রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া সমাধান অসম্ভব
সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত শুধু রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস নয়, এটি দেশের কর্মসংস্থানেরও মূল ভিত্তি। জাতীয় রপ্তানির ৮৫ শতাংশের বেশি আসে এ খাত থেকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটি মারাত্মক চাপে পড়েছে। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনারে খাতসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে যে সংকটচিত্র উঠে এসেছে, তা শুধু উদ্বেগজনক নয়, জাতীয় অর্থনীতির জন্য সতর্কবার্তাও বটে। বক্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও লাগাতার অবরোধে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান সময়মতো অর্ডার শেষ করতে পারছে না, বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বিমানপথে পণ্য পাঠাচ্ছে। এতে রপ্তানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে। ইতিমধ্যে নতুন অনেক কার্যাদেশ প্রতিবেশী দেশ-বিশেষত ভারত ও ভিয়েতনামে চলে যাচ্ছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে এবং কর্মসংস্থানের ওপর সরাসরি আঘাত আসবে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি যথার্থই বলেছেন-সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে শিল্পখাতের নিয়মিত সংলাপ না থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বাড়ে। বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিজিএমইএর প্রতিনিধিরা গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা, শ্রমনীতি বাস্তবায়নে ভারসাম্য এবং প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া বেসরকারি খাতনির্ভর প্রবৃদ্ধি টেকসই হতে পারে না। পোশাক খাত এখন সেই বাস্তবতার মুখোমুখি। বিনিয়োগ, রপ্তানি ও ক্রেতা আস্থার সম্পর্ক পরস্পরনির্ভরশীল; একটির বিঘ্ন অন্য দুটির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো রাজনৈতিক শান্তি ও নীতিগত পূর্বাভাস নিশ্চিত করা। সরকার ও প্রশাসনের উচিত হবে জ্বালানি সরবরাহ স্থিতিশীল করা, অবকাঠামো উন্নয়নে স্পষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করা এবং শিল্পপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ স্থাপন করা। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কাগজে নয়-বাস্তবে অর্জন করতে হলে এ সংকট মোকাবিলা করতে হবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে। বাংলাদেশের পোশাক খাত আজ যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটি কেবল ব্যবসায়িক নয়-অর্থনৈতিক নিরাপত্তারও প্রশ্ন। রাজনৈতিক সমঝোতা ও জ্বালানি স্থিতিশীলতা ছাড়া এ খাতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়বে। এখনই সময়-বাকবিতণ্ডা নয়, বাস্তব সমাধানের পথে এগোনোর।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত শুধু রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস নয়, এটি দেশের কর্মসংস্থানেরও মূল ভিত্তি। জাতীয় রপ্তানির ৮৫ শতাংশের বেশি আসে এ খাত থেকে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটি মারাত্মক চাপে পড়েছে। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সেমিনারে খাতসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে যে সংকটচিত্র উঠে এসেছে, তা শুধু উদ্বেগজনক নয়, জাতীয় অর্থনীতির জন্য সতর্কবার্তাও বটে। বক্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও লাগাতার অবরোধে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান সময়মতো অর্ডার শেষ করতে পারছে না, বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বিমানপথে পণ্য পাঠাচ্ছে। এতে রপ্তানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে। ইতিমধ্যে নতুন অনেক কার্যাদেশ প্রতিবেশী দেশ-বিশেষত ভারত ও ভিয়েতনামে চলে যাচ্ছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে এবং কর্মসংস্থানের ওপর সরাসরি আঘাত আসবে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি যথার্থই বলেছেন-সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে শিল্পখাতের নিয়মিত সংলাপ না থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বাড়ে। বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিজিএমইএর প্রতিনিধিরা গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা, শ্রমনীতি বাস্তবায়নে ভারসাম্য এবং প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া বেসরকারি খাতনির্ভর প্রবৃদ্ধি টেকসই হতে পারে না। পোশাক খাত এখন সেই বাস্তবতার মুখোমুখি। বিনিয়োগ, রপ্তানি ও ক্রেতা আস্থার সম্পর্ক পরস্পরনির্ভরশীল; একটির বিঘ্ন অন্য দুটির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো রাজনৈতিক শান্তি ও নীতিগত পূর্বাভাস নিশ্চিত করা। সরকার ও প্রশাসনের উচিত হবে জ্বালানি সরবরাহ স্থিতিশীল করা, অবকাঠামো উন্নয়নে স্পষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করা এবং শিল্পপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ স্থাপন করা। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কাগজে নয়-বাস্তবে অর্জন করতে হলে এ সংকট মোকাবিলা করতে হবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে। বাংলাদেশের পোশাক খাত আজ যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটি কেবল ব্যবসায়িক নয়-অর্থনৈতিক নিরাপত্তারও প্রশ্ন। রাজনৈতিক সমঝোতা ও জ্বালানি স্থিতিশীলতা ছাড়া এ খাতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়বে। এখনই সময়-বাকবিতণ্ডা নয়, বাস্তব সমাধানের পথে এগোনোর।