মোসলেহ উদ্দিন সেলিম
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দেশে বজ্রপাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে, যা গানিতিক হারে বেড়েই চলছে গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ২ কিশোর এবং মুরাদনগর উপজেলায় বজ্রপাতে মারা যায় ২ জন কৃষক যা অত্যান্ত মর্মান্তিক। জলবায়ু পরিবর্তন আর বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বজ্রপাত বাড়ছে। তাপমাত্রা যত বেশি হবে বজ্রপাত তত বাড়বে।
গত ৪০ বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ বজ্রপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞাদের মতে তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ, তালগাছের বাকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক। তালগাছের পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ বজ্রপাত নিরোধে বেশ কার্যকর। দীর্ঘ সময়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে এলাকায় তালগাছ যথেষ্ট পরিমাণে আছে সে এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা নেই বললেই চলে। বিশেষ রাস্তার ধারে তালগাছ রোপন এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে এতে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বজ্রপাতে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মৃত্যুই বাংলাদেশে ঘটছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বজ্রপাতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে খোলামাঠ, রাস্তার পাশে এমনকি বিল, হাওর-বাঁওড় ও বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে উঁচু তালগাছ লাগাতে হবে। তাল, নারকেল, সুপারি প্রভৃতি উঁচু গাছ লাগানো যেতে পারে। তালগাছ বজ্রপাত নিরোধ হিসেবে উল্লেখযোগ্য ও অনেকটা কার্যকর। তালগাছের পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ বজ্রপাত নিরোধে বেশ কার্যকর। প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। বজ্রপাত শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। তালগাছ লাগানোর পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছ লাগানোর উদ্যোগকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।
সাধারণত একটি তালগাছ ৯০ থেকে ১০০ ফুট উঁচু হয়। উঁচু গাছ হওয়ায় বজ্রপাত সরাসরি এ গাছের মাধ্যমে মাটিতে গিয়ে আমাদের রক্ষা করে। এ ছাড়া ভূমিক্ষয়, ভূমিধস, ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষা করে। তালগাছের আকর্ষণে বাড়ে মেঘের ঘনঘটা, ঘটে বৃষ্টিপাতও। তালগাছের শিকড় মাটির অনেক নিচ পর্যন্ত প্রবেশ করায় ঝড়ে হেলে পড়ে না কিংবা ভেঙে পড়ে না। যেখানে কোনো কিছু চাষ হয় না সেখানেও তালগাছ তার শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। নতুন রাস্তার অবকাঠামো, বাঁধ ও নদীভাঙন ঠেকাতে তালগাছের রয়েছে সফল প্রয়োগ। তালগাছ আমাদের উপকূল ও গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি।
তাই আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তার দুপাশে, পুকুর পাড়ে, বাড়ির আশপাশে, পরিত্যক্ত জায়গায় তালবীজ বপন করি। নিজে ও গ্রামের সবাইকে সচেতন করি, তালবীজ বপনে উদ্যোগী করে তুলি।গ্রামীণ ও উপকূলীয় জনপদে তালগাছের পরিকল্পিত চাষে নান্দনিক সৌন্দর্যরূপ তুলে ধরে তালগাছে প্রকৃতি সাজাই, জীবন বাঁচাই। সারা দেশে গড়ে উঠুক তালগাছে প্রকৃতির সবুজ বেষ্টনী।
লেখক-
মোসলেহ উদ্দিন সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন,বাংলাদেশ (ডিকেআইবি) কুমিল্লা জেলা ও উপ সহকারী কৃষি অফিসার লালমাই,কুমিল্লা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দেশে বজ্রপাতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে, যা গানিতিক হারে বেড়েই চলছে গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ২ কিশোর এবং মুরাদনগর উপজেলায় বজ্রপাতে মারা যায় ২ জন কৃষক যা অত্যান্ত মর্মান্তিক। জলবায়ু পরিবর্তন আর বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বজ্রপাত বাড়ছে। তাপমাত্রা যত বেশি হবে বজ্রপাত তত বাড়বে।
গত ৪০ বছরে প্রায় ১৫ শতাংশ বজ্রপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞাদের মতে তালগাছে কার্বনের স্তর বেশি থাকায় তা বজ্রপাত নিরোধে সহায়তা করে। কারণ, তালগাছের বাকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকে। তালগাছের উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকেও বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক। তালগাছের পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ বজ্রপাত নিরোধে বেশ কার্যকর। দীর্ঘ সময়ের পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে এলাকায় তালগাছ যথেষ্ট পরিমাণে আছে সে এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা নেই বললেই চলে। বিশেষ রাস্তার ধারে তালগাছ রোপন এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে এতে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বজ্রপাতে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মৃত্যুই বাংলাদেশে ঘটছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি বজ্রপাতে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে খোলামাঠ, রাস্তার পাশে এমনকি বিল, হাওর-বাঁওড় ও বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে উঁচু তালগাছ লাগাতে হবে। তাল, নারকেল, সুপারি প্রভৃতি উঁচু গাছ লাগানো যেতে পারে। তালগাছ বজ্রপাত নিরোধ হিসেবে উল্লেখযোগ্য ও অনেকটা কার্যকর। তালগাছের পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছের মতো উচ্চতাসম্পন্ন গাছ বজ্রপাত নিরোধে বেশ কার্যকর। প্রকৃতি দিয়েই প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। বজ্রপাত শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের জন্য আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুর্যোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। তালগাছ লাগানোর পাশাপাশি নারকেলগাছ, সুপারিগাছ লাগানোর উদ্যোগকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।
সাধারণত একটি তালগাছ ৯০ থেকে ১০০ ফুট উঁচু হয়। উঁচু গাছ হওয়ায় বজ্রপাত সরাসরি এ গাছের মাধ্যমে মাটিতে গিয়ে আমাদের রক্ষা করে। এ ছাড়া ভূমিক্ষয়, ভূমিধস, ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষা করে। তালগাছের আকর্ষণে বাড়ে মেঘের ঘনঘটা, ঘটে বৃষ্টিপাতও। তালগাছের শিকড় মাটির অনেক নিচ পর্যন্ত প্রবেশ করায় ঝড়ে হেলে পড়ে না কিংবা ভেঙে পড়ে না। যেখানে কোনো কিছু চাষ হয় না সেখানেও তালগাছ তার শক্ত অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। নতুন রাস্তার অবকাঠামো, বাঁধ ও নদীভাঙন ঠেকাতে তালগাছের রয়েছে সফল প্রয়োগ। তালগাছ আমাদের উপকূল ও গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি।
তাই আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তার দুপাশে, পুকুর পাড়ে, বাড়ির আশপাশে, পরিত্যক্ত জায়গায় তালবীজ বপন করি। নিজে ও গ্রামের সবাইকে সচেতন করি, তালবীজ বপনে উদ্যোগী করে তুলি।গ্রামীণ ও উপকূলীয় জনপদে তালগাছের পরিকল্পিত চাষে নান্দনিক সৌন্দর্যরূপ তুলে ধরে তালগাছে প্রকৃতি সাজাই, জীবন বাঁচাই। সারা দেশে গড়ে উঠুক তালগাছে প্রকৃতির সবুজ বেষ্টনী।
লেখক-
মোসলেহ উদ্দিন সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক, ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন,বাংলাদেশ (ডিকেআইবি) কুমিল্লা জেলা ও উপ সহকারী কৃষি অফিসার লালমাই,কুমিল্লা।