দেবী দুর্গাকে মনের ইচ্ছা জানানোর দিন আজ

স্বর্গ রায়
Thumbnail image

মহাঅষ্টমী আজ মঙ্গলবার। অষ্টমী পূজা হলো দুর্গা পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অষ্টমীর দিনে অনেক মানুষ পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে দেবী দুর্গাকে নিজের মনের ইচ্ছা জানায়। পূজার সূচনায় দন্তকাষ্ঠ ও উষ্ণোদকে দেবীর মুখপ্রক্ষালনের পর মহাস্নান, সাধারণ পূজার নিয়মে ন্যাস, অর্ঘ্যস্থাপন প্রভৃতির পর দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর পৃথক ষোড়শোপচার পূজা, নবপত্রিকা পূজা, সর্বতোভদ্রমণ্ডলে অষ্টশক্তি, অষ্টমাতৃকা, নবঘট- নবপতাকায় নবদুর্গার পূজা, ৬৪ যোগিনী ও কোটি যোগিনীর পূজা, দেবীর অস্ত্রপূজার পর সিংহ, মহিষাসুর, ময়ূর, মুষিকের পঞ্চোপচার পূজা সমাধা করা হয়। এই দিন অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণে ৪৮ মিনিটে চামুণ্ডা রূপে দেবী দুর্গাকে পুজো করা হয়। এই দিন বিভিন্ন মন্দিরে চালকুমড়ো, চিনি প্রভৃতি বলি দেবার রীতি প্রচলিত আছে। এই দিন অষ্টমীর সন্ধি পুজোর সময় অষ্ট মাতৃকা, ৬৪ ও কোটি যোগিনীরও পুজো করা হয়। এই দিন বেশিরভাগ মন্দিরে দেবী দুর্গাকে লুচি সুজির ভোগ দেওয়া হয়। এই মহাষ্টমী তিথি হল দুর্গা পূজার মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান দিন। এই দিনে কুমারীপূজাও হয়ে থাকে।

কুমিল্লা নগরের কালীতলা কালীমন্দির পূজামন্ডপে দেবী দুর্গার আগমনী সুরে ভক্তকুল উলুধ্বনিতে মাতোয়ারা। মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাক ও কাঁসর বাজছে। ফুল, ধূপ ও আগর সৌরভ ছড়াচ্ছে। শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। দেবী দুর্গার আগমনী সুরে ভক্তকুল উলুধ্বনিতে মাতোয়ারা। মণ্ডপের এক পাশে ধর্মীয় সংগীত চলছে অন্য পাশে প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বলছে। বাহারি আলোকসজ্জায় দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমা উজ্জ্বল। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী পুণ্যার্থী প্রতিমার সামনে আসছেন। খালি পায়ে করজোড় করে দেব-দেবীদের প্রণাম করছেন। প্রণামের সময় অনেকে দেব-দেবীর কাছে মনের আশা প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ আবার দেবীর সঙ্গে তুলছেন সেলফি। টানা চারদিনের সরকারি ছুটি উৎসবের আমেজ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আনন্দের জোয়ার। পূজা-অর্চনা, ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, প্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনে চারদিন মেতে থাকবেন তারা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

এ বছর দেবী দুর্গার গজে (হাতি) আগমন এবং দোলায় (পালকি) গমন হবে। গজে দেবীর আগমনকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়, যা শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরার প্রতীক। অন্যদিকে, দোলায় গমন মহামারি বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে, যা একটি অশুভ সংকেত।

গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক গোপাল দত্ত চৌধুরী বলেন, দুর্গাপূজায় আনন্দ অন্যরকম হয়। এতে পরিবারের সবাই হাসি-খুশিতে উৎসব করে। দুর্গাপূজার একেকদিনের একেকপর্ব আমাদের কাছে ভালো লাগে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত