অধ্যাপক ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ
চট্টগ্রামে গার্বেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্পের মাধ্যমে আবর্জনা থেকে জৈবসার ও কালো লাকড়ির উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। চালুর পর কিছুদিন মোটামোটি সচলও ছিল। কিন্তু অনেক দিন হল প্রকল্প দুটির মেশিনগুলো বন্ধ পড়ে আছে।
জানা যায়, প্রথম দিকে নগরের গৃহস্থালি বর্জ্য থেকে সার তৈরি করা হত। পরে ইপিজেডের ক্যান্টিন থেকে বের হওয়া সবজির বর্জ্যে সার তৈরি হত। এখন সেই বর্জ্য না পাওয়ায় সার তৈরি বন্ধ আছে, এক দফার বর্জ্য ৪৫ দিন পর্যন্ত প্রক্রিয়া করে দেড় টন সার উৎপাদন করা যেত। সার তৈরিতে ব্যবহার হত তিনটি কাটিং মেশিন, একটি নেটিং মেশিন, চারটি মিলিং মেশিন ও চারটি দানাদার মেশিন। কিন্তু এসব মেশিন এখন অলস পড়ে আছে, ধরছে জং। সাতজনের মত লোকবল কর্মরত সার বিপননে একজন ডিলার থাকলেও তিনি এখন আর ব্যবসা করেন না। সবুজ সবজির বর্জ্য দিয়ে তৈরিকরা প্রতি কেজি সার বিক্রি হত ১০ টাকা। অন্যদিকে উদ্বোধনের পর থেকেই বন্ধ বর্জ্য থেকে লাকড়ি উৎপাদন প্রকল্পটি। বর্তমানে সেখানে তিনটি মেশিন অলস পড়ে আছে। পৌর কর্পোরেশনের যান্ত্রিক প্রকৌশল সূত্রে জানা যায় বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রধান উপকরণগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।
আমাদের অবলোকনে পাওয়া যায়, প্রকল্পটি সুপারভিশনে কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবাধ স্বাধীনতায় সকল কর্মকান্ড স্তব্ধ। যে প্রয়োজনীয় জৈব সার উৎপাদন হতে পারে তা থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টার নজরে এনে চট্টগ্রামে পৌর কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রকে বিষয়টির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট উপদেশে আবার প্রকল্পটিকে দেশের কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রয়োজনে যেস্থান থেকে যন্ত্রপাতি আমদানী করা হয়েছে সেস্থান থেকে কারিগরি সহায়তা নিয়ে দেশে একটি ল্যাবরেটরী বা ওয়ার্কশপ তৈরি করে সকল পৌর কর্পোরেশনে প্রকল্পটি চালু করা হলে দেশ সার আমদানি থেকে রক্ষা পেত আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অন্ততঃ পরিবেশ মন্ত্রনালয় দায় মুক্তি পেত।
দেশের অনেক কারখানাই এখন বন্ধ। মালিকরা কেউ জেলে, কেউ পালিয়ে গেছেন বিদেশে, মাঝখান থেকে বেকার হয়েছেন কয়েকলাখ সরকারি ও সম্পর্কিত শ্রমজীবি মানুষ। লাভটা হল কার তা আমরা হিসাব করে দেখি না। একটি সরকারের পতন হলে তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তাইবলে প্রতিষ্ঠিত
শিল্প কারখানার তৈরি করা দ্রব্য সামগ্রী, যন্ত্রাংশ, এমনকি ছাউনির টিন খুলে নেয়া কি ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া বহু কঠিন। যে কারখানাগুলো এখন বন্ধ রয়েছে, সেগুলোর শ্রমিক কর্মচারীরা কে কি অবস্থায় আছে আমরা খবরও রাখিনা। পাশাপাশি ঐসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ঘাটতি বাজার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
দেশে এখন মূলতঃ জনগণের পক্ষে কথা বলার কোন দল বা সংস্থা নেই। আছে শুধু মব। প্রতিটি মব সন্ত্রাসে সরকার ‘আর বরদাশত করা হবে না' বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আর একটার পর একটা ঘটনা ঘটতেই থাকে। আক্ষরিক অর্থে যে বিরোধীদল আছে তারা সরকারবিরোধী দু'একটা কথা যে বলে না ু তা নয়। তবে তা শুধুই নির্বাচন অর্থাৎ ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম সিড়ি। আর জনগণও চিরকালই পাটার মরিচ, পাটাপুতার ঘষাঘষিতে যাদের জীবনের দফারফা হয়, আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এ উক্তিটির সত্যতা যাচাইয়ে যেতে হবে মাছের বাজারে, চাউলের আরতে, ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে, পুলিশের দরজায়, ফুটপাতে আর গ্রামগঞ্জের বাজারে। আর দেরি নয় এখনই ঠিক করতে হবে শ্রমবাজার, উৎপাদন, অর্থনীতি, সার্বজনীন শিক্ষা, আইন শৃঙ্খলা, পরিবেশ সুরক্ষা আর বাজার ব্যবস্থাপনা।
অধ্যাপক ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ।
চট্টগ্রামে গার্বেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্পের মাধ্যমে আবর্জনা থেকে জৈবসার ও কালো লাকড়ির উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। চালুর পর কিছুদিন মোটামোটি সচলও ছিল। কিন্তু অনেক দিন হল প্রকল্প দুটির মেশিনগুলো বন্ধ পড়ে আছে।
জানা যায়, প্রথম দিকে নগরের গৃহস্থালি বর্জ্য থেকে সার তৈরি করা হত। পরে ইপিজেডের ক্যান্টিন থেকে বের হওয়া সবজির বর্জ্যে সার তৈরি হত। এখন সেই বর্জ্য না পাওয়ায় সার তৈরি বন্ধ আছে, এক দফার বর্জ্য ৪৫ দিন পর্যন্ত প্রক্রিয়া করে দেড় টন সার উৎপাদন করা যেত। সার তৈরিতে ব্যবহার হত তিনটি কাটিং মেশিন, একটি নেটিং মেশিন, চারটি মিলিং মেশিন ও চারটি দানাদার মেশিন। কিন্তু এসব মেশিন এখন অলস পড়ে আছে, ধরছে জং। সাতজনের মত লোকবল কর্মরত সার বিপননে একজন ডিলার থাকলেও তিনি এখন আর ব্যবসা করেন না। সবুজ সবজির বর্জ্য দিয়ে তৈরিকরা প্রতি কেজি সার বিক্রি হত ১০ টাকা। অন্যদিকে উদ্বোধনের পর থেকেই বন্ধ বর্জ্য থেকে লাকড়ি উৎপাদন প্রকল্পটি। বর্তমানে সেখানে তিনটি মেশিন অলস পড়ে আছে। পৌর কর্পোরেশনের যান্ত্রিক প্রকৌশল সূত্রে জানা যায় বর্জ্য থেকে সার তৈরির প্রধান উপকরণগুলো পাওয়া যাচ্ছে না।
আমাদের অবলোকনে পাওয়া যায়, প্রকল্পটি সুপারভিশনে কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবাধ স্বাধীনতায় সকল কর্মকান্ড স্তব্ধ। যে প্রয়োজনীয় জৈব সার উৎপাদন হতে পারে তা থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে। পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টার নজরে এনে চট্টগ্রামে পৌর কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রকে বিষয়টির ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট উপদেশে আবার প্রকল্পটিকে দেশের কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রয়োজনে যেস্থান থেকে যন্ত্রপাতি আমদানী করা হয়েছে সেস্থান থেকে কারিগরি সহায়তা নিয়ে দেশে একটি ল্যাবরেটরী বা ওয়ার্কশপ তৈরি করে সকল পৌর কর্পোরেশনে প্রকল্পটি চালু করা হলে দেশ সার আমদানি থেকে রক্ষা পেত আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অন্ততঃ পরিবেশ মন্ত্রনালয় দায় মুক্তি পেত।
দেশের অনেক কারখানাই এখন বন্ধ। মালিকরা কেউ জেলে, কেউ পালিয়ে গেছেন বিদেশে, মাঝখান থেকে বেকার হয়েছেন কয়েকলাখ সরকারি ও সম্পর্কিত শ্রমজীবি মানুষ। লাভটা হল কার তা আমরা হিসাব করে দেখি না। একটি সরকারের পতন হলে তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তাইবলে প্রতিষ্ঠিত
শিল্প কারখানার তৈরি করা দ্রব্য সামগ্রী, যন্ত্রাংশ, এমনকি ছাউনির টিন খুলে নেয়া কি ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া বহু কঠিন। যে কারখানাগুলো এখন বন্ধ রয়েছে, সেগুলোর শ্রমিক কর্মচারীরা কে কি অবস্থায় আছে আমরা খবরও রাখিনা। পাশাপাশি ঐসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ঘাটতি বাজার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে ও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
দেশে এখন মূলতঃ জনগণের পক্ষে কথা বলার কোন দল বা সংস্থা নেই। আছে শুধু মব। প্রতিটি মব সন্ত্রাসে সরকার ‘আর বরদাশত করা হবে না' বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আর একটার পর একটা ঘটনা ঘটতেই থাকে। আক্ষরিক অর্থে যে বিরোধীদল আছে তারা সরকারবিরোধী দু'একটা কথা যে বলে না ু তা নয়। তবে তা শুধুই নির্বাচন অর্থাৎ ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম সিড়ি। আর জনগণও চিরকালই পাটার মরিচ, পাটাপুতার ঘষাঘষিতে যাদের জীবনের দফারফা হয়, আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এ উক্তিটির সত্যতা যাচাইয়ে যেতে হবে মাছের বাজারে, চাউলের আরতে, ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে, পুলিশের দরজায়, ফুটপাতে আর গ্রামগঞ্জের বাজারে। আর দেরি নয় এখনই ঠিক করতে হবে শ্রমবাজার, উৎপাদন, অর্থনীতি, সার্বজনীন শিক্ষা, আইন শৃঙ্খলা, পরিবেশ সুরক্ষা আর বাজার ব্যবস্থাপনা।
অধ্যাপক ডাঃ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ: সাবেক অধ্যক্ষ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ।