ঘর থেকে বের হওয়ার আগে শহীদ মাছুম
তৈয়বুর রহমান সোহেল
৩ আগস্ট দিনগত গভীর রাতে রেস্তোরাঁ থেকে কাজ শেষ করে ঘরে ফেরেন মাছুম। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় আচমকা ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন।
মা হোসনেয়ারা বেগম তাকে বলেন, খেয়ে যাও বাবা। আমি তোমাকে খাইয়ে দেই। মাছুম বলেন, আজ সময় নেই। বাইরে খাব। মাছুম মাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেন। বোনকে বলেন, ভাইয়ার পিঠে পাউডার মেখে দাও। এরপর বাবা শাহিন মিয়া থেকে ২০টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। রাত তখন দুইটা। মা রুমের সামনে গিয়ে দেখেন ছেলের জুতা নেই। স্বামীকে ডাক দেন। তাদের মনে অজানা শঙ্কা ভর করে। রাতেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান শাহিন মিয়া।
প্রথমে রেস্তোরাঁয় খোঁজ করেন। তারা বলেন, আজ মাছুম কাজে আসেনি। বাবার ভয় দ্বিগুণ হয়। একবার ধারণা করেন, আন্দোলনের সময়। দেশে গণহারে গ্রেপ্তার চলছে। ছেলেকে হয়তো অ্যারেস্ট করা হয়েছে। রাতেই যান কোতোয়ালি থানায়। কিন্তু থানায় তালা। পরদিন এক থানা আরেক থানা, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, আত্মীয়স্বজনের বাসা- সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন। কোথাও ছেলের খোঁজ পান না। তিনদিন পর ৭ আগস্ট মাছুমের মৃতদেহের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি নজরে পড়ে তার সৌদি আরব প্রবাসী খালাতো ভাইয়ের। ওইদিন রাতে তিনিই খবরটি বাড়িতে জানান।
এরপর আবারও মাছুমের বাবা ছুটে যান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর জানানো হয়, মাছুমের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৮ আগস্ট সন্তানের মরদেহের খোঁজে বাবা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে গেলে বলা হয়, মরদেহ ফেরত পেতে আদালত ও প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। আদালতে গেলে বিচারক বলেন জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে। জেলা প্রশাসক পাঠিয়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। অনুমতির প্রক্রিয়া শেষ হয় ৯ আগস্ট বিকেলে। বিকেলেই মরদেহ কবর থেকে তোলা হয় এবং রাতে নিজ এলাকা রামপুরে দাফন করা হয়। তাদের মনে অজানা শঙ্কা ভর করে। রাতেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান শাহিন মিয়া। প্রথমে রেস্তোরাঁয় খোঁজ করেন। তারা বলেন, আজ মাছুম কাজে আসেনি। বাবার ভয় দ্বিগুণ হয়। একবার ধারণা করেন, আন্দোলনের সময়।
দেশে গণহারে গ্রেপ্তার চলছে। ছেলেকে হয়তো অ্যারেস্ট করা হয়েছে। রাতেই যান কোতোয়ালি থানায়। কিন্তু থানায় তালা। পরদিন এক থানা আরেক থানা, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, আত্মীয়স্বজনের বাসা- সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন। কোথাও ছেলের খোঁজ পান না। তিনদিন পর ৭ আগস্ট মাছুমের মৃতদেহের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি নজরে পড়ে তার সৌদি আরব প্রবাসী খালাতো ভাইয়ের। ওইদিন রাতে তিনিই খবরটি বাড়িতে জানান। এরপর আবারও মাছুমের বাবা ছুটে যান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর জানানো হয়, মাছুমের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৮ আগস্ট সন্তানের মরদেহের খোঁজে বাবা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে গেলে বলা হয়, মরদেহ ফেরত পেতে আদালত ও প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। আদালতে গেলে বিচারক বলেন জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে। জেলা প্রশাসক পাঠিয়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। অনুমতির প্রক্রিয়া শেষ হয় ৯ আগস্ট বিকেলে। বিকেলেই মরদেহ কবর থেকে তোলা হয় এবং রাতে নিজ এলাকা রামপুরে দাফন করা হয়।
শহীদ মাছুম মিয়া। বাড়ির কাউকে না জানিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। ৪ আগস্ট কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড, আলেখারচর ও ক্যান্টনমেন্টে সাবেক এমপি বাহারের পালিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সন্ত্রাসীরা মাছুমকে পায়ে গুলি করে ও মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। তার মরদেহ পড়ে থাকে কোটবাড়ি বিশ্বরোডে। আন্দোলনকারীরা তার মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সে সময়ে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২৯ জুলাই মাছুমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের জামাকাপড় বুকে নিয়ে মা কান্না করছেন। একমাত্র বোন তাসলিম কিছুক্ষণ ভাইয়ের ফেস্টুন, কিছুক্ষণ মাছুমের পালিত বিড়াল ছানা নিয়ে খেলা করছে। বাবা হতবিহ্বল। বারান্দায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মাছুম ও তার ভাই রেজাউলের সাইকেল। মসজিদের পাশে মাছুমের কবর। কবরে নামফলক। বৃষ্টির কারণে কবরের বুক সমতল হয়ে গেছে।
মাছুমের বাবা শাহিন মিয়া জানান, ২০০১ সালে মাছুমের জন্ম হয়। তার জন্মের দুইবছরের মাথায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে আমি অনেকটাই পঙ্গু হয়ে যাই। মাছুমের মামারা বিদেশ যাওয়ার পর আমাদের কিছুটা সাহায্য-সহযোগিতা করেন। মাছুম কোনোমতে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর সংসারের হাল ধরতে কাজে নেমে পড়ে। পদুয়ার বাজার সর্দার হোটেলে সে চাকরি করতো। অত্যন্ত বিনয়ী ছেলে ছিল সে। জুলাই আন্দোলনে সে অংশগ্রহণ করতো কি না, তা প্রথমে আমাদের জানা ছিল না। আমাদের সর্দার হোটেল থেকে জানানো হয়, মাছুম প্রতিদিন টমছমব্রিজ চলে যেতো। পরে বুঝতে পারি, সেখান থেকে সে কোটবাড়ি বিশ্বরোডে আন্দোলনে যোগ দিত। কোটবাড়ি বিশ্বরোডের পাশে মঠপুষ্করিণী এলাকায় তার নানার বাড়ি। আমার ছেলে আন্দোলনের বিষয়ে কথা না বললেও হাসিনা সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিল। দেশে গণহত্যা চলছিল। এসব কারণেই সে আন্দোলনে চলে যেতো।
তিনি বলেন, সরকার থেকে দুই দফায় ১৫ লাখ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। বিএনপি নেতা এ্যানি, ইয়াছিন ও টিপু ভাই এক লাখ টাকা দিয়েছেন। মহানগর জামায়াতের আমির দ্বীন মোহাম্মদ ভাই দুই লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।
মাছুমের মা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, উপার্জনের সব টাকা ছেলে রাতের বেলা এসে ফ্রিজের ওপর রেখে দিত। পরদিন এই টাকা খরচ করতাম। তার উপার্জনে সংসার চলতো। আমাদের কোনোদিন কষ্ট দেয়নি সে। সততার কারণে রেস্তোরাঁ মালিক তাকে খুব পছন্দ করতেন। মালিকের টাকা বাঁচাতে মালামাল কিনে রিকশায় না উঠিয়ে কাঁধে করে নিয়ে আসত। আমি হাত দিয়ে মুখে তুলে দিয়ে তাকে খাওয়াতাম। ঘটনার দিন সে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চলে যায়। তারা নিষ্ঠুরভাবে আমার সন্তানকে হত্যা করে। লাশটি পর্যন্ত সংরক্ষণ করেনি। ছেলের লাশ পঁচে যাওয়ায় শেষবারের মতো সন্তানকে আদরও করতে পারিনি। আমি বাহারসহ তার পালিত সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই।
৩ আগস্ট দিনগত গভীর রাতে রেস্তোরাঁ থেকে কাজ শেষ করে ঘরে ফেরেন মাছুম। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় আচমকা ঘুম থেকে উঠে বেরিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন।
মা হোসনেয়ারা বেগম তাকে বলেন, খেয়ে যাও বাবা। আমি তোমাকে খাইয়ে দেই। মাছুম বলেন, আজ সময় নেই। বাইরে খাব। মাছুম মাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেন। বোনকে বলেন, ভাইয়ার পিঠে পাউডার মেখে দাও। এরপর বাবা শাহিন মিয়া থেকে ২০টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। রাত তখন দুইটা। মা রুমের সামনে গিয়ে দেখেন ছেলের জুতা নেই। স্বামীকে ডাক দেন। তাদের মনে অজানা শঙ্কা ভর করে। রাতেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান শাহিন মিয়া।
প্রথমে রেস্তোরাঁয় খোঁজ করেন। তারা বলেন, আজ মাছুম কাজে আসেনি। বাবার ভয় দ্বিগুণ হয়। একবার ধারণা করেন, আন্দোলনের সময়। দেশে গণহারে গ্রেপ্তার চলছে। ছেলেকে হয়তো অ্যারেস্ট করা হয়েছে। রাতেই যান কোতোয়ালি থানায়। কিন্তু থানায় তালা। পরদিন এক থানা আরেক থানা, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, আত্মীয়স্বজনের বাসা- সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন। কোথাও ছেলের খোঁজ পান না। তিনদিন পর ৭ আগস্ট মাছুমের মৃতদেহের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি নজরে পড়ে তার সৌদি আরব প্রবাসী খালাতো ভাইয়ের। ওইদিন রাতে তিনিই খবরটি বাড়িতে জানান।
এরপর আবারও মাছুমের বাবা ছুটে যান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর জানানো হয়, মাছুমের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৮ আগস্ট সন্তানের মরদেহের খোঁজে বাবা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে গেলে বলা হয়, মরদেহ ফেরত পেতে আদালত ও প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। আদালতে গেলে বিচারক বলেন জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে। জেলা প্রশাসক পাঠিয়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। অনুমতির প্রক্রিয়া শেষ হয় ৯ আগস্ট বিকেলে। বিকেলেই মরদেহ কবর থেকে তোলা হয় এবং রাতে নিজ এলাকা রামপুরে দাফন করা হয়। তাদের মনে অজানা শঙ্কা ভর করে। রাতেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যান শাহিন মিয়া। প্রথমে রেস্তোরাঁয় খোঁজ করেন। তারা বলেন, আজ মাছুম কাজে আসেনি। বাবার ভয় দ্বিগুণ হয়। একবার ধারণা করেন, আন্দোলনের সময়।
দেশে গণহারে গ্রেপ্তার চলছে। ছেলেকে হয়তো অ্যারেস্ট করা হয়েছে। রাতেই যান কোতোয়ালি থানায়। কিন্তু থানায় তালা। পরদিন এক থানা আরেক থানা, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, আত্মীয়স্বজনের বাসা- সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন। কোথাও ছেলের খোঁজ পান না। তিনদিন পর ৭ আগস্ট মাছুমের মৃতদেহের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেই ছবি নজরে পড়ে তার সৌদি আরব প্রবাসী খালাতো ভাইয়ের। ওইদিন রাতে তিনিই খবরটি বাড়িতে জানান। এরপর আবারও মাছুমের বাবা ছুটে যান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর জানানো হয়, মাছুমের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৮ আগস্ট সন্তানের মরদেহের খোঁজে বাবা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে গেলে বলা হয়, মরদেহ ফেরত পেতে আদালত ও প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। আদালতে গেলে বিচারক বলেন জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে। জেলা প্রশাসক পাঠিয়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে। অনুমতির প্রক্রিয়া শেষ হয় ৯ আগস্ট বিকেলে। বিকেলেই মরদেহ কবর থেকে তোলা হয় এবং রাতে নিজ এলাকা রামপুরে দাফন করা হয়।
শহীদ মাছুম মিয়া। বাড়ির কাউকে না জানিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। ৪ আগস্ট কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড, আলেখারচর ও ক্যান্টনমেন্টে সাবেক এমপি বাহারের পালিত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সন্ত্রাসীরা মাছুমকে পায়ে গুলি করে ও মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। তার মরদেহ পড়ে থাকে কোটবাড়ি বিশ্বরোডে। আন্দোলনকারীরা তার মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সে সময়ে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২৯ জুলাই মাছুমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের জামাকাপড় বুকে নিয়ে মা কান্না করছেন। একমাত্র বোন তাসলিম কিছুক্ষণ ভাইয়ের ফেস্টুন, কিছুক্ষণ মাছুমের পালিত বিড়াল ছানা নিয়ে খেলা করছে। বাবা হতবিহ্বল। বারান্দায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে মাছুম ও তার ভাই রেজাউলের সাইকেল। মসজিদের পাশে মাছুমের কবর। কবরে নামফলক। বৃষ্টির কারণে কবরের বুক সমতল হয়ে গেছে।
মাছুমের বাবা শাহিন মিয়া জানান, ২০০১ সালে মাছুমের জন্ম হয়। তার জন্মের দুইবছরের মাথায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পেয়ে আমি অনেকটাই পঙ্গু হয়ে যাই। মাছুমের মামারা বিদেশ যাওয়ার পর আমাদের কিছুটা সাহায্য-সহযোগিতা করেন। মাছুম কোনোমতে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর সংসারের হাল ধরতে কাজে নেমে পড়ে। পদুয়ার বাজার সর্দার হোটেলে সে চাকরি করতো। অত্যন্ত বিনয়ী ছেলে ছিল সে। জুলাই আন্দোলনে সে অংশগ্রহণ করতো কি না, তা প্রথমে আমাদের জানা ছিল না। আমাদের সর্দার হোটেল থেকে জানানো হয়, মাছুম প্রতিদিন টমছমব্রিজ চলে যেতো। পরে বুঝতে পারি, সেখান থেকে সে কোটবাড়ি বিশ্বরোডে আন্দোলনে যোগ দিত। কোটবাড়ি বিশ্বরোডের পাশে মঠপুষ্করিণী এলাকায় তার নানার বাড়ি। আমার ছেলে আন্দোলনের বিষয়ে কথা না বললেও হাসিনা সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের কারণে ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিল। দেশে গণহত্যা চলছিল। এসব কারণেই সে আন্দোলনে চলে যেতো।
তিনি বলেন, সরকার থেকে দুই দফায় ১৫ লাখ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। বিএনপি নেতা এ্যানি, ইয়াছিন ও টিপু ভাই এক লাখ টাকা দিয়েছেন। মহানগর জামায়াতের আমির দ্বীন মোহাম্মদ ভাই দুই লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।
মাছুমের মা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, উপার্জনের সব টাকা ছেলে রাতের বেলা এসে ফ্রিজের ওপর রেখে দিত। পরদিন এই টাকা খরচ করতাম। তার উপার্জনে সংসার চলতো। আমাদের কোনোদিন কষ্ট দেয়নি সে। সততার কারণে রেস্তোরাঁ মালিক তাকে খুব পছন্দ করতেন। মালিকের টাকা বাঁচাতে মালামাল কিনে রিকশায় না উঠিয়ে কাঁধে করে নিয়ে আসত। আমি হাত দিয়ে মুখে তুলে দিয়ে তাকে খাওয়াতাম। ঘটনার দিন সে আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে চলে যায়। তারা নিষ্ঠুরভাবে আমার সন্তানকে হত্যা করে। লাশটি পর্যন্ত সংরক্ষণ করেনি। ছেলের লাশ পঁচে যাওয়ায় শেষবারের মতো সন্তানকে আদরও করতে পারিনি। আমি বাহারসহ তার পালিত সন্ত্রাসীদের ফাঁসি চাই।