স্থিতিশীলতার পরীক্ষা
সম্পাদকীয়

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি আমদানির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাজারে এই মৌসুমি চাহিদার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। ব্যবসায়ীরা এখন থেকেই আমদানির ঋণপত্র খুলতে শুরু করায় ডলারের চাহিদা বাড়ছে, ফলে বিনিময় হারও উর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এলসি খোলার পরিমাণ ৬.৩০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের মাসের তুলনায় ১৭ শতাংশের বেশি। এতে ডলারের দাম আন্তব্যাংক বাজারে ১২২ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং বাজারে স্থিতি বজায় রাখতে প্রস্তুত। বাজারকে স্বাধীনভাবে মূল্য নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হলেও প্রয়োজনে হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি রয়েছে।
তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আমদানি বাড়লেও রপ্তানি আয় ও বিনিয়োগে স্থবিরতা থাকলে এই চাপ রিজার্ভে টান ফেলতে পারে। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন যথার্থই বলেছেন-বর্তমান রিজার্ভ বৃদ্ধি মূলত চাহিদা কমে যাওয়ার প্রতিফলন, জোগান বৃদ্ধির নয়। প্রবাসী আয় বাড়লেও রপ্তানি আয়ে ধারাবাহিক পতন উদ্বেগজনক। জুলাইয়ে যেখানে রপ্তানি ছিল ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে তা নেমে এসেছে ৩.৬০ বিলিয়নে।
রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা সাময়িক স্বস্তি দিচ্ছে, তবে টেকসই রিজার্ভ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী বিনিয়োগে গতি ফিরিয়ে আনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, রিজার্ভ বর্তমানে ৩২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি-যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। গত বছরের তুলনায় এ অগ্রগতি প্রশংসনীয়। তবে রমজানপূর্ব সময়ে আমদানির চাপ বাড়লে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে এই রিজার্ভ ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও এখানে বড় ভূমিকা রাখবে।
বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তা দেখলে ব্যয় ও আমদানি সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেন, যা অর্থনীতির প্রবাহকে ব্যাহত করে। সুতরাং অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত রাখা জরুরি। ডলার বাজারের স্থিতি শুধু আমদানি খাতের নয়, সামগ্রিক মুদ্রানীতিরও পরীক্ষার ক্ষেত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে মুদ্রানীতির স্বচ্ছতা ও পূর্বাভাসনির্ভর সিদ্ধান্ত বজায় রাখা, যাতে বাজারে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক না ছড়ায়। একই সঙ্গে রপ্তানি বৈচিত্র্য বৃদ্ধি, প্রবাসী আয়ের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলকে উৎসাহ দেওয়া ও জ্বালানি আমদানির বিকল্প উৎস নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
রমজানের আগে অর্থনীতি যেন জোগান সংকটে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ নয়-এটি বাণিজ্য, অর্থ ও পররাষ্ট্রনীতির সমন্বিত দায়িত্ব। স্বল্পমেয়াদি ডলার স্থিতির চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ভারসাম্যই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি আমদানির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাজারে এই মৌসুমি চাহিদার প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে। ব্যবসায়ীরা এখন থেকেই আমদানির ঋণপত্র খুলতে শুরু করায় ডলারের চাহিদা বাড়ছে, ফলে বিনিময় হারও উর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এলসি খোলার পরিমাণ ৬.৩০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের মাসের তুলনায় ১৭ শতাংশের বেশি। এতে ডলারের দাম আন্তব্যাংক বাজারে ১২২ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং বাজারে স্থিতি বজায় রাখতে প্রস্তুত। বাজারকে স্বাধীনভাবে মূল্য নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হলেও প্রয়োজনে হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি রয়েছে।
তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আমদানি বাড়লেও রপ্তানি আয় ও বিনিয়োগে স্থবিরতা থাকলে এই চাপ রিজার্ভে টান ফেলতে পারে। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন যথার্থই বলেছেন-বর্তমান রিজার্ভ বৃদ্ধি মূলত চাহিদা কমে যাওয়ার প্রতিফলন, জোগান বৃদ্ধির নয়। প্রবাসী আয় বাড়লেও রপ্তানি আয়ে ধারাবাহিক পতন উদ্বেগজনক। জুলাইয়ে যেখানে রপ্তানি ছিল ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে তা নেমে এসেছে ৩.৬০ বিলিয়নে।
রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা সাময়িক স্বস্তি দিচ্ছে, তবে টেকসই রিজার্ভ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী বিনিয়োগে গতি ফিরিয়ে আনা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, রিজার্ভ বর্তমানে ৩২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি-যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। গত বছরের তুলনায় এ অগ্রগতি প্রশংসনীয়। তবে রমজানপূর্ব সময়ে আমদানির চাপ বাড়লে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানি মূল্যের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে এই রিজার্ভ ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও এখানে বড় ভূমিকা রাখবে।
বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তা দেখলে ব্যয় ও আমদানি সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেন, যা অর্থনীতির প্রবাহকে ব্যাহত করে। সুতরাং অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত রাখা জরুরি। ডলার বাজারের স্থিতি শুধু আমদানি খাতের নয়, সামগ্রিক মুদ্রানীতিরও পরীক্ষার ক্ষেত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে মুদ্রানীতির স্বচ্ছতা ও পূর্বাভাসনির্ভর সিদ্ধান্ত বজায় রাখা, যাতে বাজারে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক না ছড়ায়। একই সঙ্গে রপ্তানি বৈচিত্র্য বৃদ্ধি, প্রবাসী আয়ের আনুষ্ঠানিক চ্যানেলকে উৎসাহ দেওয়া ও জ্বালানি আমদানির বিকল্প উৎস নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
রমজানের আগে অর্থনীতি যেন জোগান সংকটে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ নয়-এটি বাণিজ্য, অর্থ ও পররাষ্ট্রনীতির সমন্বিত দায়িত্ব। স্বল্পমেয়াদি ডলার স্থিতির চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ভারসাম্যই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।