বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য কর্ণেল (অব:) এম আনোয়ারুল আজিম বলেছেন, আওয়ামীলীগ নির্বাচনের নামে রাতের বেলায় করেছে ভোট চুরি। আর এখন লাকসাম-মনোহরগঞ্জে বিএনপি কাউন্সিলের নামে করছে দিন-দুপুরে ভোট ডাকাতি। সাদাকে সাদা,কালোকে কালো বলতেই হবে। মনোহরগঞ্জে একটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিলে ভোটার হলো ১৮৬ জন। অথচ ভোট পড়েছে ২০৬টি!

কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) সংসদীয় আসনে যাঁরা ২০০৮ সালে নৌকায় চড়ে বিএনপিকে হারিয়েছে। ওই চক্রটিই এখন আবার আওয়ামীলীগকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। বিএনপিতে বিভাজন সৃষ্টি করছে। আমরা বিভাজন চাই না। যাঁরা দলে বিভাজন করতে চায়। যে কোনো মূল্যে তাঁদের প্রতিহত করতে হবে।

শনিবার (৩মে) লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব:) এম আনোয়ারুল আজিম কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) সংসদীয় আসনে বিএনপির অপরাংশের নেতৃত্বে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. আবুল কালাম (চৈতী কালাম) এবং তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এসব মন্তব্য করেন।

কর্ণেল আজিম বলেন, বিগত ১৭ বছরে আওয়ামীলীগের দু:শাসন, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে আমরা যেখানে লড়াই-সংগ্রাম করেছি। দলের দু:সময়েও কারো সঙ্গে আঁতাত.কিংম্বা আপোষ করিনি। অথচ লাকসাম-মনোহরগঞ্জে একটি চক্র আওয়ামীলীগের সঙ্গে এখন আঁতাত করছে। সাজানো বিএনপিকে বর্তমানে দলের অপনেতৃত্বের কারণে খন্ড বিখন্ড করে রেখেছে। উপজেলা দু'টির বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. আবদুল হাই চেয়ারম্যান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফ হোসেন চেয়ারম্যান, সাবেক আহবায়ক আবু ইউসুফ ভূঁইয়া, লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির,লাকসাম পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিন, মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা খাজা আহমেদ, ইসমাইল হোসেন, এ এস এম কামরুল বারী মামুন, যুবদল নেতা দিদার হোসেন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, আবুল বাশার, মোরশেদ আলম মুশু, লাকসাম উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন সাকিব, ছাত্রদল নেতা ওমর ফারুক জিসান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা লাকসাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামকে (চৈতী কালাম) উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। মানি লন্ডারিংয়ের সাথে জড়িত। এমন কাউকে আমরা বিএনপির নেতৃত্বে চাইনা। আমাদের নেতা হবেন নিট এন্ড ক্লিন। যারা ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দিয়ে পূণর্বাসন করে তাদের নেতৃত্ব আমরা চাই না।

কর্ণেল (অব:) আজিম বলেন, বিএনপির এক ও অভিন্ন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১দফা বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাঙালী জাতিকে ক্ষুধা,দারিদ্রমুক্ত ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি আরো বলেন, আমরা মানুষ হয়ে বেঁচে থাকতে চাই; আওয়ামীলীগ হয়ে নয়। যাঁরা আওয়ামীলীগের সঙ্গে আঁতাত করে দলে বিভাজন সৃষ্টি করছে। নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি, রক্তপাত ঘটাচ্ছে এবং সন্ত্রাস-নৈরাজ্যে চালাচ্ছে। বিষয়টি বিএনপির বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল নেতাদের অবগত করা হবে।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও দেশ নায়ক তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি'র ৩১দফা বাস্তবায়নে স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহবান জানান।

একইদিন সকালে বিএনপি আয়োজিত উপজেলার লাকসাম (পূর্ব) ইউনিয়নের নরপাটি এবং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ইছাপুরায় পৃথক দু'টি পথসভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।