নবজাতকসহ বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর ঠাঁই হলো স্বামী পরিত্যক্তা ভিক্ষুকের ঘরে

দেবীদ্বার প্রতিনিধি
Thumbnail image

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সহজসরল মেয়েটির বাড়ি কোথায়, কোথা থেকে এসেছেন, কোনো কিছুই বলতে পারছেন না। পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গত ৩-৪ মাস আগে গর্ভবতী পাগল মেয়েটিকে আশ্রয় দেন স্বামী পরিত্যক্তা এক ভিক্ষুক। সেবাযত্নে লালন পালন করছেন। সেখানেই বুধবার রাতে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েটি।

তার আশ্রয়দাত্রী দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ঘোষঘর গ্রামের আয়েশা বেগম। নিজেও ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্বামী পরিত্যক্তা। থাকেন বাবার বাড়িতে। আয়েশা বেগম উপজেলার ঘোষঘর গ্রামের প্রয়াত আব্দুল হাকীম মুন্সির মেয়ে। ৩-৪ মাস আগে সরকারি অনুদানের কম্বল আনতে গিয়ে পথে পাগলের সাথে দেখা। রাস্তায় মাটি খাচ্ছে দেখে তিনি তার বাড়িতে আশ্রয় দেন। এলাকার মানুষ বিভিন্ন কথা বললেও নিজের মানবিক দৃষ্টিকোণ দেখে দায়িত্ব নেন পাগলিটির।

বুধবার দিবাগত রাতে প্রতিবন্ধী আকলিমা কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ আছে। তবে এর পেছনে কৃতিত্ব আশ্রয়দাতা বিধবা আয়েশা বেগমের। একজন প্রতিবন্ধীকে শত কষ্টের মাঝেও লালন করছেন। প্রতিদিন অস্বাভাবিক আচরণের করত পাগলিটি। মারধর করত আয়েশা বেগমকে। পাগলির মারধর ও অস্বাভাবিক আচরণের পরও তাকে আশ্রয়হীন করেননি আয়েশা।

আয়েশা বেগম জানান, তার স্বামী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি পাগলি মেয়েটিকে আশ্রয় দেন। প্রতিদিন তাকে কিল, ঘুসি ও থাপ্পড়, মারধর করত আকলিমা।

তিনি আরো জানান, পরিচয়হীন পাগলিটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। এখন আমি বিপাকে আছি পাগলি ও তার সন্তান নিয়ে। আমি চাই সরকার তার দায়িত্ব গ্রহণ করুক।

এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসনাত খান বলেন, আগে থেকেই উপজেলা প্রশাসন পাগলির আশ্রয়দাতা আয়েশাকে সহযোগিতা করছে। আজ সাংবাদিকদের মাধ্যমে বেওয়ারিশ পাগলির কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার খবর পেয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণ করা হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত