স্মরণ
রাজিয়া সুলতানা সুমি
একটা বয়সের পর কারো চলে যাওয়াটা স্বাভাবিক বলেই ধরে নেয়া হয় কিন্তু আব্বু যদি আরো কয়েক বছর ও বেঁচে থাকতেন তবুও মনে হত আরো কিছুদিন কেন রইলেন না!১০ ই আগষ্ট ২০২৩,অন্য সবদিনের মতই আমার সকালটা শুরু হয়েছিল, ৬:৩০ টার পরআম্মু র ফোন আব্বু মাঝরাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ওঈট তে ধফসরঃঃবফ. আমি ওনাকে বললাম চিন্তা করার কারন নেই, আব্বু বেশ ক'বার ই ওঈট থেকে দিব্যি হেঁটে বাসায় ফিরেছেন।এরপর ছোট বোন উ'মিকে ফোন করলাম, ওর গলা একটু কেমন যেন শোনাল,বলল আব্বু এখন ষরভব ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ এ আছে,ছোট ভাইটা ঢাকা থেকে রওনা করেছে,অঁংঃৎধষরধ য় মিসুকে ফোন দিলাম, সে জানাল বসবৎমবহপু ঃরপশবঃ করে ও সপরিবারে এর পরদিনই দেশে ফিরছে।আমি আশ্বস্ত হয়ে বললাম "আব্বু আমাদের চারজনকে একসাথে দেখলেই সুস্থ হয়ে যাবেন,এমনটা আগে হয়েছে ও" আমি তখনো ঘূনাক্ষরেও বুঝতে পারি নি আমার আব্বু সেই সময়টায় এই পৃথিবীতে আর নেই। কুমিল্লা আসার পুরোটা রাস্তা জুড়েই ছিল আমার ব্যাকুলতা, কখন পৌঁছাব,আব্বু বলে ডাকব।কুমিল্লা পৌঁছালাম ১২ টার দিকে, হাসপাতালে এত মানুষ! দরজা খুলে দেখলাম আমার আব্বু শেষবারের মত চুপচাপ শুয়ে ওনার বড় মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন।আমি শুধু বলেছিলাম আব্বু কে আমি শেষ বারের মত স্পর্শ করতে চাই। এরপর সময় কিভাবে কাটল জানি না,ঘোরের মাঝে সময় কাটছিল।আব্বু কে নিয়ে রাউজান চলে গেলাম সবাই, ভাইয়ের জন্য আরেকটা দিন অপেক্ষা, সবশেষে রাউজানে দাদা দাদুর পাশে আব্বু কে রেখে আসলাম। আমার আব্বু "অধ্যাপক লোকমান হাকিম " কুমিল্লা এবং রাউজান দুই এলাকায় সমান জনপ্রিয় একজন মানুষ, উনি আমাদের চেয়ে ও বেশি ওনার গড়ে তোলা ঘএঙ, দেশ,সমাজের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের বাসায় ছোটবেলা থেকে প্রচুর মানুষের আনাগোনা ছিল, যেহেতু ঘএঙ এর পাশাপাশি উনি একসময় রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান ও ছিলেন।যেকোনো বিষয়ে আব্বু জানা ছিল অনেক বেশি, অনেক দেশ বিদেশে ভ্রমণ করেছেন,অসংখ্য মানুষের সাথে ওনার পরিচয় ছিল,কিন্তু অবাক করার মত বিষয় ছিল কোনকিছুকেই উনি হবমধঃরাবষু দেখতেন না।জীবনের শেষের দিকে আম্মু কে ছাড়া থাকতে চাইতেন না একদম,আমাদের ও খুব খুঁজতেন যেন আমরা ওনার কাছাকাছি থাকি।অবসর সময়ে আব্বু লেখালেখি করতেন,ছোটবেলা থেকেই দেখেছি উনি দৈনিক পত্রিকাগুলোতে কলাম লিখতেন,ওনার দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে, একটা ওনার জীবদ্দশায়, আরেকটা মৃত্যুর পর।আব্বু খুব গোছানো মানুষ ছিলেন না কিন্তু আমাদের কোথাও কোন বৈষয়িক অপূর্ণতা রেখে যান নি।এখনো যখন কখনো অবসাদাচ্ছন্ন হই ওনার বলা শব্দগুলোই যেন আলো হয়ে দেখা দেয়।সবাই একদিন চলে যাবে,আমি ও যাব তবে কেউ কেউ চলে যাওয়ার পর ও তার ছায়া রেখে যায় সবখানে। যারা বেঁচে থাকে তার শব্দে কিংবা নি:শব্দে তাদের স্মরণ করে,তাদের শূন্যতা অপূরনীয়, আমার আব্বু তেমনি একজন মানুষ। দুই বছর কেটে যাওয়ার পর ও এখনো যখন হাসিমাখা ছবিগুলো দেখি,মনে হয় "এইত আছেন"। আব্বু কে সবাই দোয়া করবেন,আমরা সবাই যেন জীবনের শেষ দিন প'যন্ত ওনাকে এভাবেই স্মরণে রাখতে পারি।
রাজিয়া সুলতানা সুমি: লোকমান হাকিমের বড় মেয়ে।
একটা বয়সের পর কারো চলে যাওয়াটা স্বাভাবিক বলেই ধরে নেয়া হয় কিন্তু আব্বু যদি আরো কয়েক বছর ও বেঁচে থাকতেন তবুও মনে হত আরো কিছুদিন কেন রইলেন না!১০ ই আগষ্ট ২০২৩,অন্য সবদিনের মতই আমার সকালটা শুরু হয়েছিল, ৬:৩০ টার পরআম্মু র ফোন আব্বু মাঝরাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ওঈট তে ধফসরঃঃবফ. আমি ওনাকে বললাম চিন্তা করার কারন নেই, আব্বু বেশ ক'বার ই ওঈট থেকে দিব্যি হেঁটে বাসায় ফিরেছেন।এরপর ছোট বোন উ'মিকে ফোন করলাম, ওর গলা একটু কেমন যেন শোনাল,বলল আব্বু এখন ষরভব ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ এ আছে,ছোট ভাইটা ঢাকা থেকে রওনা করেছে,অঁংঃৎধষরধ য় মিসুকে ফোন দিলাম, সে জানাল বসবৎমবহপু ঃরপশবঃ করে ও সপরিবারে এর পরদিনই দেশে ফিরছে।আমি আশ্বস্ত হয়ে বললাম "আব্বু আমাদের চারজনকে একসাথে দেখলেই সুস্থ হয়ে যাবেন,এমনটা আগে হয়েছে ও" আমি তখনো ঘূনাক্ষরেও বুঝতে পারি নি আমার আব্বু সেই সময়টায় এই পৃথিবীতে আর নেই। কুমিল্লা আসার পুরোটা রাস্তা জুড়েই ছিল আমার ব্যাকুলতা, কখন পৌঁছাব,আব্বু বলে ডাকব।কুমিল্লা পৌঁছালাম ১২ টার দিকে, হাসপাতালে এত মানুষ! দরজা খুলে দেখলাম আমার আব্বু শেষবারের মত চুপচাপ শুয়ে ওনার বড় মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন।আমি শুধু বলেছিলাম আব্বু কে আমি শেষ বারের মত স্পর্শ করতে চাই। এরপর সময় কিভাবে কাটল জানি না,ঘোরের মাঝে সময় কাটছিল।আব্বু কে নিয়ে রাউজান চলে গেলাম সবাই, ভাইয়ের জন্য আরেকটা দিন অপেক্ষা, সবশেষে রাউজানে দাদা দাদুর পাশে আব্বু কে রেখে আসলাম। আমার আব্বু "অধ্যাপক লোকমান হাকিম " কুমিল্লা এবং রাউজান দুই এলাকায় সমান জনপ্রিয় একজন মানুষ, উনি আমাদের চেয়ে ও বেশি ওনার গড়ে তোলা ঘএঙ, দেশ,সমাজের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের বাসায় ছোটবেলা থেকে প্রচুর মানুষের আনাগোনা ছিল, যেহেতু ঘএঙ এর পাশাপাশি উনি একসময় রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান ও ছিলেন।যেকোনো বিষয়ে আব্বু জানা ছিল অনেক বেশি, অনেক দেশ বিদেশে ভ্রমণ করেছেন,অসংখ্য মানুষের সাথে ওনার পরিচয় ছিল,কিন্তু অবাক করার মত বিষয় ছিল কোনকিছুকেই উনি হবমধঃরাবষু দেখতেন না।জীবনের শেষের দিকে আম্মু কে ছাড়া থাকতে চাইতেন না একদম,আমাদের ও খুব খুঁজতেন যেন আমরা ওনার কাছাকাছি থাকি।অবসর সময়ে আব্বু লেখালেখি করতেন,ছোটবেলা থেকেই দেখেছি উনি দৈনিক পত্রিকাগুলোতে কলাম লিখতেন,ওনার দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে, একটা ওনার জীবদ্দশায়, আরেকটা মৃত্যুর পর।আব্বু খুব গোছানো মানুষ ছিলেন না কিন্তু আমাদের কোথাও কোন বৈষয়িক অপূর্ণতা রেখে যান নি।এখনো যখন কখনো অবসাদাচ্ছন্ন হই ওনার বলা শব্দগুলোই যেন আলো হয়ে দেখা দেয়।সবাই একদিন চলে যাবে,আমি ও যাব তবে কেউ কেউ চলে যাওয়ার পর ও তার ছায়া রেখে যায় সবখানে। যারা বেঁচে থাকে তার শব্দে কিংবা নি:শব্দে তাদের স্মরণ করে,তাদের শূন্যতা অপূরনীয়, আমার আব্বু তেমনি একজন মানুষ। দুই বছর কেটে যাওয়ার পর ও এখনো যখন হাসিমাখা ছবিগুলো দেখি,মনে হয় "এইত আছেন"। আব্বু কে সবাই দোয়া করবেন,আমরা সবাই যেন জীবনের শেষ দিন প'যন্ত ওনাকে এভাবেই স্মরণে রাখতে পারি।
রাজিয়া সুলতানা সুমি: লোকমান হাকিমের বড় মেয়ে।