নানা সমস্যায় নাকাল দেবীদ্বার পৌরসভা

আবদুল আলীম, দেবীদ্বার
Thumbnail image

খানাখন্দে নাকাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, অপকিল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বিল্ডিং কোড না মেনে যত্র তত্র অপরিকল্পিতভাবে আবাসন নির্মাণসহ নানা সমস্যায় চরম দুর্ভোগে আছে দেবীদ্বার পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং খাল ভারাটের কারণে বর্ষায় স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে সামান্য বৃষ্টিতে পুরো পৌরশহর পানিতে তলিয়ে যায়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলেই ঘর থেকে বের হতে পারেন না পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের দেবীদ্বার গ্রাম, ৮ নং ওয়ার্ডের ছোট আলমপুর গ্রাম এবং ৭নং ওয়ার্ডের সাইলচর গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা ক্ষোভের সাথে জানান, বছরের বেশির ভাগ সময়ই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় দেবীদ্বার পৌরবাসীকে। সামান্য বৃষ্টিতেই অধিকাংশ এলাকায় তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে স্কুল ও কলেজগামী শিশু-কিশোর-তরুণ, বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষ, অসুস্থ রোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। এমনকি প্রয়োজনীয় রাস্তার জায়গা না রেখে অপরিকল্পিতভাবে বাসাবাড়ি নির্মাণের ফলে খাটিয়ায় করে লাশ আনা নেয়ায় যেমন দুর্ভোগে পড়তে হয়, তেমনি অগ্নিকাণ্ডের দুর্যোগ উপশমে ফায়ার সার্ভিসকে সঠিক দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত হতে হয়।

বর্ষায় অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত উঁচু আবাসনের পাশের পুরনো নিচু এলাকার ঘরবাড়িতে উঠে যায় ময়লা পানি। পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দিনের পর দিন দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা ও ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানির মধ্যে বসবাস করতে হয় তাদের। ফলে পানিবাহিত রোগ ও মশার উপদ্রবে চলাফেরায় চরম বিপাকে পড়েন পৌরবাসী।

সরেজমিনে ৫ নং ওয়ার্ড়ের পৌর সদর এলাকার শান্তি রোড, দেবীদ্বার আরপি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, দেবীদ্বার ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা রোড ও পাঠান বাড়ির সামনের সড়কের আশপাশের বাড়িঘর, মার্কেট, কিন্ডারগার্টেন স্কুল হাটু পানির নিচে তলিয়ে আছে। ৭নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা মো. সোহেল, মো. আউয়াল, মো. সানাউল্লাহ, জুয়েল, ইসমাইলসহ স্থানীয় বেশ কজন ব্যক্তি জানান, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২২ বছরেও তাদের এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ও কাঁচা রাস্তার কারণে বর্ষাকালে চলাচল করা যায় না। পার্শ্ববর্তী বড়আলমপুর গ্রামের কৃষি জমিসহ ওই এলাকার পুরো পানি সাইলচরের উপর দিয়ে যায়। এতে করে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা। খুব দ্রুত যদি সাইলচর পূর্বপাড়া অহিদ মিয়ার বাড়ি থেকে মোশকত আলীর বাড়ির পর্যন্ত ৫০০ মিটার ড্রেনসহ পাকা না করা হয়, এ এলাকার মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে। সাইলচর এলাকার ৭০ শতাংশ রাস্তা এখনো কাঁচা।

৯ নং ওয়ার্ডের বারেরা গ্রামের রাসেল সরকার জানান, বারেরা সরকার বাড়ি থেকে ভঙ্গার বাড়ি সড়ক সংস্কার না করায় হাটু পানির নিচে তলিয়ে আছে। ওই এলাকাগুলোতে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই।

এ সমস্ত এলাকার স্কুলগামী শিশু কিশোরদের পানি ভেঙে সড়কে এসে জুতা পায়ে দেওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়ে। এসব এলাকায় অনেকে ঘরের মেঝেতে বা বারান্দায় অস্থায়ী চুলায় রান্নার কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

দেবীদ্বার পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল ইসলাম বলেন, এখন যেহেতু নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নেই, সে কারণে অনেক এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। যেহেতু পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডে কোনো উন্নয়ন হয়নি, স্থানীয়রা কেউ যদি সমস্যাগুলো নিয়ে আবেদন করে আমরা যথাযথ চেষ্টা করব কাজ করার জন্য। বরাদ্দ আসলে জরুরি কাজগুলো দ্রুত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখব।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সম্পর্কিত