অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল করিম

স্বনামধন্য প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. যোবায়দা হান্নান-এর পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলায় হলেও আমৃত্যু কুমিল্লার চিকিৎসা সেবাসহ শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে নিবেদিত ছিলেন। যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৬৫ সালে স্থাপন করেন 'যোবায়দা ক্লিনিক' যা ছিলো প্রসূতি ও নারীর আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রসূতি ও নারীর মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার অনুপস্থিতি ও নানান কুসংস্কার প্রচলিত সমাজে ডা. যোবায়দা হান্নানের ক্লিনিক ছিলো একটি আলোক বর্তিকা। পরবর্তীকালে তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কুমিল্লা ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতালসহ বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতি ও চক্ষু হাসপাতাল। নারীর শিক্ষা প্রসারে স্বামী ডা. ওয়ালীউল্লাহ'র বাড়ি নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকোটা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন ডা. যোবায়দা হান্নান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যা বর্তমানে ডা. যোবায়দা হান্নান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। যোবায়দা হান্নান ধর্মীয় কাজেও বেশ উৎসাহী ছিলেন। তিনি তাঁর বাসগৃহে প্রতি সপ্তাহে মহিলাদের নিয়ে একটি মহিলা মাহফিল পরিচালনা করতেন। এতে ইসলাম ধর্মের অনেক বিষয়াদি জেনে মহিলারা উপকৃত হতো। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও মোহনীয় ব্যাক্তিত্বের অধিকারী ডা. যোবায়দা হান্নান সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাসহ শিক্ষা প্রসার, নারীর অধিকার, ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও এনজিও'র সাথেও সংশ্লিষ্ট থেকেছেন।
তিনি স্কাউট আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)-এ চাকরির সুবাদে আমি দেখেছি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে আগত নারী প্রশিক্ষণার্থীদের স্বাস্থ্য-পুষ্টি সচেতনতা সৃষ্টি ও চিকিৎসা বিষয়ে রিসোর্স পারসন হিসেবে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতেন। শুনেছি সন্তান কোলে নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের গল্প। ডা. যোবায়দা হান্নান বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানবিক মানুষ। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাঁর বাসা ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল এবং স্বাধীনতা উত্তর কুমিল্লার সামাজিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা। তিনি অর্জন করেছেন জাতীয় পুরস্কার ও পদক। কুমিল্লার চিকিৎসা, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে ডা. যোবায়দা হান্নান তাঁর অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কুমিল্লার বিশিষ্ট ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, সাংবাদিক শ্রদ্ধাভাজন আবুল হাসানাত বাবুল ভাই সযত্নে মহীয়সী ডা. যোবায়দা হান্নানের জীবন ও কর্ম নিয়ে যে জীবনী গ্রন্থ রচনা করেছেন তার মাধ্যমে ডা. যোবায়দা হান্নানকে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে এবং ডা. যোবায়দা হান্নানের প্রতি কুমিল্লার মানুষের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে। আমিও এ জীবনী গ্রন্থের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল করিম: সাবেক চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, কুমিল্লা

স্বনামধন্য প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. যোবায়দা হান্নান-এর পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলায় হলেও আমৃত্যু কুমিল্লার চিকিৎসা সেবাসহ শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে নিবেদিত ছিলেন। যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৬৫ সালে স্থাপন করেন 'যোবায়দা ক্লিনিক' যা ছিলো প্রসূতি ও নারীর আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রসূতি ও নারীর মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার অনুপস্থিতি ও নানান কুসংস্কার প্রচলিত সমাজে ডা. যোবায়দা হান্নানের ক্লিনিক ছিলো একটি আলোক বর্তিকা। পরবর্তীকালে তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কুমিল্লা ডায়াবেটিক সমিতি ও হাসপাতালসহ বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতি ও চক্ষু হাসপাতাল। নারীর শিক্ষা প্রসারে স্বামী ডা. ওয়ালীউল্লাহ'র বাড়ি নাঙ্গলকোট উপজেলার আশারকোটা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন ডা. যোবায়দা হান্নান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যা বর্তমানে ডা. যোবায়দা হান্নান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। যোবায়দা হান্নান ধর্মীয় কাজেও বেশ উৎসাহী ছিলেন। তিনি তাঁর বাসগৃহে প্রতি সপ্তাহে মহিলাদের নিয়ে একটি মহিলা মাহফিল পরিচালনা করতেন। এতে ইসলাম ধর্মের অনেক বিষয়াদি জেনে মহিলারা উপকৃত হতো। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও মোহনীয় ব্যাক্তিত্বের অধিকারী ডা. যোবায়দা হান্নান সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাসহ শিক্ষা প্রসার, নারীর অধিকার, ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও এনজিও'র সাথেও সংশ্লিষ্ট থেকেছেন।
তিনি স্কাউট আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)-এ চাকরির সুবাদে আমি দেখেছি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে আগত নারী প্রশিক্ষণার্থীদের স্বাস্থ্য-পুষ্টি সচেতনতা সৃষ্টি ও চিকিৎসা বিষয়ে রিসোর্স পারসন হিসেবে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতেন। শুনেছি সন্তান কোলে নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের গল্প। ডা. যোবায়দা হান্নান বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানবিক মানুষ। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাঁর বাসা ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল এবং স্বাধীনতা উত্তর কুমিল্লার সামাজিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা। তিনি অর্জন করেছেন জাতীয় পুরস্কার ও পদক। কুমিল্লার চিকিৎসা, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে ডা. যোবায়দা হান্নান তাঁর অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কুমিল্লার বিশিষ্ট ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক, সাংবাদিক শ্রদ্ধাভাজন আবুল হাসানাত বাবুল ভাই সযত্নে মহীয়সী ডা. যোবায়দা হান্নানের জীবন ও কর্ম নিয়ে যে জীবনী গ্রন্থ রচনা করেছেন তার মাধ্যমে ডা. যোবায়দা হান্নানকে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে এবং ডা. যোবায়দা হান্নানের প্রতি কুমিল্লার মানুষের ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে। আমিও এ জীবনী গ্রন্থের সাথে সংশ্লিষ্ট হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল করিম: সাবেক চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, কুমিল্লা