গাজীউল হক সোহাগ
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা ফেরদৌসী। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি এ উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর গবাদি পশুপাখি ও খামারিদের জন্য বহুমাত্রিক কাজ করে সুনাম অর্জন করেছেন। প্রত্যন্ত পল্লীতে নিজে হাজির হয়ে বিনামূল্যে পশুপাখির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেন। গত বন্যায় তিনি গবাদিপশুর জন্য খড়, কাটিং ও সাইলেস ( কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতিকে সাইলেস বলে) দেন। উপজেলার একটি গ্রামকে
গবাদিপশুপাখির মডেল গ্রাম হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ডা. তানজিলা ফেরদৌসী ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে ডক্টস অব ভেটেরিনারি মেডিসিন( ডিভিএম) ও ভেটেরিনারি প্যাথলজিতে এম এস করেন। ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট তিনি ৩৩তম বিসিএসে ( প্রাণিসম্পদ) যোগদান করেন। ময়মনসিংহের সেরা দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও মমিনুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। কুমিল্লার খামারিদের বর্তমান অবস্থা, ডিম-দুধ ও মাংসের চাহিদা, গবাদি পশুপাখির বর্তমান অবস্থা ও আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পশুর মজুত নিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমার শহর পত্রিকার সম্পাদক গাজীউল হক সোহাগ
আমার শহর : আপনি তো দেখি পুরো উপজেলায় ছোটাছুটি করেন। এখন এই খামারে তো, কিছুক্ষণ পরে আরেক খামারে। আবার গবাদিপশুপাখির জন্য ফ্রি মেডিকেল সেবা দিচ্ছেন। এতো কাজ কিভাবে করেন?
তানজিলা ফেরদৌসী: আমি কাজকে উপভোগ করি, যত্ন নিয়ে কাজ করি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে ভালোবাসি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা নানা ধরণের সংগঠন করতাম। তখন থেকেই মানুষের প্রতি, জীবের প্রতি টান অনুভব করি। ভালো কাজের জন্য মুখিয়ে থাকি। কুমিল্লায় যোগদানের পর দেখি এখানে কাজের অনেক সুযোগ আছে। প্রাচীন জেলা শহরের শহরতলি ঘিরে আদর্শ সদর উপজেলা। এখানে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে খামার বেশি, বিনিয়োগ বেশি। ফলে এখানে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন হচ্ছে ভালো। একটি উপজেলার গবাদিপশু ও পাখির যত্ন নিতে হলে সেগুলোর স্বাস্থ্যসেবাও নিশ্চিত করতে হবে। খামারিদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস ও মুরগিকে ভ্যাকসিন, বড়ি খাওয়াতে হবে। খামারি সমাবেশ, উঠোন বৈঠক করতে হয়। এগুলো আমার দায়িত্ব।
আমার শহর : আপনার উপজেলায় তো ভেটেরিনারি সার্জন নেই চার মাস। সামনে কোরবানির ঈদ। গবাদিপশুর চিকিৎসা করে কে?
তানজিলা ফেরদৌসী: কুমিল্লা জেলায় বেশি খামার আদর্শ সদর উপজেলায়। আমাকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ভেটেরিনারি সার্জনেরও কাজ করতে হয়। দাপ্তরিক কাজও সামলাতে হয়। কোরবানির পশু দেখতে হয়। চিকিৎসা করতে হয়। গরু, ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা জরিপ করতে হয়।
আমার শহর: এ বছর এই উপজেলায় কত গবাদিপশু কোরবানির জন্য মজুত আছে।
তানজিলা ফেরদৌসী: এখন পর্যন্ত জরিপ করে ১৫ হাজার গবাদিপশুর সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে।
আমার শহর: আপনার উপজেলায় দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন কেমন? ঘাটতি আছে কিনা?
তানজিলা ফেরদৌসী: আদর্শ সদর উপজেলায় ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন ভালো। কোন ধরণের ঘাটতি নেই। উৎপাদন ভালো হচ্ছে।
আমার শহর: বন্যার সময় আপনি তো খামারিদের গবাদিপশুর খাবার দিয়েছিলেন। কি কি দিয়েছিলেন?
তানজিলা ফেরদৌসী: কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় এবার গোমতী নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তখন অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবাদি পশুর খড় নষ্ট হয়ে যায়। বিপন্ন হয়ে পড়ে গরু, ছাগল। তখন আমি সাইরেস, খড় ও কাটিং দিয়েছি খামারিদের।
আমার শহর: আপনার গবাদি পশুপাখির মডেল গ্রামের খবর কি?
তানজিলা ফেরদৌসী : পালপাড়া এলাকায় পশুপাখির মডেল গ্রাম করেছি। ওই গ্রামের পশুপাখিদের বিনামূল্যে সেবা দিচ্ছি। গ্রামবাসী ও গ্রামের নারী পুরুষকে সচেতন করেছি। প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখনও কাজ চলছে।
আমার শহর: আপনাকে ধন্যবাদ
তানজিলা ফেরদৌসী: আমার শহরের পাঠকদেরও ধন্যবাদ।
আদর্শ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা ফেরদৌসী
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা ফেরদৌসী। ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি এ উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর গবাদি পশুপাখি ও খামারিদের জন্য বহুমাত্রিক কাজ করে সুনাম অর্জন করেছেন। প্রত্যন্ত পল্লীতে নিজে হাজির হয়ে বিনামূল্যে পশুপাখির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেন। গত বন্যায় তিনি গবাদিপশুর জন্য খড়, কাটিং ও সাইলেস ( কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ পদ্ধতিকে সাইলেস বলে) দেন। উপজেলার একটি গ্রামকে
গবাদিপশুপাখির মডেল গ্রাম হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ডা. তানজিলা ফেরদৌসী ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে ডক্টস অব ভেটেরিনারি মেডিসিন( ডিভিএম) ও ভেটেরিনারি প্যাথলজিতে এম এস করেন। ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট তিনি ৩৩তম বিসিএসে ( প্রাণিসম্পদ) যোগদান করেন। ময়মনসিংহের সেরা দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও মমিনুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। কুমিল্লার খামারিদের বর্তমান অবস্থা, ডিম-দুধ ও মাংসের চাহিদা, গবাদি পশুপাখির বর্তমান অবস্থা ও আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পশুর মজুত নিয়ে গতকাল শনিবার বিকেলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমার শহর পত্রিকার সম্পাদক গাজীউল হক সোহাগ
আমার শহর : আপনি তো দেখি পুরো উপজেলায় ছোটাছুটি করেন। এখন এই খামারে তো, কিছুক্ষণ পরে আরেক খামারে। আবার গবাদিপশুপাখির জন্য ফ্রি মেডিকেল সেবা দিচ্ছেন। এতো কাজ কিভাবে করেন?
তানজিলা ফেরদৌসী: আমি কাজকে উপভোগ করি, যত্ন নিয়ে কাজ করি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষকে ভালোবাসি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা নানা ধরণের সংগঠন করতাম। তখন থেকেই মানুষের প্রতি, জীবের প্রতি টান অনুভব করি। ভালো কাজের জন্য মুখিয়ে থাকি। কুমিল্লায় যোগদানের পর দেখি এখানে কাজের অনেক সুযোগ আছে। প্রাচীন জেলা শহরের শহরতলি ঘিরে আদর্শ সদর উপজেলা। এখানে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে খামার বেশি, বিনিয়োগ বেশি। ফলে এখানে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন হচ্ছে ভালো। একটি উপজেলার গবাদিপশু ও পাখির যত্ন নিতে হলে সেগুলোর স্বাস্থ্যসেবাও নিশ্চিত করতে হবে। খামারিদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস ও মুরগিকে ভ্যাকসিন, বড়ি খাওয়াতে হবে। খামারি সমাবেশ, উঠোন বৈঠক করতে হয়। এগুলো আমার দায়িত্ব।
আমার শহর : আপনার উপজেলায় তো ভেটেরিনারি সার্জন নেই চার মাস। সামনে কোরবানির ঈদ। গবাদিপশুর চিকিৎসা করে কে?
তানজিলা ফেরদৌসী: কুমিল্লা জেলায় বেশি খামার আদর্শ সদর উপজেলায়। আমাকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ভেটেরিনারি সার্জনেরও কাজ করতে হয়। দাপ্তরিক কাজও সামলাতে হয়। কোরবানির পশু দেখতে হয়। চিকিৎসা করতে হয়। গরু, ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা জরিপ করতে হয়।
আমার শহর: এ বছর এই উপজেলায় কত গবাদিপশু কোরবানির জন্য মজুত আছে।
তানজিলা ফেরদৌসী: এখন পর্যন্ত জরিপ করে ১৫ হাজার গবাদিপশুর সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে।
আমার শহর: আপনার উপজেলায় দুধ, মাংস ও ডিমের উৎপাদন কেমন? ঘাটতি আছে কিনা?
তানজিলা ফেরদৌসী: আদর্শ সদর উপজেলায় ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন ভালো। কোন ধরণের ঘাটতি নেই। উৎপাদন ভালো হচ্ছে।
আমার শহর: বন্যার সময় আপনি তো খামারিদের গবাদিপশুর খাবার দিয়েছিলেন। কি কি দিয়েছিলেন?
তানজিলা ফেরদৌসী: কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় এবার গোমতী নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তখন অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গবাদি পশুর খড় নষ্ট হয়ে যায়। বিপন্ন হয়ে পড়ে গরু, ছাগল। তখন আমি সাইরেস, খড় ও কাটিং দিয়েছি খামারিদের।
আমার শহর: আপনার গবাদি পশুপাখির মডেল গ্রামের খবর কি?
তানজিলা ফেরদৌসী : পালপাড়া এলাকায় পশুপাখির মডেল গ্রাম করেছি। ওই গ্রামের পশুপাখিদের বিনামূল্যে সেবা দিচ্ছি। গ্রামবাসী ও গ্রামের নারী পুরুষকে সচেতন করেছি। প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখনও কাজ চলছে।
আমার শহর: আপনাকে ধন্যবাদ
তানজিলা ফেরদৌসী: আমার শহরের পাঠকদেরও ধন্যবাদ।
আদর্শ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা ফেরদৌসী