অধ্যাপক ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ
বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের মত হচ্ছে, বাংলাদেশে নির্মাণ শিল্পে যে বিল্ডিং কোড অনুসরণ হয় তা বর্তমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে বিল্ডিং কোড বিএনবিসি ২০২০ হিসাবে গেজেট হয়েছে তা মূলতঃ এসিআই ৩১৮-৮০ ভার্সনকে অনুসরণ করা হয়েছে। ফলে নির্মাণের নতুন উপকরণের ব্যবহারের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে, যা প্রকৌশলীদের বিভ্রান্ত করছে। এতে করে খরচ যেমন বাড়ছে তেমনি এ শিল্পে নানাহ দিকে পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএনবিসি সর্বশেষ ২০২০ সালে ‘এসিআই ৩১৮-০৮’ করে হালনাগাদ করা হয়। উন্নত বিশ্বে বিল্ডিং কোড ‘এসিআই ৩১৮-২৫’ অনুসরণ করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে শক্তি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণের উপর বিশ্বব্যাপী গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
নতুন এবং উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী প্রচলিত উপকরণের চাইতে অনেক সাশ্রয়ী, কার্যকর এবং টেকসই হয়। নিয়মিত কোড আপডেটের মাধ্যমে নির্মাণ শিল্পে আধুনিক উপকরণের ব্যবহারকে উৎসাহ দেয়া হয়। একই সঙ্গে নির্মাণ খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। অথচ উল্টোপথে হাঁটছে বাংলাদেশ। দেশের সকল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এখনো বিএনবিসি - ২০২০ সালের কোড ব্যবহার করছে। এমনকি কেউ কেউ বিএসবিসি - ২০০৬ সালের কোড অনুসরণ করছে, যা লেখা হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। পুরোনো এ কোডগুলো বর্তমান সময়ের নির্মাণসামগ্রী প্রযুক্তি এবং ডিজাইন দর্শন থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। পুরোনো বিল্ডিং কোড অনুসরণ করায় নতুন প্রকৌশলীদের মাঝে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ফলে কাঠামোর নকশাও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্টিল-কংক্রীট কম্পোজিট কাঠামোর উন্নত মানের শক্তি, সাশ্রয়ী উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ কমে যাচ্ছে। নির্মাতারা বাধ্য হচ্ছেন সনাতনী ও ব্যয়বহুল নির্মাণ পদ্ধতির উপর নির্ভর করতে।
পুরোনো কোডে নির্মিত ভবনগুলোর বাসিন্দাদের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ও আলোকায়নে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এছাড়াও পুরোনো কোড স্থপতি ও প্রকৌশলীদের নকশার স্বাধীনতাকে সীমিত করে, পরোক্ষভাবে বাড়ে প্রকল্প ব্যয়। নির্মাণ শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এডমিনিষ্ট্রেশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট, জেনারেল বিল্ডিং রিকোয়ারম্যান্টস, কন্ট্রোল এন্ড বিকোয়াজ্যান্ট ও ফায়ার প্রটেকনের মত বিষয়ে আইন হওয়া উচিত, কিন্তু নকশা ও নির্মাণের বিষয়টি গবেষণাভিত্তিক, যা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়। এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করার মত বিষয় নয়। সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বিল্ডিং কোডের কতটুকু অংশ গেজেট হবে আর কতটুকু হবে না ।
পুরোনো কোড অনুসরণ করেই চলত দেশের নির্মাণ শিল্প। এতে নির্মিত ভবনগুলো শুধু নিরাপত্তাকেই ঝুঁকিতে ফেলছে না, নির্মাণ ব্যয়ও অনেকখানি বাড়িয়ে দিচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশগুলো নিয়মিত বিল্ডিং কোড সংশোধন করে আধুনিক, সাশ্রয়ী নির্মাণ প্রযুক্তি ও সামগ্রী ব্যবহার করছে। সেখানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) পরিবর্তনের দীর্ঘসূত্রিতা এ শিল্পকে পিছিয়ে রাখছে এবং খরচ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে। ফলে দেশে নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে ৩০ শতাংশ বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। (সংগৃহিত)
অধ্যাপক ডা: মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ।
বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগের মত হচ্ছে, বাংলাদেশে নির্মাণ শিল্পে যে বিল্ডিং কোড অনুসরণ হয় তা বর্তমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে বিল্ডিং কোড বিএনবিসি ২০২০ হিসাবে গেজেট হয়েছে তা মূলতঃ এসিআই ৩১৮-৮০ ভার্সনকে অনুসরণ করা হয়েছে। ফলে নির্মাণের নতুন উপকরণের ব্যবহারের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে, যা প্রকৌশলীদের বিভ্রান্ত করছে। এতে করে খরচ যেমন বাড়ছে তেমনি এ শিল্পে নানাহ দিকে পিছিয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিএনবিসি সর্বশেষ ২০২০ সালে ‘এসিআই ৩১৮-০৮’ করে হালনাগাদ করা হয়। উন্নত বিশ্বে বিল্ডিং কোড ‘এসিআই ৩১৮-২৫’ অনুসরণ করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে শক্তি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণের উপর বিশ্বব্যাপী গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
নতুন এবং উন্নতমানের নির্মাণসামগ্রী প্রচলিত উপকরণের চাইতে অনেক সাশ্রয়ী, কার্যকর এবং টেকসই হয়। নিয়মিত কোড আপডেটের মাধ্যমে নির্মাণ শিল্পে আধুনিক উপকরণের ব্যবহারকে উৎসাহ দেয়া হয়। একই সঙ্গে নির্মাণ খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। অথচ উল্টোপথে হাঁটছে বাংলাদেশ। দেশের সকল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এখনো বিএনবিসি - ২০২০ সালের কোড ব্যবহার করছে। এমনকি কেউ কেউ বিএসবিসি - ২০০৬ সালের কোড অনুসরণ করছে, যা লেখা হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। পুরোনো এ কোডগুলো বর্তমান সময়ের নির্মাণসামগ্রী প্রযুক্তি এবং ডিজাইন দর্শন থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। পুরোনো বিল্ডিং কোড অনুসরণ করায় নতুন প্রকৌশলীদের মাঝে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ফলে কাঠামোর নকশাও ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে স্টিল-কংক্রীট কম্পোজিট কাঠামোর উন্নত মানের শক্তি, সাশ্রয়ী উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ কমে যাচ্ছে। নির্মাতারা বাধ্য হচ্ছেন সনাতনী ও ব্যয়বহুল নির্মাণ পদ্ধতির উপর নির্ভর করতে।
পুরোনো কোডে নির্মিত ভবনগুলোর বাসিন্দাদের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রণ ও আলোকায়নে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। এছাড়াও পুরোনো কোড স্থপতি ও প্রকৌশলীদের নকশার স্বাধীনতাকে সীমিত করে, পরোক্ষভাবে বাড়ে প্রকল্প ব্যয়। নির্মাণ শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এডমিনিষ্ট্রেশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট, জেনারেল বিল্ডিং রিকোয়ারম্যান্টস, কন্ট্রোল এন্ড বিকোয়াজ্যান্ট ও ফায়ার প্রটেকনের মত বিষয়ে আইন হওয়া উচিত, কিন্তু নকশা ও নির্মাণের বিষয়টি গবেষণাভিত্তিক, যা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়। এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করার মত বিষয় নয়। সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বিল্ডিং কোডের কতটুকু অংশ গেজেট হবে আর কতটুকু হবে না ।
পুরোনো কোড অনুসরণ করেই চলত দেশের নির্মাণ শিল্প। এতে নির্মিত ভবনগুলো শুধু নিরাপত্তাকেই ঝুঁকিতে ফেলছে না, নির্মাণ ব্যয়ও অনেকখানি বাড়িয়ে দিচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশগুলো নিয়মিত বিল্ডিং কোড সংশোধন করে আধুনিক, সাশ্রয়ী নির্মাণ প্রযুক্তি ও সামগ্রী ব্যবহার করছে। সেখানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) পরিবর্তনের দীর্ঘসূত্রিতা এ শিল্পকে পিছিয়ে রাখছে এবং খরচ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলছে। ফলে দেশে নির্মাণ ব্যয় বাড়ছে ৩০ শতাংশ বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। (সংগৃহিত)
অধ্যাপক ডা: মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ।