• কুমিল্লা সিটি করপোরেশন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
  • আদর্শ সদর
  • বরুড়া
  • লাকসাম
  • দাউদকান্দি
  • আরও
    • চৌদ্দগ্রাম
    • সদর দক্ষিণ
    • নাঙ্গলকোট
    • বুড়িচং
    • ব্রাহ্মণপাড়া
    • মনোহরগঞ্জ
    • লালমাই
    • চান্দিনা
    • মুরাদনগর
    • দেবীদ্বার
    • হোমনা
    • মেঘনা
    • তিতাস
  • সর্বশেষ
  • রাজনীতি
  • বাংলাদেশ
  • অপরাধ
  • বিশ্ব
  • বাণিজ্য
  • মতামত
  • খেলা
  • বিনোদন
  • চাকরি
  • জীবনযাপন
  • ইপেপার
  • ইপেপার
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার শহর

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. গাজীউল হক ভূঁইয়া ( সোহাগ)।

নাহার প্লাজা, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০

ই-মেইল: [email protected]

ফোন: 01716197760

> কুমিল্লা জেলা
> চৌদ্দগ্রাম

কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘি, আনন্দে উল্লাস করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৩
logo

কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘি, আনন্দে উল্লাস করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০৩
Photo

ঘড়ির কাঁটায় তখন আনুমানিক সকাল ১০ টা। চারদিক থেকে শত শত মুক্তিযোদ্ধা এসেছিলেন ইপিআর ক্যাম্পে। কেউ কাঁদছেন। কেউ আনন্দে উল্লাস করেছিলেন। সবার মধ্যে ছিল অন্য রকম আনন্দ। ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করছেন। এরই মধ্যে ওই ক্যাম্পে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো হয়। তুমুল করতালি আর ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা গোটা এলাকা প্রকম্পিত করে তোলেন। সবার মধ্যে মুক্তির আনন্দ। এ দৃশ্য ১৯৭১ সালের ২৮ নভেম্বরের। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদিঘি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এলাকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে কুমিল্লার রণাঙ্গণে প্রথম মুক্তাঞ্চল ঘোষিত হয় ওই এলাকা। এই দিন পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন জং এবং তাঁর বাহিনীর সদস্যদের পতন ঘটানো হয়। একই সঙ্গে ওই দিন সকাল ১০ টায় জগন্নাথদিঘি তৎকালীন ইপিআর (বর্তমানে বিজিবি) ক্যাম্পে পতাকা উত্তোলন করা হয়। কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী ওই পতাকা উত্তোলন করেন।

কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি মুক্তাঞ্চল ঘোষণার বিস্তারিত প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘি অঞ্চল ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পরপরই আমরা ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিকামী তরুণদের সংগঠিত করি। একই সঙ্গে ভারতের ইয়ূথ ক্যাম্প থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন। ৭৫ জনের দলটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করি। এক্ষেত্রে আমরা চৌদ্দগ্রামের পাশাপাশি কুমিল্লা ও ফেনীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। তাঁদের পরামর্শে যুদ্ধ শুরু করি। ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান দিবস উপলক্ষে চৌদ্দগ্রামের চান্দিশকরা গ্রামে পাকিস্তানি পতাকাবাহী পাঁচজন পাক সেনাসহ একটি জীপ গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনজন নিহত ও দুই জন আহত হন। এর কয়েকদিন পর চৌদ্দগ্রামের ভাজনকরা সেতুটি ধ্বংস করা হয়। জগন্নাথদিঘি সংলগ্ন ডিমাতলি এলাকার একটি উঁচু ঢিবির উপর আমাদের গোপন ক্যাম্প ছিল। ওই ক্যাম্পে ছিলেন সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) শাহজাহান কবির ও আবুল হাশেম মজুমদারসহ অনেকে। ১১ নভেম্বর ভোরে জগন্নাথদিঘি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেতিয়ারা এলাকায় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের নয়জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা পাক হানাদার বাহিনীর হামলায় শহীদ হন। ওই ঘটনা আমাদের মনে দাগ কাটে। এরপর জগন্নাথদিঘি সংলগ্ন ডিমাতলি (বড় টিলা) ক্যাম্পের উদ্যোগে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সদস্যরা একসঙ্গে বসি। পরে ২৭ নভেম্বর মধ্য রাত থেকে ২৮ নভেম্বর ভোর পর্যন্ত পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন জং এবং তাঁর বাহিনীর উপর দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এ অবস্থায় পাক সেনারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে পিছু হটতে শুরু করে। ২৮ নভেম্বর ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পাক ক্যাপ্টেন জং তাঁর জীবিত ও মৃত সেনাদের নিয়ে ফেনীর দিকে পালিয়ে যান।

এরপর ওই দিনই ১৬ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে সেখানে যাই। আমাদের ক্যাম্পের সভাপতি গণপরিষদের সদস্য আইনজীবী মীর হোসেন চৌধুরী, তাঁর তিন বন্ধু আলী আকবর মজুমদার, আবদুল আউয়াল, জালাল আহমেদও আসেন। সকাল ১০ টায় ঐতিহাসিক জগন্নাথদিঘি ডাক বাঙলো প্রাঙ্গণে উপস্থিত হই। এ সময় সেখানে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে মুক্তিকামী জনতা উল্লাস করে। সেখানে মীর হোসেন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। আমিও বক্তব্য রাখি। এরপর তৎকালীন জগন্নাথদিঘি ইপিআর ক্যাম্পে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। কুমিল্লা জেলার প্রথম মুক্তাঞ্চলে আমি স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করি। ওই দিন থেকে জগন্নাথদিঘি এলাকার ১০ কিলোমিটার মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হয়। প্রতি বছর দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হয়।

তাঁর কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান, সানাউল্লাহ ভূঁইয়া ও জহিরুল হক। তাঁরা বলেন, সেদিন সবার মধ্যে যুদ্ধ জয়ের আনন্দ ছিল। কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার ১০ দিন আগে জগন্নাথদিঘি এলাকা মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এদিন বড় বেশি আনন্দ করে।

সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের লেখা ‘মুক্তি সংগ্রামে কুমিল্লা’ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে জগন্নাথদিঘি পাক বাহিনীর ক্যাম্পে বিভিন্ন দিক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়। মুক্তিবাহিনীর গোলাবর্ষণে টিকতে না পেরে ক্যাপ্টেন জং তাঁর বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যায়। জগন্নাথদিঘি ইপিআর ক্যাম্পে জসিম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করেন। এ পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে তা আনুষ্ঠানিক মুক্তাঞ্চল বলে গণ্য হয়। বৃহত্তর কুমিল্লায় আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘটনা এটাই প্রথম।’

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করছেন, স্মৃতিবিজড়িত ওই এলাকায় স্মৃতিতোরণ, মুক্তিযোদ্ধা পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় বহু আগেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি। ১৯৯৩ সালে কুমিল্লার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাতেবুর রহমান স্মৃতিতোরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর সেখানে আর কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় দ্রুত সেখানে স্মৃতিতোরণ নির্মাণ করা হোক।

জগন্নাথদিঘি কুমিল্লা অঞ্চলের প্রথম মুক্ত এলাকা। এ দিন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনী ও তাঁদের দোসররা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, প্রতিবছর দিনটি ঘটা করে পালন করা হতো। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় জগন্নাথদিঘি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শনে যান। মুক্তিযোদ্ধে জগন্নাথ দিঘি এক উল্লেখযোগ্য স্থান।

Thumbnail image

ঘড়ির কাঁটায় তখন আনুমানিক সকাল ১০ টা। চারদিক থেকে শত শত মুক্তিযোদ্ধা এসেছিলেন ইপিআর ক্যাম্পে। কেউ কাঁদছেন। কেউ আনন্দে উল্লাস করেছিলেন। সবার মধ্যে ছিল অন্য রকম আনন্দ। ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত মুক্তিযোদ্ধারা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করছেন। এরই মধ্যে ওই ক্যাম্পে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো হয়। তুমুল করতালি আর ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা গোটা এলাকা প্রকম্পিত করে তোলেন। সবার মধ্যে মুক্তির আনন্দ। এ দৃশ্য ১৯৭১ সালের ২৮ নভেম্বরের। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদিঘি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এলাকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে কুমিল্লার রণাঙ্গণে প্রথম মুক্তাঞ্চল ঘোষিত হয় ওই এলাকা। এই দিন পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন জং এবং তাঁর বাহিনীর সদস্যদের পতন ঘটানো হয়। একই সঙ্গে ওই দিন সকাল ১০ টায় জগন্নাথদিঘি তৎকালীন ইপিআর (বর্তমানে বিজিবি) ক্যাম্পে পতাকা উত্তোলন করা হয়। কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী ওই পতাকা উত্তোলন করেন।

কুমিল্লার প্রথম মুক্তাঞ্চল পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি মুক্তাঞ্চল ঘোষণার বিস্তারিত প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘি অঞ্চল ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পরপরই আমরা ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিকামী তরুণদের সংগঠিত করি। একই সঙ্গে ভারতের ইয়ূথ ক্যাম্প থেকেও প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণরা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন। ৭৫ জনের দলটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করি। এক্ষেত্রে আমরা চৌদ্দগ্রামের পাশাপাশি কুমিল্লা ও ফেনীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। তাঁদের পরামর্শে যুদ্ধ শুরু করি। ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান দিবস উপলক্ষে চৌদ্দগ্রামের চান্দিশকরা গ্রামে পাকিস্তানি পতাকাবাহী পাঁচজন পাক সেনাসহ একটি জীপ গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে তিনজন নিহত ও দুই জন আহত হন। এর কয়েকদিন পর চৌদ্দগ্রামের ভাজনকরা সেতুটি ধ্বংস করা হয়। জগন্নাথদিঘি সংলগ্ন ডিমাতলি এলাকার একটি উঁচু ঢিবির উপর আমাদের গোপন ক্যাম্প ছিল। ওই ক্যাম্পে ছিলেন সাবেক সাংসদ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) শাহজাহান কবির ও আবুল হাশেম মজুমদারসহ অনেকে। ১১ নভেম্বর ভোরে জগন্নাথদিঘি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেতিয়ারা এলাকায় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের নয়জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা পাক হানাদার বাহিনীর হামলায় শহীদ হন। ওই ঘটনা আমাদের মনে দাগ কাটে। এরপর জগন্নাথদিঘি সংলগ্ন ডিমাতলি (বড় টিলা) ক্যাম্পের উদ্যোগে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সদস্যরা একসঙ্গে বসি। পরে ২৭ নভেম্বর মধ্য রাত থেকে ২৮ নভেম্বর ভোর পর্যন্ত পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন জং এবং তাঁর বাহিনীর উপর দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এ অবস্থায় পাক সেনারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে পিছু হটতে শুরু করে। ২৮ নভেম্বর ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পাক ক্যাপ্টেন জং তাঁর জীবিত ও মৃত সেনাদের নিয়ে ফেনীর দিকে পালিয়ে যান।

এরপর ওই দিনই ১৬ জন সহযোদ্ধাকে নিয়ে সেখানে যাই। আমাদের ক্যাম্পের সভাপতি গণপরিষদের সদস্য আইনজীবী মীর হোসেন চৌধুরী, তাঁর তিন বন্ধু আলী আকবর মজুমদার, আবদুল আউয়াল, জালাল আহমেদও আসেন। সকাল ১০ টায় ঐতিহাসিক জগন্নাথদিঘি ডাক বাঙলো প্রাঙ্গণে উপস্থিত হই। এ সময় সেখানে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে মুক্তিকামী জনতা উল্লাস করে। সেখানে মীর হোসেন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। আমিও বক্তব্য রাখি। এরপর তৎকালীন জগন্নাথদিঘি ইপিআর ক্যাম্পে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। কুমিল্লা জেলার প্রথম মুক্তাঞ্চলে আমি স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করি। ওই দিন থেকে জগন্নাথদিঘি এলাকার ১০ কিলোমিটার মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষিত হয়। প্রতি বছর দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করা হয়।

তাঁর কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান, সানাউল্লাহ ভূঁইয়া ও জহিরুল হক। তাঁরা বলেন, সেদিন সবার মধ্যে যুদ্ধ জয়ের আনন্দ ছিল। কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার ১০ দিন আগে জগন্নাথদিঘি এলাকা মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এদিন বড় বেশি আনন্দ করে।

সাংবাদিক আবুল কাশেম হৃদয়ের লেখা ‘মুক্তি সংগ্রামে কুমিল্লা’ বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে জগন্নাথদিঘি পাক বাহিনীর ক্যাম্পে বিভিন্ন দিক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়। মুক্তিবাহিনীর গোলাবর্ষণে টিকতে না পেরে ক্যাপ্টেন জং তাঁর বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যায়। জগন্নাথদিঘি ইপিআর ক্যাম্পে জসিম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন করেন। এ পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে তা আনুষ্ঠানিক মুক্তাঞ্চল বলে গণ্য হয়। বৃহত্তর কুমিল্লায় আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘটনা এটাই প্রথম।’

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করছেন, স্মৃতিবিজড়িত ওই এলাকায় স্মৃতিতোরণ, মুক্তিযোদ্ধা পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় বহু আগেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি। ১৯৯৩ সালে কুমিল্লার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাতেবুর রহমান স্মৃতিতোরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর সেখানে আর কিছুই হয়নি। এ অবস্থায় দ্রুত সেখানে স্মৃতিতোরণ নির্মাণ করা হোক।

জগন্নাথদিঘি কুমিল্লা অঞ্চলের প্রথম মুক্ত এলাকা। এ দিন মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পাক বাহিনী ও তাঁদের দোসররা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, প্রতিবছর দিনটি ঘটা করে পালন করা হতো। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় জগন্নাথদিঘি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিদর্শনে যান। মুক্তিযোদ্ধে জগন্নাথ দিঘি এক উল্লেখযোগ্য স্থান।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা, সচেতনতা, প্রতিরোধ ও করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

২

কুমিল্লা -৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

৩

বরুড়ার প্রথম শহীদ মিনারের স্মৃতি কথা

৪

বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল

৫

কুমিল্লার শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তাক আহমেদের দাফন বাদ জোহর

সম্পর্কিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা, সচেতনতা, প্রতিরোধ ও করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা, সচেতনতা, প্রতিরোধ ও করণীয় বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত

৮ ঘণ্টা আগে
কুমিল্লা -৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

কুমিল্লা -৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

৮ ঘণ্টা আগে
বরুড়ার প্রথম শহীদ মিনারের স্মৃতি কথা

বরুড়ার প্রথম শহীদ মিনারের স্মৃতি কথা

৯ ঘণ্টা আগে
বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল

বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল

১১ ঘণ্টা আগে