কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১ জুলাই ওরিয়েন্টেশনের দিন থেকেই তাদেরকে র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে। তাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ চলে মানসিক নির্যাতন। পরিচয়পর্ব শেখানোর নামে তাদেরকে শুরুর দিন থেকে চলেছে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে একটানা নির্যাতন। বাধ্য করা হয়েছে সিগারেট খাওয়ার জন্য, ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীদের এমন আচরণে ক্লাসরুমে কান্না করতে বাধ্য হয়েছে কয়েকজন মেয়ে। এরই মধ্যে একজন ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন এমন একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী অভিযুক্ত কয়েকজন হলেনু ওলিউল্ল্যাহ, তিশা, মুনতাসীর, অরবিন্দু সরকার, রাফি প্রমুখ।
এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, 'প্রথম দিন থেকেই দরজা আটেক পরিচয় পর্বের নামে নির্যাতন করা হয়। ক্লাস রুমে অনেক বাজে ব্যবহার করে, তুই-তুকারি করে, একটা মেয়ে কান্নাও করে দেয়। তারপরের দিন বিকাল ৪ টায় ডাকে। ডেকে খুবই অপমান করে। আমাকে সিগারেট খাওয়ার কথা বলে, সিনিয়র আপুকে প্রপোজ করতে বলে।'
তিনি আরো জানান, 'বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) আমাকে তালতলায় (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরে একটি স্থান) নিয়ে যায়। সেখানে অলিউল্যাহ আর অরবিন্দু আমাকে র্যাগ দেয়। আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পরেছি, জ্বর উঠে গিয়েছিলো আমার।'
নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, 'ওরিয়েন্টেশনের দিন স্যাররা যাওয়ার পর সিনিয়ররা দরজা বন্ধ করে আমাদের পরিচয় পর্বের নামে মানসিক নির্যাতন করেন। গালাগালি করেন। একজন প্রতিবাদ করলে তাকে মার্ক করে রাখেন। ওকে আগেরদিনই ইন্ডিকেট করে রেখেছিল, সিনিয়র ভাইয়েরা রুমে এসে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রেখেছিল।'
তিনি বলেন, 'একটা আপু ছিল তিশা আপু ইমিডিয়েট সিনিয়র, এসে বলেছে আই কনট্যাক্ট কর। ও একটু হুজুর টাইপের তো, ও আই কনট্যাক্ট করে নাই। এজন্য ওকে একটা অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিছে। রুমে এসি ঠিক করতে যারা আসছিলেন তারাও এ বিষয়টি দেখেছেন।'
তিনি আরো বলেন, 'সিনিয়ররা তালতলা মোড়ে ওদের রাত একটা পর্যন্ত আটকে রেখে বকাঝকা করেছে। এরপর পরেরদিন চারটার দিকে হলে ডেকে নিয়ে হলে বকাবকি করেছে। ওর সাথে আমাদের মারুফ, রাকিব ছিল।'
অভিযুক্তদের একজন ওলিউল্ল্যাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'এমনকিছু ঘটেনি, আমরা কিছু করেনি। সবকিছু মিথ্যা অভিযোগ, ভিত্তিহীন।'
অভিযুক্ত অরবিন্দু সরকারও অস্বীকার করে বলেন, 'ঐদিন র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা শুধু তাদের সাথে পরিচিত হয়েছি। রাতের আঁধারে তালতলায় নিয়ে যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি, আমরা অলিভাইয়ের দোকান পর্যন্ত গিয়েছিলাম।'
আরেক অভিযুক্ত মুনতাসির বলেন, 'আমাদের ১৯ ব্যাচের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) অরিয়েন্টেশন সম্পন্নের পর আমরা (২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীরা) তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করার জন্য নিয়ে বসছিলাম। সেখানে ১৯ ব্যাচের একটি মেয়ে আমার ফ্রেন্ড তানজিনা আক্তারের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) সাথে খারাপ ব্যবহার করে। পরে ও (তানজিনা) হয়তো কিছু একটা বলছিলো, বলার পরে ১৯ ব্যাচের মেয়েটি কান্না করে দিছিলো। পরে আমি তার কাছে গিয়ে তাকে বুঝালাম, এরপর সমস্যাটি সমাধান হয়ে গেছে। বাকি অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।'
অভিযুক্ত তিশাকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এনিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরিন বলেন, 'র্যাগিংয়ের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ সেটির সাথে থাকবে এবং মেনে নিবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আবদুল হাকিম বলেন, 'বিষয়টি আমরা জেনেছি। আগামীকাল বিভাগীয় প্রধান এবং ছাত্র পরামর্শককে নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, এর আগে মার্কেটিং বিভাগ এবং বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে একই বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মার্কেটিং বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১ জুলাই ওরিয়েন্টেশনের দিন থেকেই তাদেরকে র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে। তাদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ চলে মানসিক নির্যাতন। পরিচয়পর্ব শেখানোর নামে তাদেরকে শুরুর দিন থেকে চলেছে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে একটানা নির্যাতন। বাধ্য করা হয়েছে সিগারেট খাওয়ার জন্য, ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীদের এমন আচরণে ক্লাসরুমে কান্না করতে বাধ্য হয়েছে কয়েকজন মেয়ে। এরই মধ্যে একজন ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন এমন একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী অভিযুক্ত কয়েকজন হলেনু ওলিউল্ল্যাহ, তিশা, মুনতাসীর, অরবিন্দু সরকার, রাফি প্রমুখ।
এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, 'প্রথম দিন থেকেই দরজা আটেক পরিচয় পর্বের নামে নির্যাতন করা হয়। ক্লাস রুমে অনেক বাজে ব্যবহার করে, তুই-তুকারি করে, একটা মেয়ে কান্নাও করে দেয়। তারপরের দিন বিকাল ৪ টায় ডাকে। ডেকে খুবই অপমান করে। আমাকে সিগারেট খাওয়ার কথা বলে, সিনিয়র আপুকে প্রপোজ করতে বলে।'
তিনি আরো জানান, 'বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) আমাকে তালতলায় (বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরে একটি স্থান) নিয়ে যায়। সেখানে অলিউল্যাহ আর অরবিন্দু আমাকে র্যাগ দেয়। আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পরেছি, জ্বর উঠে গিয়েছিলো আমার।'
নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, 'ওরিয়েন্টেশনের দিন স্যাররা যাওয়ার পর সিনিয়ররা দরজা বন্ধ করে আমাদের পরিচয় পর্বের নামে মানসিক নির্যাতন করেন। গালাগালি করেন। একজন প্রতিবাদ করলে তাকে মার্ক করে রাখেন। ওকে আগেরদিনই ইন্ডিকেট করে রেখেছিল, সিনিয়র ভাইয়েরা রুমে এসে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রেখেছিল।'
তিনি বলেন, 'একটা আপু ছিল তিশা আপু ইমিডিয়েট সিনিয়র, এসে বলেছে আই কনট্যাক্ট কর। ও একটু হুজুর টাইপের তো, ও আই কনট্যাক্ট করে নাই। এজন্য ওকে একটা অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিছে। রুমে এসি ঠিক করতে যারা আসছিলেন তারাও এ বিষয়টি দেখেছেন।'
তিনি আরো বলেন, 'সিনিয়ররা তালতলা মোড়ে ওদের রাত একটা পর্যন্ত আটকে রেখে বকাঝকা করেছে। এরপর পরেরদিন চারটার দিকে হলে ডেকে নিয়ে হলে বকাবকি করেছে। ওর সাথে আমাদের মারুফ, রাকিব ছিল।'
অভিযুক্তদের একজন ওলিউল্ল্যাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'এমনকিছু ঘটেনি, আমরা কিছু করেনি। সবকিছু মিথ্যা অভিযোগ, ভিত্তিহীন।'
অভিযুক্ত অরবিন্দু সরকারও অস্বীকার করে বলেন, 'ঐদিন র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা শুধু তাদের সাথে পরিচিত হয়েছি। রাতের আঁধারে তালতলায় নিয়ে যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি, আমরা অলিভাইয়ের দোকান পর্যন্ত গিয়েছিলাম।'
আরেক অভিযুক্ত মুনতাসির বলেন, 'আমাদের ১৯ ব্যাচের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) অরিয়েন্টেশন সম্পন্নের পর আমরা (২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীরা) তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করার জন্য নিয়ে বসছিলাম। সেখানে ১৯ ব্যাচের একটি মেয়ে আমার ফ্রেন্ড তানজিনা আক্তারের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) সাথে খারাপ ব্যবহার করে। পরে ও (তানজিনা) হয়তো কিছু একটা বলছিলো, বলার পরে ১৯ ব্যাচের মেয়েটি কান্না করে দিছিলো। পরে আমি তার কাছে গিয়ে তাকে বুঝালাম, এরপর সমস্যাটি সমাধান হয়ে গেছে। বাকি অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।'
অভিযুক্ত তিশাকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
এনিয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরিন বলেন, 'র্যাগিংয়ের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে নৃবিজ্ঞান বিভাগ সেটির সাথে থাকবে এবং মেনে নিবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: আবদুল হাকিম বলেন, 'বিষয়টি আমরা জেনেছি। আগামীকাল বিভাগীয় প্রধান এবং ছাত্র পরামর্শককে নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
উল্লেখ্য, এর আগে মার্কেটিং বিভাগ এবং বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে একই বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মার্কেটিং বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কুমিল্লার মুরাদনগরে ‘মব’ সৃষ্টি করে একই পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
৯ ঘণ্টা আগে