত্র নাক ও সাইনাস সমূহ,থাইরয়েড গ্রন্থি এবং হেডনেক এলাকার ত¦ক ও লসিকা গ্রন্থির ক্যান্সার সমূহ মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার হিসাবে পরিচিত ।
হেড নেক ক্যান্সারের কারণ : যে সকল মানুষ ধূমপান করে, পান সুপারি খায়, অ্যালকোহল গ্রহণ করে তাদের এ ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায় ।তাছাড়া শিল্প-কারখানার কেমিকেল ,অতিরিক্ত লবণাক্ত মাছ, রেডিয়েশন,আয়োডিনের অভাব অথবা মাত্রাতিরিক্ত আয়োডিন, বংশগত, হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস, এক্সটেনবার ভাইরাস ক্যান্সারের অন্যতম কারণ । তাছাড়া মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল না রাখা, পুষ্টির অভাবও রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ।
লক্ষণ : হেড নেক ক্যান্সারের লক্ষণ প্রাথমিকভাবে বোঝা কঠিন তবে যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনার হেড নেক ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তা হলো গলার মধ্যে কাটা কাটা মনে হওয়া, দীর্ঘদিন গলার ব্যথা,মুখ ও মুখগহ্বরের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত, খেতে অসুবিধা, দীর্ঘস্থায়ী গলার স্বরে পরিবর্তন,নাক দিয়ে রক্ত পড়া ও নাকের শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া। একপাশের কান বা মাথার ব্যথা,গলার উপরিভাগে গোটা আকৃতি হওয়া এবং অকারণে ওজন কমে যাওয়া।
হেড নেক ক্যান্সার রোগ নির্ণয় : রোগীর রোগের ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, এন্ডোসকপি,সিটি স্ক্যান, এমআরআই, প্যাট স্ক্যান, টিউমার মার্কারের মাধ্যমে এই রোগ এবং শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়লে তা নির্ণয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার রোগ কোন পর্যায়ে আছে নির্ণয় করা হয়, যা চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে ক্যান্সারের চিকিৎসা তুলনামূলক সহজ ।
চিকিৎসা: সাধারণত রেডিওথেরাপি কেমোথেরাপি এবং অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টিমের মাধ্যমে সঠিক ও সর্বোত্তম চিকিৎসা প্রদান করা হয় ।
প্রতিরোধ: যেকোনো রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য তামাক ও অ্যালকোহল বর্জন, মুখ ও মুখগহ্বরের দীর্ঘস্থায়ী ঘায়ের গুরুত্ব সহকারে চিকিৎসা প্রধান, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, দুই সপ্তাহের বেশি কণ্ঠস্বরূপ পরিবর্তনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া, শিল্প কারখানায় ফেস মাস্ক ব্যবহার, ভাইরাস বিরোধী টিকা নেয়া, পরিমাণ মতো আয়োডিনযুক্ত খাবারসহ সুষম খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়।
অধ্যাপক ডা. দীপংকর লোধ, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (রাইনোলজি)
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট, তেজগাঁও, ঢাকা
ক্যান্সার রোগটির নামের সঙ্গেই আতঙ্ক জড়িয়ে আছে । বিভিন্ন বয়সে ভিন্ন ভিন্ন কারণে মানুষজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন । কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবনে ফিরে আসার হারও কম নয় । এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা,শুরুতে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা ।
প্রতিবছর এপ্রিল মাস সারা বিশ্বে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয় । প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন শিক্ষামূলক আলোচনা ও বিনামূল্যে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেঁচে থাকা বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক শনাক্তকরণ অপরিহার্য ।
মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার : মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সারের মধ্যে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের হার ৬ থেকে ৮ শতাংশ । কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার অনেক বেশি । সাধারণত মুখ ও মুখগহবর , খাদ্যনালীর উপরিভাগ, শ্বাসযন্ত্র নাক ও সাইনাস সমূহ,থাইরয়েড গ্রন্থি এবং হেডনেক এলাকার ত¦ক ও লসিকা গ্রন্থির ক্যান্সার সমূহ মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার হিসাবে পরিচিত ।
হেড নেক ক্যান্সারের কারণ : যে সকল মানুষ ধূমপান করে, পান সুপারি খায়, অ্যালকোহল গ্রহণ করে তাদের এ ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায় ।তাছাড়া শিল্প-কারখানার কেমিকেল ,অতিরিক্ত লবণাক্ত মাছ, রেডিয়েশন,আয়োডিনের অভাব অথবা মাত্রাতিরিক্ত আয়োডিন, বংশগত, হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস, এক্সটেনবার ভাইরাস ক্যান্সারের অন্যতম কারণ । তাছাড়া মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল না রাখা, পুষ্টির অভাবও রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ।
লক্ষণ : হেড নেক ক্যান্সারের লক্ষণ প্রাথমিকভাবে বোঝা কঠিন তবে যে সকল লক্ষণগুলো দেখা দিলে আপনার হেড নেক ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তা হলো গলার মধ্যে কাটা কাটা মনে হওয়া, দীর্ঘদিন গলার ব্যথা,মুখ ও মুখগহ্বরের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত, খেতে অসুবিধা, দীর্ঘস্থায়ী গলার স্বরে পরিবর্তন,নাক দিয়ে রক্ত পড়া ও নাকের শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া। একপাশের কান বা মাথার ব্যথা,গলার উপরিভাগে গোটা আকৃতি হওয়া এবং অকারণে ওজন কমে যাওয়া।
হেড নেক ক্যান্সার রোগ নির্ণয় : রোগীর রোগের ইতিহাস নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি, এন্ডোসকপি,সিটি স্ক্যান, এমআরআই, প্যাট স্ক্যান, টিউমার মার্কারের মাধ্যমে এই রোগ এবং শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়লে তা নির্ণয়ের মাধ্যমে ক্যান্সার রোগ কোন পর্যায়ে আছে নির্ণয় করা হয়, যা চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে ক্যান্সারের চিকিৎসা তুলনামূলক সহজ ।
চিকিৎসা: সাধারণত রেডিওথেরাপি কেমোথেরাপি এবং অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টিমের মাধ্যমে সঠিক ও সর্বোত্তম চিকিৎসা প্রদান করা হয় ।
প্রতিরোধ: যেকোনো রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য তামাক ও অ্যালকোহল বর্জন, মুখ ও মুখগহ্বরের দীর্ঘস্থায়ী ঘায়ের গুরুত্ব সহকারে চিকিৎসা প্রধান, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, দুই সপ্তাহের বেশি কণ্ঠস্বরূপ পরিবর্তনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া, শিল্প কারখানায় ফেস মাস্ক ব্যবহার, ভাইরাস বিরোধী টিকা নেয়া, পরিমাণ মতো আয়োডিনযুক্ত খাবারসহ সুষম খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা যায়।
অধ্যাপক ডা. দীপংকর লোধ, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (রাইনোলজি)
জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট, তেজগাঁও, ঢাকা