কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মায়ের স্মরণে কালো ব্যাজ ধারণ ও বিচার দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
Thumbnail image

সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোকাহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। নিহত মা-মেয়ের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারী-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কালো ব্যাজ ধারণসহ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সকলের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন শুরু হয় এবং নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

এর আগে গতকাল সোমবার নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোকাবহ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল সাড়ে দশটায় কালো ব্যাজ ধারণ এবং দুপুর ১২টার পর থেকে সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

আজকের মানববন্ধনের সঞ্চালনায় ছিলেন বিজয়-২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান খান। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছা. শামসুন্নাহার প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিহত সুমাইয়া আফরিনের সহপাঠীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোছা. শামসুন্নাহার বলেন, 'সুমাইয়া আফরিন আমার বিভাগের অত্যন্ত ভদ্র, মেধাবী ও নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী ছিল। ক্লাসে সে প্রথম ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই তার খাতা প্রথমেই দেখা হতো। তার বাবার মৃত্যুর পর সে ডিপ্রেশনে চলে যায়। তার ভাই যখন আমাকে বিষয়টা জানায়, তখন আমি তাকে যেভাবে কাউন্সেলিং করা দরকার, তাকে সেভাবে কাউন্সেলিং করি। আমি কখনো ভাবতে পারিনি যে আজকে এরকমভাবে আমাদের দাঁড়াতে হবে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।'

তিনি আরো বলেন, 'আসলে আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানতুল্য। আমরা হয়তো বলে বুঝাতে পারি না। আজ সুমাইয়াকে হারিয়ে আমার বিভাগ কতটা শোকাহত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি সুমাইয়া ও তার মায়ের হত্যাকারীদের দ্রুত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, 'সুমাইয়ার মৃত্যু খবর শোনার সাথে সাথেই আমাদের প্রক্টরকে পাঠিয়েছিলাম। এরপর আমরা সবাই গিয়েছি। এটা খুবই মর্মান্তিক একটা ঘটনা। আমি যতটুকু সম্ভব সুমাইয়ার ভাইদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এরপর মর্গে গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব লাশ তাদের পরিবারে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।'

তিনি আরো বলেন, 'আমরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা চাই সমাজের মানুষ তাদের পরিবারের সাথে সুখে-শান্তিতে থাকুক। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের শাস্তি দাবি করছি।'

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সকালে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের লাশ কুমিল্লা শহরের খালিয়াজুরীর ভাড়া বাসা উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত