ভাস্কর মজুমদার
দেশের পরিস্থিতি এখন এমন এক ভয়াবহ মোড় নিয়েছে, যা কোনো সাধারণ মানুষের কল্পনার বাইরে। চারিদিকে অস্থিরতা, হিংসা আর নিরাপত্তাহীনতা যেন স্থায়ী হয়ে গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার রাজত্ব। ঘর থেকে বের হওয়া মানে যেন এক কঠিন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া—বাঁচবে কি মারা যাবে, কেউ নিশ্চিত করতে পারে না। ইট দিয়ে মাথা থেতলে মেরে ফেলা , চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলা, গুলি করে দেওয়া—সবই যেন স্বাভাবিক দিনের ঘটনা। মানুষের জীবন এখন কোনো খবরের শিরোনাম নয়, বরং অর্ধেক পেজের অপ্রয়োজনীয় তথ্য।
এর মাঝে গণগ্রেফতার, নিখোঁজ হওয়া আর গুজবের দাপটও বেড়েই চলেছে। রাজনীতির মাঠে চলছে ভোটের দৌরাত্ম্য আর সমাধানের কথা, কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই অন্যরকম। বড় বড় কথার মাঝে লুকানো আছে ভ্রান্ত পথ চলা আর দায়িত্বহীনতার ছাপ। রাস্তাঘাটে রক্ত ঝরলেও মঞ্চে চলছে নাটক, যেখানে সাধারণ মানুষের কেউ কেউ দর্শক, কেউ কেউ বঞ্চিত।
এমন পরিস্থিতির পেছনে এক সত্য লুকিয়ে আছে—একটা দেশের মানুষ যেভাবে থাকে, তারই প্রতিফলন তার নেতৃত্বের মধ্যে। যেখানে মানুষের চরিত্র দুর্বল, সেখানে সৎ ও সাহসী নেতৃত্বের জন্ম সম্ভব নয়। শিয়ালের রাজা কখনো বাঘ হয় না, যেমন কুকুরের রাজা সিংহ হতে পারে না। যারা ভয়, লোভ আর স্বার্থে মাথা নোয়ায়, তারা কখনোই বড় নেতৃত্বে উঠতে পারে না।
তবুও আমরা আশাবাদী হই, হয়তো এই অমানুষদেরও মানুষ বানানো সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা অন্য কথা বলে—নর্দমায় যতই পানি ঢালো, দুর্গন্ধ যায় না। নোংরা রাজনীতির ভিতর থেকে কখনো সৎ চরিত্র জন্মায় না, বরং আরও বেশি পচন দেখা দেয়।
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, আমরা পরিবর্তনের স্লোগান দিই, কিন্তু নিজেদের বদলাতে চাই না। আমরা নিজের ভেতরের কাপুরুষত্ব আর স্বার্থপরতা ফেলে দিতে পারি না, তবু সাহসী নেতা চাই। ভুলে যাই, নেতা আকাশ থেকে পড়ে না। সে আমাদের মধ্য থেকে উঠে আসে, আমাদের মনোভাব আর সংগ্রাম থেকে।
যতদিন আমরা নিজেকে বদলাবো না, ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশের স্বার্থকে রাখবো না, ততদিন এই দেশ বারবার একই সমস্যার মুখোমুখি হবে—ভাঙা সমাজ, ভাঙা নেতা, ভাঙা ভবিষ্যত।
এখন সময় এসেছে ভীতিকে জয় করার, স্বার্থের বেড়া ভাঙার, এবং সত্যিকার পরিবর্তনের পথে হাঁটার। নয়তো এই বেদনার গল্প বারবার চলতেই থাকবে।
ভাস্কর মজুমদার: মহা -ব্যাবস্থাপক, ব্র্যাক আড়ং ।
দেশের পরিস্থিতি এখন এমন এক ভয়াবহ মোড় নিয়েছে, যা কোনো সাধারণ মানুষের কল্পনার বাইরে। চারিদিকে অস্থিরতা, হিংসা আর নিরাপত্তাহীনতা যেন স্থায়ী হয়ে গেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার রাজত্ব। ঘর থেকে বের হওয়া মানে যেন এক কঠিন পরীক্ষায় অংশ নেওয়া—বাঁচবে কি মারা যাবে, কেউ নিশ্চিত করতে পারে না। ইট দিয়ে মাথা থেতলে মেরে ফেলা , চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলা, গুলি করে দেওয়া—সবই যেন স্বাভাবিক দিনের ঘটনা। মানুষের জীবন এখন কোনো খবরের শিরোনাম নয়, বরং অর্ধেক পেজের অপ্রয়োজনীয় তথ্য।
এর মাঝে গণগ্রেফতার, নিখোঁজ হওয়া আর গুজবের দাপটও বেড়েই চলেছে। রাজনীতির মাঠে চলছে ভোটের দৌরাত্ম্য আর সমাধানের কথা, কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই অন্যরকম। বড় বড় কথার মাঝে লুকানো আছে ভ্রান্ত পথ চলা আর দায়িত্বহীনতার ছাপ। রাস্তাঘাটে রক্ত ঝরলেও মঞ্চে চলছে নাটক, যেখানে সাধারণ মানুষের কেউ কেউ দর্শক, কেউ কেউ বঞ্চিত।
এমন পরিস্থিতির পেছনে এক সত্য লুকিয়ে আছে—একটা দেশের মানুষ যেভাবে থাকে, তারই প্রতিফলন তার নেতৃত্বের মধ্যে। যেখানে মানুষের চরিত্র দুর্বল, সেখানে সৎ ও সাহসী নেতৃত্বের জন্ম সম্ভব নয়। শিয়ালের রাজা কখনো বাঘ হয় না, যেমন কুকুরের রাজা সিংহ হতে পারে না। যারা ভয়, লোভ আর স্বার্থে মাথা নোয়ায়, তারা কখনোই বড় নেতৃত্বে উঠতে পারে না।
তবুও আমরা আশাবাদী হই, হয়তো এই অমানুষদেরও মানুষ বানানো সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা অন্য কথা বলে—নর্দমায় যতই পানি ঢালো, দুর্গন্ধ যায় না। নোংরা রাজনীতির ভিতর থেকে কখনো সৎ চরিত্র জন্মায় না, বরং আরও বেশি পচন দেখা দেয়।
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, আমরা পরিবর্তনের স্লোগান দিই, কিন্তু নিজেদের বদলাতে চাই না। আমরা নিজের ভেতরের কাপুরুষত্ব আর স্বার্থপরতা ফেলে দিতে পারি না, তবু সাহসী নেতা চাই। ভুলে যাই, নেতা আকাশ থেকে পড়ে না। সে আমাদের মধ্য থেকে উঠে আসে, আমাদের মনোভাব আর সংগ্রাম থেকে।
যতদিন আমরা নিজেকে বদলাবো না, ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে দেশের স্বার্থকে রাখবো না, ততদিন এই দেশ বারবার একই সমস্যার মুখোমুখি হবে—ভাঙা সমাজ, ভাঙা নেতা, ভাঙা ভবিষ্যত।
এখন সময় এসেছে ভীতিকে জয় করার, স্বার্থের বেড়া ভাঙার, এবং সত্যিকার পরিবর্তনের পথে হাঁটার। নয়তো এই বেদনার গল্প বারবার চলতেই থাকবে।
ভাস্কর মজুমদার: মহা -ব্যাবস্থাপক, ব্র্যাক আড়ং ।