মেয়ের ভালো ফলাফলেও হাসি নেই রিকশাচালক বাবার মুখে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১১: ৫২
Thumbnail image

বাবা রিকশা চালক আবদুল কাদের। মেয়ে কোহিনুর আক্তার। এবার সে এসএসসিতে সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেছেন। সে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। উপজেলার সেরা বিতার্কিকদের একজন। ইংরেজি উচ্চারণও বেশ। মেয়েটি হতে চান চিকিৎসক। তবে তার লেখাপড়ার খরচ জোগানো পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মেয়ের ভালো ফলাফলেও মুখে হাসি নেই বাবার। মেয়েকে আর লেখা পড়া করাতে পারবেন কি না এ নিয়ে তিনি অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন। বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়,লাকসাম উপজেলার গ্রামের একটি স্কুল উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়। তার থেকে দুই কিলোমিটার দূরে খিলপাড়া গ্রাম। সেই গ্রামের আবদুল কাদের ও রেহানা বেগম দম্পতির ২ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে কোহিনুর মেজ। সে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। ৭ম থেকে তার ক্লাস রোল ১।

কোহিনুর আক্তার বলেন, বাবার তেমন সামর্থ্য নেই। দুপুরে খাবারের জন্য কিছু টাকা পেতাম। তা দুই মাস না খেয়ে জমিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে এক মাস প্রাইভেট পড়েছি। পরে টাকা না থাকায় আর প্রাইভেটে যাইনি। এদিকে কতদিন দুপুরে কিছু না খেয়ে থাকা যায়? পরে প্রাইভেটে না যাওয়ায় স্যাররা কারণ জানতে চান। টাকা না থাকার কথা বলায় তারা বিনামূল্যে পড়িয়েছেন। আল্লাহর রহমত, বাবা-মায়ের দোয়া আর স্যারদের সহযোগিতায় এ রেজাল্ট পেয়েছি। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চাই। কারণ আমার গ্রামে একটি মাত্র ফার্মেসি আছে। কেউ অসুস্থ হলে দূরে লাকসাম নিতে হয়। চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করতে চাই।

আবদুল কাদের বলেন, আমার যে আয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। সেখানে কীভাবে মেয়েকে আরো পড়ালেখা করবে তা নিয়ে টেনশনে রয়েছি। সহযোগিতা পেলে মেয়েটিকে আরো পড়াতে পারব।

উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. মাসুদুল হক বলেন, কোহিনুর মেধাবী শিক্ষার্থী। সে মোট ১১৯৩নম্বর পেয়ে এসএসসি পাস করেছে। তার বাবার পক্ষে মেয়ের লেখাপড়ায় জোগান দেয়া দুষ্কর। সে সহযোগিতা পেলে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত